সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নাগরিকদের অংশগ্রহণ বাড়ানো এখন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, তবে ডিজিটাল ডিভাইসের সীমাবদ্ধতা এবং শহর ও গ্রামের মধ্যে বিদ্যমান ডিজিটাল বৈষম্যের মতো কারণগুলোর জন্য অনেক নাগরিক এখনো এই প্রক্রিয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছেন। তাই ‘ই-পার্টিসিপেশন’ নীতিমালার বাস্তবায়ন বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ারে প্রস্তাবিত ‘ই-পার্টিসিপেশন’ নীতিমালা উপস্থাপন ও হস্তান্তর অনুষ্ঠানে আলোচকেরা এ কথা বলেন। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে নাগরিক অংশগ্রহণ বাড়াতে নীতিমালাটি তৈরি করেছে মিডিয়া অ্যান্ড রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (এমআরডিআই)। অনুষ্ঠানেরও আয়োজক ছিল তারা।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী। তিনি বলেন, (সরকারি সিদ্ধান্ত) নাগরিক অংশগ্রহণের জন্য যে নতুন নীতি তৈরি হচ্ছে, সেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আইসিটি বিভাগ ‘ই-পার্টিসিপেশন’ বাস্তবায়নে গুরুত্ব সহকারে কাজ করছে, যার প্রভাব শীঘ্রই দৃশ্যমান হবে। এই প্রস্তাবিত কাঠামোর খসড়াটি আইন ও নীতি বিভাগের ভেটিংয়ে পাঠানো হবে এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ এর বাস্তবায়ন এগিয়ে নিয়ে যাবে।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব মো.

মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, দেশের প্রায় ৪৬ শতাংশ জনগণ ফিচার ফোন ব্যবহার করেন। ফিচার ফোন ব্যবহারকারী ব্যক্তিরা সরকারি ওয়েবসাইটের সঙ্গে পরিচিত নন। যাঁরা সরকারি ওয়েবসাইট ব্যবহার করছেন, তাঁদের বেশির ভাগই শিক্ষিত ও শহরের বাসিন্দা। ফলে বড় একটি অংশ এর বাইরে থেকে যাচ্ছেন। তাঁদের কীভাবে এই সুবিধার আওতায় নিয়ে আসা যায়, সেটি নীতিমালায় থাকা জরুরি।

অনুষ্ঠানে এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. দাউদ মিয়া বলেন, সরকার ও এনজিও (বেসরকারি সংস্থা) দীর্ঘদিন যাবৎ পৃথকভাবে সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। এই কাজে সমন্বয় করতে একটি কেন্দ্রীয় ডিজিটাল সেবা ব্যবস্থাপনা গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি কার্যকর হলে নাগরিকেরা এক প্ল্যাটফর্মে বহুমুখী সেবা পাবেন এবং ‘ই-পার্টিসিপেশন’ আরও গতিশীল হবে।

এ সময় প্রস্তাবিত নীতিমালাটি উপস্থাপন করেন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান আইসোশ্যালের চেয়ারপারসন অনন্য রায়হান। কাঠামো বাস্তবায়নের পথে নাগরিক এবং সরকার উভয় পক্ষেরই বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে উল্লেখ করে তা তুলে ধরেন তিনি। উপস্থাপনায় বলা হয়, নাগরিকদের জন্য সবচেয়ে বড় বাধা হলো প্রযুক্তিতে সীমিত প্রবেশাধিকার, গ্রাম-শহরের ডিজিটাল বৈষম্য, তথ্যের নিরাপত্তা ঝুঁকি এবং ডিজিটাল সাক্ষরতার অভাব। অন্যদিকে, সরকারের দৃষ্টিকোণ থেকে চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে রয়েছে সরকারি দপ্তরগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতা, আংশিক ডিজিটাইজেশন, দক্ষ জনবলের অভাব ও বাজেট সীমাবদ্ধতা।

এমআরডিআইয়ের নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান বলেন, ই-পার্টিসিপেশন বাড়াতে নাগরিক সমাজকে আরও কীভাবে সম্পৃক্ত করা যায়, সেসব উপায় নির্ধারণ করতে তারা তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সহযোগিতায় দেশের সাতটি বিভাগে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা এবং বেসরকারি সংস্থার নির্বাহী পরিচালকদের সঙ্গে পরামর্শের ভিত্তিতে প্রস্তাবিত নীতিমালাটি চূড়ান্ত করা হয়েছে।

ঢাকা বিভাগের কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মামুনুর রশীদ ভুঞা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রস ত ব ত অন ষ ঠ ন গ রহণ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারি সিদ্ধান্তে নাগরিক অংশগ্রহণ বাড়াতে গ্রাম–শহরের বৈষম্য কমাতে হবে

সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নাগরিকদের অংশগ্রহণ বাড়ানো এখন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, তবে ডিজিটাল ডিভাইসের সীমাবদ্ধতা এবং শহর ও গ্রামের মধ্যে বিদ্যমান ডিজিটাল বৈষম্যের মতো কারণগুলোর জন্য অনেক নাগরিক এখনো এই প্রক্রিয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছেন। তাই ‘ই-পার্টিসিপেশন’ নীতিমালার বাস্তবায়ন বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ারে প্রস্তাবিত ‘ই-পার্টিসিপেশন’ নীতিমালা উপস্থাপন ও হস্তান্তর অনুষ্ঠানে আলোচকেরা এ কথা বলেন। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে নাগরিক অংশগ্রহণ বাড়াতে নীতিমালাটি তৈরি করেছে মিডিয়া অ্যান্ড রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (এমআরডিআই)। অনুষ্ঠানেরও আয়োজক ছিল তারা।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী। তিনি বলেন, (সরকারি সিদ্ধান্ত) নাগরিক অংশগ্রহণের জন্য যে নতুন নীতি তৈরি হচ্ছে, সেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আইসিটি বিভাগ ‘ই-পার্টিসিপেশন’ বাস্তবায়নে গুরুত্ব সহকারে কাজ করছে, যার প্রভাব শীঘ্রই দৃশ্যমান হবে। এই প্রস্তাবিত কাঠামোর খসড়াটি আইন ও নীতি বিভাগের ভেটিংয়ে পাঠানো হবে এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ এর বাস্তবায়ন এগিয়ে নিয়ে যাবে।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, দেশের প্রায় ৪৬ শতাংশ জনগণ ফিচার ফোন ব্যবহার করেন। ফিচার ফোন ব্যবহারকারী ব্যক্তিরা সরকারি ওয়েবসাইটের সঙ্গে পরিচিত নন। যাঁরা সরকারি ওয়েবসাইট ব্যবহার করছেন, তাঁদের বেশির ভাগই শিক্ষিত ও শহরের বাসিন্দা। ফলে বড় একটি অংশ এর বাইরে থেকে যাচ্ছেন। তাঁদের কীভাবে এই সুবিধার আওতায় নিয়ে আসা যায়, সেটি নীতিমালায় থাকা জরুরি।

অনুষ্ঠানে এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. দাউদ মিয়া বলেন, সরকার ও এনজিও (বেসরকারি সংস্থা) দীর্ঘদিন যাবৎ পৃথকভাবে সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। এই কাজে সমন্বয় করতে একটি কেন্দ্রীয় ডিজিটাল সেবা ব্যবস্থাপনা গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি কার্যকর হলে নাগরিকেরা এক প্ল্যাটফর্মে বহুমুখী সেবা পাবেন এবং ‘ই-পার্টিসিপেশন’ আরও গতিশীল হবে।

এ সময় প্রস্তাবিত নীতিমালাটি উপস্থাপন করেন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান আইসোশ্যালের চেয়ারপারসন অনন্য রায়হান। কাঠামো বাস্তবায়নের পথে নাগরিক এবং সরকার উভয় পক্ষেরই বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে উল্লেখ করে তা তুলে ধরেন তিনি। উপস্থাপনায় বলা হয়, নাগরিকদের জন্য সবচেয়ে বড় বাধা হলো প্রযুক্তিতে সীমিত প্রবেশাধিকার, গ্রাম-শহরের ডিজিটাল বৈষম্য, তথ্যের নিরাপত্তা ঝুঁকি এবং ডিজিটাল সাক্ষরতার অভাব। অন্যদিকে, সরকারের দৃষ্টিকোণ থেকে চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে রয়েছে সরকারি দপ্তরগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতা, আংশিক ডিজিটাইজেশন, দক্ষ জনবলের অভাব ও বাজেট সীমাবদ্ধতা।

এমআরডিআইয়ের নির্বাহী পরিচালক হাসিবুর রহমান বলেন, ই-পার্টিসিপেশন বাড়াতে নাগরিক সমাজকে আরও কীভাবে সম্পৃক্ত করা যায়, সেসব উপায় নির্ধারণ করতে তারা তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সহযোগিতায় দেশের সাতটি বিভাগে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা এবং বেসরকারি সংস্থার নির্বাহী পরিচালকদের সঙ্গে পরামর্শের ভিত্তিতে প্রস্তাবিত নীতিমালাটি চূড়ান্ত করা হয়েছে।

ঢাকা বিভাগের কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মামুনুর রশীদ ভুঞা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