কুবির প্রত্নতত্ত্ব বিভাগে হারিয়ে গেছে ফলাফল, আবার হবে পরীক্ষা
Published: 23rd, October 2025 GMT
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল হারিয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে পরীক্ষা কমিটির বিরুদ্ধে।
ফলাফল প্রকাশিত না হওয়ায় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা পঞ্চম সেমিস্টারের পরীক্ষা সময়মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে না বলে জানা গেছে।
আরো পড়ুন:
জবি শিক্ষার্থী হত্যার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
কুবিতে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহারের অভিযোগে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিলেন ছাত্রদল নেতা
অভিযুক্ত পরীক্ষা কমিটির প্রধান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড.
বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের চতুর্থ সেমিস্টার মৌখিক পরীক্ষা গত ২১ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মৌখিক পরীক্ষার ফলাফলের তালিকাটি হারিয়ে যাওয়ায়, এখনো ফলাফল প্রকাশিত হয়নি। এতে শিক্ষার্থীদের পঞ্চম সেমিস্টারের পরীক্ষা ২৬ অক্টোবর হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে ২৯ অক্টোবর নেওয়া হবে বলে বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগী ব্যাচের এক শিক্ষার্থী বলেন, “এই বিষয়গুলো আমাদের জন্য খুবই বিব্রতকর। এখন আমরা কিছু বলতেও পারি না। কারণ এখন যিনি দায়িত্বে আছেন, তিনি হয়ত সামনেও আমাদের পরীক্ষা কমিটিতে থাকবেন। এটা নিয়ে কিছু বললে পরবর্তী পরীক্ষার ফলাফলে যদি কোন প্রভাব পড়ে, এজন্য কেউ কিছু বলে না।”
পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ড. মাহমুদুল হাসান খান বলেন, “মৌখিক পরীক্ষার নিয়ম অনুযায়ী চারজন শিক্ষক আলাদা আলাদা শিটে নম্বর প্রদান করেন। এরপর গড় নম্বর নির্ধারণ করে একটি কপি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে পাঠানোরও নিয়ম রয়েছে। তবে আমাদের বিভাগে এ নিয়মটি তেমনভাবে অনুসরণ করা হয় না এবং এ বিষয়ে আমারও জানা ছিল না।”
তিনি বলেন, “আমি নম্বর শিটগুলো নিজের কাছে একটি ফাইলে সংরক্ষণ করেছিলাম। কিন্তু বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে— বিশেষ করে হল সংক্রান্ত কাজের জন্য ফলাফলের কাজ করা হয়নি। পরীক্ষার প্রায় ২ মাস পর যখন ফলাফল প্রস্তুত করতে যাই, তখন দেখি ফাইলটি খুঁজে পাচ্ছি না। পরে শিক্ষার্থীদের লিখিত অঙ্গীকারনামা নেওয়ার পর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সম্মতিতে দ্বিতীয়বার মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
পরীক্ষা কমিটির অন্য দুই সদস্য মো. মোরশেদ রায়হান ও মোহাম্মদ মশিউর রহমানের মোবাইলে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তারা রিসিভ করেননি। এছাড়া ওই বিভাগের অফিস কক্ষে গিয়েও তাদের দেখা পাওয়া যায়নি।
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক মো. সাদেকুজ্জামান বলেন, “পরীক্ষার ফলাফল তৈরি তো আমার কাজ না, এগুলোর জন্য পরীক্ষা কমিটি আছে। পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। আমি তাকে ভালোভাবে খোঁজার জন্য বলেছি। তিনি পুনরায় আমাকে জানান রেজাল্ট শিটটি খুঁজে পাননি।”
তিনি বলেন, “এরপর আমি পরীক্ষা কমিটিকে আলোচনার জন্য বলেছি। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক থেকে টেলিফোনের মাধ্যমে আমাকে জানানো হয়েছে ২৩ অক্টোবর পুনরায় ভাইভা হবে। অফিশিয়াল কপিটি আমাকে পাঠানোর কথা রয়েছে।”
মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল জমা দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী মৌখিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরেই মূল নম্বর পত্রটি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর জমা দেওয়া হয় এবং মূল কপির একটি কপি পরীক্ষা কমিটির সভাপতির কাছে থাকে। আমাদের বিভাগ এ ধরনের প্রাক্টিস করে আসছে।”
