বসতবাড়ির পাশে সবজিখেতের জালের বেড়ায় আটকে পড়ে একটি অজগরের বাচ্চা। পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় প্রথমে সাপটিকে দেখে ভয় পেয়ে চিৎকার দেন গ্রামের কয়েকজন নারী। চিৎকার শুনে ছুটে আসেন বাড়ির মালিক নিবারণ কুমার, তাঁর পিছু পিছু আসেন আশপাশের লোকজনও। মুহূর্তেই পুরো গ্রামে অজগর ধরা পড়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে।

শনিবার দুপুরে খুলনার কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের দিঘিরপাড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাপটি উদ্ধার করে ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম (ভিটিআরটি) ও বন বিভাগের সদস্যরা।

উদ্ধারকাজে নেতৃত্ব দেওয়া বন বিভাগের শাকবাড়িয়া টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান বলেন, অজগরটি প্রায় পাঁচ ফুট লম্বা। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেটিকে উদ্ধার করেন। পরে সুন্দরবনে সাপটিকে অবমুক্ত করা হয়।

বাড়ির মালিক নিবারণ কুমার বলেন, ‘আমার সবজিখেতে বেড়া হিসেবে সুতার জাল টানানো আছে। সেই জালের ফাঁকে আটকে পড়ে অজগরের মাথার অংশ। বাড়ির নারীরা প্রথমে দেখে ভয় পেয়ে চিৎকার করতে থাকেন। আমিও দৌড়ে গিয়ে দেখি, সত্যিই একটা অজগর জালে আটকে আছে। আগে শুনেছি পাশের গ্রামে অজগর আসে; কিন্তু আমাদের এখানে কখনো আসেনি। এবার হঠাৎই এল।’

অজগর উদ্ধারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই আশপাশের গ্রাম থেকে কৌতূহলী মানুষ ভিড় করেন নিবারণ কুমারের বাড়িতে। কেউ মুঠোফোনে ভিডিও করেন, কেউ ছবি তোলেন।

বন কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান বলেন, অজগরটি সুস্থ অবস্থায় ছিল। সাধারণত খাবারের সন্ধানে বা উপযুক্ত জায়গা খুঁজতে তারা লোকালয়ে চলে আসে। সুন্দরবনে খাদ্যের অভাব নেই, তবে অজগরের দৃষ্টিশক্তি দুর্বল। তাই মাঝেমধ্যে বিভ্রান্ত হয়ে গ্রামে ঢুকে পড়ে। তিনি আরও জানান, এর আগে গত ১৭ জুন কয়রার সুন্দরবন-সংলগ্ন ৬ নম্বর কয়রা গ্রাম থেকেও ১০ ফুট লম্বা একটি অজগর উদ্ধার করা হয়েছিল। এখন মানুষ অনেক সচেতন হয়েছে। আগে সাপ দেখলেই পেটানো হতো, এখন সবাই বন বিভাগে খবর দেয়। আজকের অজগরটিও সেই সচেতনতার কারণেই বেঁচে গেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অজগর র উদ ধ র

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবন থেকে ৭ জেলেকে অপহরণ, মুক্তিপণ দাবি

সুন্দরবন থেকে সাত জেলেকে অপহরণ করেছে জলদস্যুরা। রবিবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ মালঞ্চ নদীর হাঁসখালী খাল থেকে ডন বাহিনী পরিচয়ে তাদের অপহরণ করা হয়। এই জেলেদের মুক্তিপণ হিসেবে মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা করে দাবি করা হয়েছে বলে জানান অন্য জেলেরা। 

অপহৃত জেলেরা হলেন- সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার দক্ষিণ কদমতলা গ্রামের আব্দুল আজিজ (৫০), ইব্রাহিম হোসেন (৪৫), আনারুল ইসলাম (২২), নাজমুল হক (৩৪), শামিম হোসেন (৩৬), আনোয়ার হোসেন (৩২) ও হরিনগর জেলেপাড়ার মুজিবুল হোসেন (৩৫)।

আরো পড়ুন:

সুন্দরবনে ট্রলারডুবি: নিখোঁজ নারী পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার

সুন্দরবনে রাসপূজায় যেতে বন বিভাগের ৫ রুট, মানতে হবে যেসব নির্দেশনা

সুন্দরবন থেকে ফেরত আসা জেলে ফজর আলী ও সবুজ মিয়া জানান, সাতক্ষীরা রেঞ্জের কদমতলা স্টেশন থেকে তিনদিন আগে অনুমতি (পাস) নিয়ে কাঁকড়া ধরার জন্য সুন্দরবনে যান জেলেরা। কাঁকড়া শিকারের জন্য তারা মালঞ্চ নদীর বিভিন্ন খালে অবস্থান করছিলেন।

গতকাল রবিবার সকাল ৮টার দিকে তিনটি নৌকায় ১০জন বন্দুকধারী জেলেদের ঘিরে ধরে। প্রতি নৌকা থেকে একজন করে উঠিয়ে নেয় তারা। চলে যাওয়ার সময় একটি নম্বর দিয়ে সেখানে মুক্তিপণের টাকা পাঠানোর নির্দেশ দেয়। তিন দিনের মধ্যে মুক্তিপণ না দিলে অপহৃত জেলেদের হাত-পা ভেঙে হত্যার পর নদীতে ফেলে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে জলদস্যুরা।

পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. ফজলুল হক বলেন, ‍“বনবিভাগের স্মার্ট পেট্রাল টিমের সদস্যরা সুন্দরবনের ভেতরে রয়েছে। সবকিছু নিশ্চিত হয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশের জেল থেকে মুক্তি পেয়ে ভারতে ফিরেছেন ৪৭ মৎস্যজীবী
  • বিস্তৃত প্রশ্ন, উত্তরও বড় হবে
  • পরিবার থেকে শিশুর মনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগাতে কী করবেন
  • সুন্দরবন থেকে ৭ জেলেকে অপহরণ, মুক্তিপণ দাবি