নোয়াখালীতে ঘুমন্ত মাদ্রাসাছাত্রকে গলা কেটে হত্যা, সহপাঠী আটক
Published: 27th, October 2025 GMT
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার একটি মাদ্রাসা থেকে এক শিক্ষার্থীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকালে লাশটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত মাদ্রাসাশিক্ষার্থীর এক সহপাঠীকে পুলিশ আটক করেছে।
নিহত শিক্ষার্থীর নাম নাজিম উদ্দিন (১৩)। সে সোনাইমুড়ী উপজেলা উপজেলার চাষীরহাট ইউনিয়নের জাহানাবাদ গ্রামের মোহাম্মদ ওবায়েদ উল্লাহর ছেলে। সোনাইমুড়ী পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাটরা আল মাদ্রাসাতুল ইসলামিয়া মাখছুদুল উলুম মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের ছাত্র ছিল সে।
খুনের ঘটনায় আটক শিক্ষার্থীর বয়স ১৬ বছর। ওই কিশোরও মাদ্রাসাটির হিফজ বিভাগের শিক্ষার্থী। তাঁর কাছ থেকে একটি ছুরি উদ্ধার হয়েছে। ছুরিটি হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, নাজিম উদ্দিন মাদ্রাসায় থেকে হিফজ বিভাগে পড়ালেখা করে আসছিল। গতকাল রোববার রাতেও অন্যান্য দিনের মতো সে অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মাদ্রাসার একটি কক্ষে ঘুমিয়ে ছিল। ওই কক্ষে ১৪ জন শিক্ষার্থী থাকে। দিবাগত রাত তিনটার দিকে কারও গোঙানোর শব্দ পেয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী জেগে ওঠে। পরে তারা কক্ষের বাতি জ্বালিয়ে দেখতে পায়, রক্তাক্ত অবস্থায় নাজিমের গলাকাটা লাশ পড়ে রয়েছে। মাদ্রাসাশিক্ষকদের বিষয়টি জানানো হয়। খবর পেয়ে সকালে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।
সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
ওসি বলেন, আটক ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে টুপি পরা নিয়ে সপ্তাহ দুয়েক আগে নাজিম উদ্দিনের ঝগড়া হয়েছিল। মাদ্রাসাশিক্ষকেরা বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। এরপরও মনে ক্ষোভ পুষে রেখেছিল আটক কিশোর। এরই জেরে সে স্থানীয় বাজার থেকে ৩০০ টাকায় একটি ছুরি কিনে লুকিয়ে রাখে। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী গতকাল রাতে নাজিমকে ঘুমন্ত অবস্থায় গলা কেটে হত্যা করে। হত্যার পর ছুরিটি লুকিয়ে রেখে কক্ষে শুয়ে ছিল সে।
ঘটনাস্থলে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) লোকজন রয়েছেন বলে জানিয়ে ওসি বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে। নিহত শিক্ষার্থীর পরিবারের অভিযোগের আলোকে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উদ ধ র
এছাড়াও পড়ুন:
মানিকগঞ্জে গবাদিপশুর চিকিৎসা সংকট
মানিকগঞ্জ জেলায় গবাদিপশুর চিকিৎসা সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। জনবল ঘাটতি এবং অতিরিক্ত অর্থ দাবির কারণে সরকারি চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন খামারিরা। পাশাপাশি বন্ধ রয়েছে অধিকাংশ পশু সেবা ও কল্যাণ কেন্দ্র। ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে অসংখ্য পশু, যে কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন খামারিরা।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, জনবল সংকটের কারণেই সেবা ব্যাহত হচ্ছে। খামারিদের অভিযোগ, সরকারি হাসপাতালেও চিকিৎসা পেতে দিতে হয় অতিরিক্ত টাকা; অন্যথায় চিকিৎসা মেলে না।
শিবালয় উপজেলার খামারি আশিকুর রহমান শ্রাবণ বলেন, “সরকারি চিকিৎসক না পেয়ে হাতুড়ে ডাক্তারের কাছে যেতে হয়েছিল। ভুল চিকিৎসার কারণে ১০ দিনের মাথায় গরুটি মারা যায়। ক্ষতি হয়েছে দেড় লাখ টাকারও বেশি।”
ঘিওর উপজেলার খামারি আলতাফ হোসেন বলেন, “উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস অনেক দূরে। অসুস্থ গরু নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। ফোন করলেও চিকিৎসক সাড়া দেন না। একবার ভুল ভ্যাকসিন প্রয়োগ করেছিলাম। একদিনেই তিনটি গরু মারা গেল।”
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার খামারি সর্দার মোশাররফের অভিযোগ, “পল্লী চিকিৎসকের তুলনায় সরকারি চিকিৎসকদের কাছে যেতে তিনগুণ খরচ হয়। সরকারি সহায়তা শুধু তাদেরই জন্য, যাদের সঙ্গে দপ্তরের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে।”
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বলেন, “মানিকগঞ্জে পশু চিকিৎসক সংকট মারাত্মক। বিষয়টি ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। জেলায় প্রায় ১২ হাজার ছোট-বড় খামার রয়েছে, কিন্তু চিকিৎসাসহ ৫৫টি পদ এখনো শূন্য। এছাড়া ইউনিয়ন ও দুর্গম এলাকার ৩০টি পশু সেবা ও কল্যাণ কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে।”
ঢাকা/চন্দন/মাসুদ