সবজিখেতের জালের বেড়ায় আটকে পড়ল অজগরের বাচ্চা
Published: 25th, October 2025 GMT
বসতবাড়ির পাশে সবজিখেতের জালের বেড়ায় আটকে পড়ে একটি অজগরের বাচ্চা। পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় প্রথমে সাপটিকে দেখে ভয় পেয়ে চিৎকার দেন গ্রামের কয়েকজন নারী। চিৎকার শুনে ছুটে আসেন বাড়ির মালিক নিবারণ কুমার, তাঁর পিছু পিছু আসেন আশপাশের লোকজনও। মুহূর্তেই পুরো গ্রামে অজগর ধরা পড়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে।
শনিবার দুপুরে খুলনার কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের দিঘিরপাড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাপটি উদ্ধার করে ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম (ভিটিআরটি) ও বন বিভাগের সদস্যরা।
উদ্ধারকাজে নেতৃত্ব দেওয়া বন বিভাগের শাকবাড়িয়া টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান বলেন, অজগরটি প্রায় পাঁচ ফুট লম্বা। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেটিকে উদ্ধার করেন। পরে সুন্দরবনে সাপটিকে অবমুক্ত করা হয়।
বাড়ির মালিক নিবারণ কুমার বলেন, ‘আমার সবজিখেতে বেড়া হিসেবে সুতার জাল টানানো আছে। সেই জালের ফাঁকে আটকে পড়ে অজগরের মাথার অংশ। বাড়ির নারীরা প্রথমে দেখে ভয় পেয়ে চিৎকার করতে থাকেন। আমিও দৌড়ে গিয়ে দেখি, সত্যিই একটা অজগর জালে আটকে আছে। আগে শুনেছি পাশের গ্রামে অজগর আসে; কিন্তু আমাদের এখানে কখনো আসেনি। এবার হঠাৎই এল।’
অজগর উদ্ধারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই আশপাশের গ্রাম থেকে কৌতূহলী মানুষ ভিড় করেন নিবারণ কুমারের বাড়িতে। কেউ মুঠোফোনে ভিডিও করেন, কেউ ছবি তোলেন।
বন কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান বলেন, অজগরটি সুস্থ অবস্থায় ছিল। সাধারণত খাবারের সন্ধানে বা উপযুক্ত জায়গা খুঁজতে তারা লোকালয়ে চলে আসে। সুন্দরবনে খাদ্যের অভাব নেই, তবে অজগরের দৃষ্টিশক্তি দুর্বল। তাই মাঝেমধ্যে বিভ্রান্ত হয়ে গ্রামে ঢুকে পড়ে। তিনি আরও জানান, এর আগে গত ১৭ জুন কয়রার সুন্দরবন-সংলগ্ন ৬ নম্বর কয়রা গ্রাম থেকেও ১০ ফুট লম্বা একটি অজগর উদ্ধার করা হয়েছিল। এখন মানুষ অনেক সচেতন হয়েছে। আগে সাপ দেখলেই পেটানো হতো, এখন সবাই বন বিভাগে খবর দেয়। আজকের অজগরটিও সেই সচেতনতার কারণেই বেঁচে গেছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রাঙামাটির বরকলে অজগরের পেটে ছাগল
রাঙামাটির বরকল উপজেলার এরাবুনিয়া এলাকায় রোকন মিয়ার পোষা ছাগলটি বাড়ির পাশের বনে ঘাস খাচ্ছিল। হঠাৎ করে বনের ভিতর থেকে বিভিন্ন পশুপাখির আওয়াজ আসতে থাকে। জোর আওয়াজে বিচলিত হয়ে রোকন মিয়াসহ বাড়ির লোকজন ছুটে গিয়ে বনের দিকে।
দৃশ্য দেখে তাদের চোখ কপালে উঠে যাওয়ার দশা! একটি বিশাল অজগর তাদের ছাগলটি সম্পূর্ণ গিলে ফেলে পড়ে আছে পাটপাট হয়ে। নড়ার কোনো ক্ষমতাও নেই তার।
এসময় রোকন মিয়া ও প্রতিবেশিরা মিলে সাপটিকে ধরে এরাবুনিয়া বাজারে নিয়ে গেলে বিপুল পরিমাণ উৎসুক মানুষের সমাগম হয়। পরে বন বিভাগকে খবর দেওয়া হলে তারা সাপটিকে নিয়ে যায়। তবে সাপের পেট থেকে ছাগলটিকে বের করা সম্ভব হয়নি। বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে এই ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আব্দুল সালাম বলেন, ‘‘এর আগে এই এলাকায় এত বড় অজগর দেখা যায়নি। অজগরটি প্রায় ১৮ ফুট লম্বা ছিল।’
রাঙামাটি বন বিভাগের বরকল রেঞ্জের সহকারী রেঞ্জার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, “স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে সাপটি উদ্ধার করে বরকল রেঞ্জে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। সন্ধ্যায় সাপটিকে বরকল রিজার্ভ ফরেস্টে অবমুক্ত করা হয়। তবে সাপটিকে টানাহেঁচড়া করার কারণে কিছুটা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। সাপটি যেখানে অবমুক্ত করা হয়েছে সেখানে স্থির হয়ে আছে, আমরা সাপটিকে পর্যবেক্ষণে রেখেছি।”
ঢাকা/শংকর/এস