ছাত্রাবস্থায় একটি দারুণ বই পড়েছিলাম—দ‍্য ওয়ার্ল্ড অব জিনিয়াস। লিখেছেন নোবেলজয়ী পদার্থবিদ অধ্যাপক হিদেকি ইউকাওয়া। বইতে চীনা দার্শনিক চুয়াং সুর একটি দর্শন পড়ে খুব মুগ্ধ হয়েছিলাম। বিশেষ করে তাঁর একটি ধারণা আমাকে গভীরভাবে আকৃষ্ট করেছিল—‘অপ্রয়োজনীয়র প্রয়োজনীয়তা’ (দ‍্য ইউজফুলনেস অব ইউজলেস)।

আজকের দিনে অধিকাংশ গবেষক সেই বিষয়েই মনোযোগ দেন, যেগুলো ‘প্রয়োজনীয়’ বলে বিবেচ্য। ওসব বিষয়েই তাঁরা গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন; কিন্তু ‘অপ্রয়োজনীয়র প্রয়োজনীয়তা’ এমন সব বিষয় নিয়ে ভাবতে অনুপ্রাণিত করেছিল, যেগুলো শুরুতে ‘অপ্রয়োজনীয়’ মনে হয়। যেমন পোরাস (ছিদ্রওয়ালা কাঠামো)।

পোরাসকাঠামো নিয়ে কাজ করাকে কেউ গুরুত্ব দিত না। কারণ, সবাই ঘন কাঠামো নিয়েই কাজ করছিলেন। কারণ, ওগুলোকেই কার্যকর কঠিন পদার্থ তৈরির জন্য দরকারি মনে করা হতো; কিন্তু আমরা ভাবলাম, পোরাসের ‘ফাঁকা জায়গাগুলো’ হয়তো আয়ন বা অণুকে ধরে রাখা, চেনা, পরিবহন কিংবা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কাজে লাগতে পারে। তাই এ নিয়ে আমরা কাজ শুরু করলাম।

আরও পড়ুন৪০০ প্রজাতির পাখির ছবি তুলেছেন রাজশাহীর এই দম্পতি২১ ঘণ্টা আগে

সে সময় সবাই বিশ্বাস করতেন, জৈবপদার্থ দিয়ে কোনো স্থিতিশীল ছিদ্রযুক্ত গঠন তৈরি করা সম্ভব নয়। ফলে অনেকেই ভাবতেন, আমরা ‘অপ্রয়োজনীয়’ গবেষণা করছি। কারণ, তাঁরা বুঝতে পারেননি এই আপাততুচ্ছ ছিদ্রগুলোর ভেতরের ফাঁকা জায়গা কতটা সম্ভাবনাময় হতে পারে।

কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের গবেষণার একটি শক্তিশালী ধারা হলো—সব সময় এমন কিছু বেছে নেওয়া, যেটি নিয়ে কেউ ভাবেননি, কেউ আগ্রহ দেখাননি। তারপর সেটির ভেতর থেকে একেবারে নতুন একটি জ্ঞানের দরজা খুলে দেওয়া।

নোবেল জয়ের পর অনলাইনের মাধ্যমে ভিডিও ইন্টারভিউ দিচ্ছেন সুসুমু.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আ‌সি‌ফের জন্য গণঅধিকার পরিষদের দরজা সবসময় খোলা: রাশেদ খান

উপদেষ্টা পরিষদ থেকে সদ্য পদত্যাগী স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে যোগদা‌নের আহ্বান জা‌নি‌য়ে গণঅ‌ধিকার প‌রিষ‌দের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান ব‌লে‌ছেন, তার জন্য আমা‌দের দরজা সবসময় খোলা র‌য়ে‌ছে। তি‌নি আস‌লে যোগ‌্যতা ও মর্যাদা অনুযায়ী তা‌কে সম্মা‌নিত করা হ‌বে।  

উপ‌দেষ্টা প‌রিষদ থে‌কে পদত্যাগের পর আসিফ গণঅ‌ধিকার প‌রিষ‌দে যোগ দি‌তে পা‌রেন এমন গুঞ্জ‌নের ম‌ধ্যে বৃহস্প‌তিবার এ বিষ‌য়ে দল‌টির সাধারণ সম্পাদক এ কথা ব‌লেন। 

তি‌নি ব‌লেন, ‘‘সাবেক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এক সময় আমাদের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন এবং তার সঙ্গে আমাদের সখ্য রয়েছে। তিনি পদত্যাগ করার আগের দিনও তার সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। গণঅধিকার পরিষদে আসার ব্যাপারে তিনি ইতিবাচক। কিন্তু এখনো পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি যদি আমাদের সঙ্গে আসতে চান সেক্ষেত্রে তার যোগ্যতা ও মর্যাদা অনুযায়ী তাকে সম্মানিত করা হবে।’’ 

রাশেদ খান বলেন, ‘‘আন্দোলন সংগ্রমে তিনি ভূমিকা রেখেছেন। বিশেষ করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের তিনি নায়ক। তিনি চাইলে যে কোনো দলে যোগদান করতে পারেন। অথবা নতুন দলও গঠন করতে পারেন। সেই স্বাধীনতা তার রয়েছে। যেহেতু আমরা একসঙ্গে রাজনীতি করেছি, আমাদের সঙ্গে তার সখ্য রয়েছে, সেক্ষেত্রে গণঅধিকার পরিষদে আসলে তার জন্য ভালো হবে। তিনি সহজে আমাদের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবেন। যেটি অন্য দলের ক্ষেত্রে তার জন্য কঠিন হবে। তিনি যদি চান গণঅধিকার পরিষদে আসতে পারেন। তার জন্য গণঅধিকার পরিষদের দরজা সবসময় খোলা রয়েছে।’’

‘‘তিনি (আসিফ) উপদেষ্টা ছিলেন, সরকারে থাকলে সমালোচনা হয়। বয়স তো খুব বেশি না, এই বয়সে বেশ কিছু ভুলভ্রান্তি করেছেন। আমরা মনে করি বয়স বাড়ার সঙ্গে তার ভেতরে পরিপক্বতা বাড়বে। বুঝবেন, দেখবেন, শিখবেন। তার ভুলভ্রান্তি নিয়ে আলোচনা করা এই মুহূর্তে সমীচীন নয়,’’ বলেন তিনি। 

জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে রাশেদ বলেন, আসিফ মাহমুদের জন্যই ৬ আগস্টের কর্মসূচি একদিন এগিয়ে ৫ আগস্ট করা হয়। এই সাহসী ভূমিকা ছিল তার। যে সিদ্ধান্তের কারণে স্বৈরাচারী হাসিনার পতন হয়। তার প্রতি আমাদের ভালোবাসা দেখানো উচিত ব‌লেও মন্তব‌্য ক‌রেন রা‌শেদ খান। 

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে উপ‌দেষ্টা আ‌সিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম বুধবার প্রধান উপ‌দেষ্টার কা‌ছে পদত্যাগপত্র দি‌য়ে সরকার থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এরপর থেকেই গণঅ‌ধিকার প‌রিষ‌দে আ‌সি‌ফের যোগদান নি‌য়ে গুঞ্জন ছড়িযে পড়ে। যদিও এ বিষয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেননি আসিফ। 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন// 

সম্পর্কিত নিবন্ধ