বিল গেটস—নামটি শুধু প্রযুক্তিজগতের জন্য নয়, মানবিক উদারতার প্রতীক হিসেবেও সমানভাবে পরিচিত। ১৯৫৫ সালের ২৮ অক্টোবর জন্ম নেওয়া প্রযুক্তি খাতের এই মহানায়ক ছোটবেলা থেকেই ছিলেন কম্পিউটারপ্রেমী। প্রোগ্রামিং ছিল তাঁর ধ্যানজ্ঞান। মা–বাবা চাইতেন বড় হয়ে আইনজীবী হবেন। কিন্তু বিল গেটসের জন্মই যেন হয়েছিল অন্য কিছুর জন্য। তাই তো হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছেড়ে বন্ধুর সঙ্গে মিলে প্রতিষ্ঠা করেন ছোট্ট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। গড়ে তোলেন মাইক্রোসফট। এর মধ্য দিয়ে বদলে দেন পুরো বিশ্বকে।

বিল গেটস বেড়ে ওঠেন উচ্চমধ্যবিত্ত পরিবারে। মায়ের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। মা মেরি গেটস শহরের সামাজিক, দাতব্য ও ব্যবসায়িক কাজে সক্রিয় ছিলেন। ছোটবেলায় মেরি প্রায়ই বিলকে তাঁর সঙ্গে স্কুল ও কমিউনিটি সংগঠনে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নিয়ে যেতেন। সেই অভিজ্ঞতা পরে বিলের নিজের সামাজিক উদ্যোগে প্রভাব ফেলে।

বিল ছিলেন ‘বইপোকা’। ছোটবেলা থেকেই সময় কাটত ঘণ্টার পর ঘণ্টা বই পড়ে। প্রায় ১১-১২ বছর বয়সে তাঁর মা–বাবা তাঁকে নিয়ে কিছুটা উদ্বিগ্ন হতে শুরু করেন। বিদ্যালয়ে তিনি ভালো করলেও মাঝেমধ্যে উদাসীন ও অন্তর্মুখী হয়ে পড়তেন। হয়তো তিনি নিঃসঙ্গ হয়ে যাবেন—এ দুশ্চিন্তায় সেভেন্থ গ্রেডে থাকতেই তাঁকে পাবলিক স্কুল থেকে সরিয়ে সিয়াটলের বেসরকারি ‘লেকসাইড স্কুলে’ ভর্তি করিয়ে দেওয়া হয়।

স্কুলে সব বিষয়েই পারদর্শী ছিলেন বিল। গণিত ও বিজ্ঞানে অসাধারণ কৃতিত্ব দেখান। পাশাপাশি নাটক ও ইংরেজিতেও ভালো ছিলেন।

মাত্র ১৩ বছর বয়সে লিখেছেন সফটওয়্যার প্রোগ্রাম

লেকসাইড স্কুলেই বিল গেটসের জীবনের সবচেয়ে বড় মোড় আসে। কম্পিউটার ছিল খুবই ব্যয়বহুল। এটি সবার কাছে সহজলভ্য ছিল না। সিয়াটলের এক কম্পিউটার কোম্পানি স্কুলছাত্রদের জন্য কম্পিউটার ব্যবহারের বিশেষ সুযোগ করে দেয়। ছাত্রদের মায়েদের ক্লাবের অর্থে কেনা হয় টেলিটাইপ টার্মিনাল। এটি একধরনের কম্পিউটার ইনপুট-আউটপুট ডিভাইস, যা টাইপরাইটারের মতো দেখতে। এতে স্ক্রিনের পরিবর্তে কাগজে কম্পিউটারের আউটপুট ছাপা হতো, আর কি–বোর্ডের মাধ্যমে কমান্ড পাঠানো যেত।

টেলিটাইপ টার্মিনালে কাজ করতে গিয়ে বিল গেটসের পরিচয় হয় লেকসাইড স্কুলের আরেক ছাত্র পল অ্যালেনের সঙ্গে। তিনি ছিলেন বিল গেটসের দুই বছরের বড়। দুজনেরই কম্পিউটারের প্রতি ছিল তীব্র আগ্রহ। এ আগ্রহই তাঁদের বন্ধুত্বের ভীত গড়ে দেয়।

এ টার্মিনাল বিলের কাছে ছিল যেন এক দিগন্ত উন্মোচনকারী যন্ত্র। যখন অন্যরা খেলাধুলা বা আড্ডায় সময় কাটাত, বিল তখন সেই কম্পিউটারেই ডুবে থাকতেন। বিল গেটস সেই টেলিটাইপ টার্মিনালেই প্রথম কম্পিউটার চালানো শেখেন। প্রোগ্রামিং শেখেন এবং মাত্র ১৩ বছর বয়সে প্রথম সফটওয়্যার প্রোগ্রাম লেখেন। এটি ছিল একটি গেম, যার নাম টিক-ট্যাক টো।

