এক আসনে একাধিক প্রার্থী বাছাই করে রাখছে বিএনপি
Published: 27th, October 2025 GMT
আগামী নির্বাচনে দলের প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ গুছিয়ে আনছে বিএনপি। এই প্রক্রিয়ায় প্রতি আসনে একাধিক প্রার্থী ঠিক করে রাখা হচ্ছে বলে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের কথায় তা জানা গেছে।
সালাহউদ্দিন আহমদ আজ সোমবার যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সমগ্র বাংলাদেশে আসনভিত্তিক একাধিক যোগ্য প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি।’
২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি এক আসনে একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছিল, একাধিক প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমাও দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ আমলে ওই নির্বাচনে প্রার্থিতা বাতিলের মতো ঘটনা ঘটলে আসন যেন বিএনপিশূন্য না হয়ে পড়ে, সে জন্য ওই কৌশল নেওয়া হয় বলে তখন দলটির নেতারা জানিয়েছিলেন।
এবার আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে দুই শতাধিক আসনে ধানের শীষের প্রার্থী তালিকা বিএনপির স্থায়ী কমিটির পরবর্তী বৈঠকে চূড়ান্ত হবে। জোটের কারণে কিছু আসন ছাড়তে হবে, তা–ও বিবেচনা করতে হচ্ছে দলটিকে।
এক আসনে একাধিক প্রার্থী বাছাই করে রাখলেও ঐক্যের বিষয়টিতে জোর দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা একটিই মেসেজ দিতে চাই, যাতে আমাদের দলের ভেতরে ঐক্য থাকে, জাতির ভেতরে ঐক্য থাকে। জাতির মধ্যে ঐক্যটাই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। সেই ঐক্য বজায় রাখার জন্য কেউ যাতে বিভেদের পথে না যায়, সেই মেসেজটা আমরা দিতে চাই।’
বিএনপি যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলোকে নিয়ে জোট গঠন করবে জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আন্দোলনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তিকে নিয়ে গঠন করা হবে বৃহত্তর রাজনৈতিক জোট।’
দেশের যুব সমাজকে বিভিন্নভাবে কাজে লাগাতে বিএনপির পরিকল্পনা নিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে যুবকদের, তরুণদের রাজনৈতিক ভাবনাকে আহরণ করার জন্য আমরা সমগ্র বাংলাদেশে সফর করেছি। আমরা তারুণ্যের রাজনৈতিক ভাবনা গ্রহণ করে সামনের দিনে জাতি বিনির্মাণে কীভাবে আমরা সেটা বাস্তবায়ন করতে পারি, সেই লক্ষ্যে আমরা কর্মসূচি প্রণয়ন করছি। আশা করি, এই দেশ একটি তারুণ্যনির্ভর বাংলাদেশ হবে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নসহ বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের হাজারো নেতা–কর্মী।
আরও পড়ুননির্বাচনী প্রস্তুতিতেই এখন পূর্ণ মনোনিবেশ বিএনপির ২৫ অক্টোবর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ল হউদ দ ন আহমদ এক ধ ক প র র থ ব এনপ র র র জন ক আসন
এছাড়াও পড়ুন:
এনইআইআর চালুতে ‘আপস করবে না’ সরকার, কমতে পারে আমদানি শুল্ক
দেশে অবৈধ পথে ও চোরাই মোবাইল ফোন আনা বন্ধের লক্ষ্যে ১৬ ডিসেম্বর থেকে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) চালু করতে যাচ্ছে সরকার। এ ক্ষেত্রে নতুন করে সময় বাড়ানো হচ্ছে না। তবে মুঠোফোন আমদানিতে শুল্ক কমানো এবং বর্তমানে ব্যবসায়ীদের মজুতে থাকা অবৈধ মোবাইলগুলো সহজ প্রক্রিয়ায় বৈধতা দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে।
গত রোববার মোবাইল আমদানিতে অত্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে শুল্ক ও ভ্যাট কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) চিঠি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। চিঠিতে বলা হয়েছে, যেহেতু ১৬ ডিসেম্বরে এনইআইআর সিস্টেম চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সে জন্য এর আগেই শুল্ক ও ভ্যাট–কাঠামো যৌক্তিক করা প্রয়োজন। এমনভাবে শুল্ক ও ভ্যাট হার নির্ধারণ করা উচিত, যাতে উৎপাদন ও আমদানির মধ্যকার বৈষম্য কমে আসে এবং বিনিয়োগ সুরক্ষা নিশ্চিত হয়।