পুনরায় মৌখিক পরীক্ষা হলে শিক্ষার্থীরা মানসিক চাপ মনে করবে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীরা যদি মৌখিক পরীক্ষা দিতে রাজি থাকেন, তাহলে এটা নিয়ে তেমন সমস্যা হওয়ার কথা না।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৮ সপ্তাহের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করতে হবে। কোনো সেমিস্টারে মৌখিক পরীক্ষার, ফিল্ডওয়ার্ক, মনোগ্রাফ কিংবা প্রজেক্ট থাকলে শেষ পরীক্ষার তারিখ থেকে সর্বোচ্চ ১০ সপ্তাহের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নুরুল করিম চৌধুরী বলেন, “উপাচার্য স্যারের নির্দেশনায় আমি গতকাল সন্ধ্যায় নতুন করে মৌখিক পরীক্ষা নেয়ার জন্য ওই কমিটিকে একটি চিঠি পাঠিয়েছি। আমরা নির্দেশনা অনুযায়ি শুধু স্বাক্ষর করি, আমাদের কাজ এটাই।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো হায়দার আলী বলেন, “ফলাফলের তালিকা হারিয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা পুনরায় মৌখিক পরীক্ষা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি এড়াতেই আমি নির্বাহী আদেশে পুনরায় মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। নিয়ম মেনে এগোতে গেলে এতে বেশ সময় লাগত।”
কমিটির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না- জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, “কমিটির সদস্যদের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় নেওয়া হবে। সেখানে আলোচনা করেই তাদের ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করা হবে।”
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম খ ক পর ক ষ র পর ক ষ র ফ র পর ক ষ কম ট র ন ত রক র জন য বর ষ র আম দ র হওয় র
এছাড়াও পড়ুন:
ভোট দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রবল, এটা সত্য
আমাদের এই অঞ্চলের জরিপ নিয়ে কিছুটা নেতিবাচক মনোভাব আছে আমার। জরিপের প্রক্রিয়াগত কোনো সমস্যা নেই। তারপরও কেন যেন মনে হয়, এই অঞ্চলের মানুষ জরিপে সত্য কথা বলে না। এমনকি নাম প্রকাশ না করার শর্তেও অনেক সময় সঠিক তথ্য দিতে চান না। এরপরও প্রথম আলোর জরিপে যে ফলাফল এসেছে, তা আমার ধারণার সঙ্গে অনেকটাই মেলে। আমার কাছে মনে হয়েছে যে এই জরিপে সঠিক তথ্যই উঠে এসেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে অনেকগুলো জরিপের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এগুলোর ফলাফল দেখে আমি ২০২৪ সালে ভারতের জাতীয় নির্বাচনের আগে করা জরিপগুলো বিশ্লেষণ করেছি। সব কটি জরিপেই কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন জোট যত আসন পাবে বলে বলা হয়েছিল, তার চেয়ে অনেক বেশি আসন তারা পেয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে হওয়া জরিপের ফলাফলে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর পার্থক্য খুব কম এসেছে। এটি কতটা বিশ্বাসযোগ্য, সেই প্রশ্ন রয়ে গেছে। প্রথম আলোর জরিপটি এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম মনে হয়েছে।
আরও পড়ুনভোট নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হবে, আশাবাদী ৫০%২ ঘণ্টা আগেজরিপের তথ্যমতে, ৪৭ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ মনে করেন বাংলাদেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের। সে তুলনায় অনেক কম ২৫ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষের ধারণা, পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা জামায়াতের আমির শফিকুর রহমানের।
আবার যখন প্রশ্ন করা হলো যে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হলে দেশের জন্য ভালো হবে, সে ক্ষেত্রে শফিকুর রহমানের পক্ষে জনমত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৭ শতাংশ। এই বিষয়ে তারেক রহমানের পক্ষে জনমত ৩৬ দশমিক ৯ শতাংশ। অতীতে বিএনপির শাসনামলে তারেক রহমানের ভূমিকা নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে। তিনি এর অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছেন। এরপরও ভালো প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নে তাঁর কিছুটা কম সমর্থনের পেছনে অতীতের সমালোচনা ভূমিকা রেখেছে।
প্রথম আলো গ্রাফিকস