এ বিষয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব রোববার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এনইআইআর চালু হবেই। এটা নিয়ে কোনো আপস হবে না।’ তিনি আরও বলেন, আমদানি শুল্ক কমিয়ে আনার জন্য এনবিআরের সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে। বৈধ আমদানির শুল্ক সহজ হবে।
আর অবৈধভাবে আনা যেসব ফোন এখন ব্যবসায়ীদের স্টকে আছে, সেগুলোর বৈধতা দেওয়ার জন্য আলোচনা চলছে। তবে সেটির জন্য ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ওই সব হ্যান্ডসেটের আইএমইআই (মুঠোফোন শনাক্তকরণ নম্বর) জমা দিতে হবে।
এনইআইআর কীএনইআইআর হলো এমন একটি কেন্দ্রীয় ডেটাবেজ (তথ্যভান্ডার), যেখানে দেশে ব্যবহৃত প্রতিটি মোবাইল হ্যান্ডসেটের আইএমইআই (মুঠোফোন শনাক্তকরণ নম্বর) নিবন্ধিত থাকবে। নির্দিষ্ট এনআইডির সঙ্গে ডিভাইসটি যুক্ত থাকবে অর্থাৎ কোন ফোনটি কার নামে নিবন্ধিত, কোন সিম কোন ডিভাইসে চলছে, ডিভাইসটির মালিকানা বদল হলে কার কাছে গেছে—এসব তথ্য রাষ্ট্রীয় ডেটাবেজে থাকবে।
‘নকল ফোন আনা বন্ধ হবে’বিটিআরসি ও এনবিআরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে রোববার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের সঙ্গে একটি ভার্চ্যুয়াল বৈঠক হয়। বৈঠকের একটি সূত্র জানিয়েছে, শুল্ক কমানোর বিষয়ে এনবিআর রাজি হয়েছে। তবে কতটা কমানো হবে, তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী প্রথম আলোকে বলেন, আমদানি করার জন্য আমদানিকারকদের একটি ‘এনলিস্টমেন্টের’ (তালিকা) প্রয়োজন হয় এবং যে কোম্পানি থেকে আমদানি করা হচ্ছে, সেই কোম্পানির কাছ থেকে নথি লাগে। ছোট ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, তাঁরা সব সময় ওই কোম্পানির নথি দিতে পারেন না। এটা কতটা সহজ করা যায়, তা নিয়ে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করবে বিটিআরসি।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, পুরো প্রক্রিয়াটি করার একটি উদ্দেশ্য হলো ক্লোন, রিফার্নিশড ও চোরাই ফোন দেশে আনা বন্ধ করা। আমদানিকারকদের প্রমাণ করতে হবে, যে মুঠোফোন তাঁরা আমদানি করছেন, সেটি আসল। এ ক্ষেত্রে তাঁরা যদি ডিলারদের কাছ থেকে কিনে থাকেন, তাহলে ডিলারকে সনদ দিতে হবে যে ফোনটি আসল।
ব্যবসায়ীদের দাবিন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার চালুর উদ্যোগের বিরোধিতা করে মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশের (এমবিসিবি) ব্যানারে গত রোববার সকাল থেকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনের সামনে অবস্থান নেন মুঠোফোন ব্যবসায়ীরা। মোট আটটি দাবিতে টানা ১১ ঘণ্টা তাঁরা এই কর্মসূচি পালন করেন।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্যবসায়ীদের শুল্ক পরিশোধ, লাইসেন্স নেওয়া এবং বিটিআরসি ভেন্ডর তালিকায় যুক্ত হতে ছয় মাস সময় দেওয়া। হ্যান্ডসেট আমদানি করতে কোনো ব্র্যান্ডের লিখিত অনুমতি লাগবে না, শুধু সরকারি লাইসেন্স থাকলেই ব্যবসায়ী পণ্য আমদানি করতে পারবে এমন বিধান করা। এখন বিদেশ থেকে আসা রেডি ফোন (সিবিইউ) এবং দেশে যন্ত্রাংশ সংযোজন করা ফোনের (সিকেডি) মধ্যে শুল্কের ব্যবধান কমিয়ে আনা। এনইআইআর প্রকল্প পুরোপুরি সরকারি অর্থে বাস্তবায়ন করা। এনইআইআর চালুর পর মজুত থাকা ফোন বিক্রি করতে অন্তত ছয় মাস সময় দেওয়া এবং দোকানের বিক্রির রশিদকেই বৈধ রেজিস্ট্রেশন কাগজ হিসেবে গ্রহণ করা।