টেলিটাইপ টার্মিনালে কাজ করতে গিয়ে গেটসের পরিচয় হয় ওই স্কুলের আরেক ছাত্র পল অ্যালেনের সঙ্গে। তিনি ছিলেন গেটসের দুই বছরের বড়। দুজনেরই কম্পিউটারের প্রতি ছিল তীব্র আগ্রহ। এ আগ্রহই তাঁদের বন্ধুত্বের ভীত গড়ে দেয়। তাঁরা কাজের অবসরে বেশির ভাগই সময়ই প্রোগ্রামিং করে কাটাতেন।

১৯৭০ সালে হাইস্কুলে থাকতে মাত্র ১৫ বছর বয়সে গেটস পল অ্যালেনের সঙ্গে ব্যবসা শুরু করেন। তৈরি করেন ‘ট্রাফ-ও-ডেটা’ নামের একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম। এটি রাস্তায় চলাচল করা যানবাহন সম্পর্কে স্থানীয় সরকারকে তথ্য দিত। এ প্রকল্পের মাধ্যমে তাঁরা প্রায় ২০ হাজার ডলার আয় করেন। ওই সময় তাঁরা সিয়াটলের একটি কম্পিউটার কোম্পানির জন্য পে‌রোল প্রোগ্রামও তৈরি করে দেন। এমন সাফল্যের ফলে দুই কিশোর নিজেদের একটি প্রতিষ্ঠান গড়তে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। কিন্তু বিলের বাবা-মায়ের চাওয়া ছিল ভিন্ন—ছেলে পড়াশোনা শেষে বাবার মতো আইনজীবী হবেন।

প্রোগ্রামিংয়ের নেশায় হার্ভার্ড ছাড়লেন

১৯৭৩ সালে বিল গেটস লেকসাইড স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষ করে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। বাবা-মায়ের প্রত্যাশার চাপে শুরুতে আইন পেশায় ক্যারিয়ার গড়ার কথা ভেবেছিলেন। কিন্তু হার্ভার্ডে পড়াকালীন কম্পিউটারের প্রতি তাঁর আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। ক্লাসের তুলনায় হার্ভাডের কম্পিউটার ল্যাবেই বেশি সময় কাটাতেন তিনি। ফলে পরীক্ষার সময় অল্প ঘুমিয়ে রাত জেগে পড়তে হতো তাঁকে। তবে অসাধারণ মেধা ও মনোযোগের কারণে মোটামুটি ভালো ফল নিয়েই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতেন।

১৯৭৫ সালের জুলাই মাসে বিল গেটস ও পল অ্যালেন আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের সফটওয়্যার ব্যবসা শুরু করেন। প্রতিষ্ঠানের নাম রাখেন মাইক্রো–সফট। মাইক্রোকম্পিউটার ও সফটওয়্যার—শব্দ দুটি মিলিয়ে নামটি রাখা হয়। প্রথমে নামের মাঝখানে একটি হাইফেন ছিল। কিন্তু এক বছরের মধ্যে সেটি বাদ দিয়ে নামকরণ হয় মাইক্রোসফট।

গেটস যখন হার্ভার্ডে, অ্যালেন তখন ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটিতে দুই বছর পড়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে দেন ও বোস্টনে চলে যান। সেখানে একটি কোম্পানিতে চাকরি শুরু করেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে গেটসের বন্ধুত্ব ও যোগাযোগ অটুট ছিল।

১৯৭৪ সালের ডিসেম্বর মাসে অ্যালেন গেটসকে পপুলার ইলেকট্রনিকস সাময়িকীর একটি প্রতিবেদন দেখান। প্রতিবেদনটি ছিল আলটেয়ার ৮৮০০ নামের একটি মাইক্রোকম্পিউটার নিয়ে। এটি ছিল বিশ্বের প্রথম ব্যক্তিগত কম্পিউটার বা পিসি। মাইক্রো ইন্সট্রুমেন্টেশন অ্যান্ড টেলিমেট্রি সিস্টেমস (এমআইটিএস) নামের একটি প্রতিষ্ঠান এটি তৈরি করে।

বিল ও পল দুজনই এ নতুন কম্পিউটারের সম্ভাবনা দেখে মুগ্ধ হন। তাঁরা বুঝতে পারলেন, এটি ব্যক্তিগত কম্পিউটিংয়ের জগতে বিপ্লব ঘটাতে পারে। তাঁদের আগ্রহ এতটাই বেড়ে যায় যে তাঁরা সরাসরি প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। দাবি করেন, তাঁরা আলটেয়ার ৮৮০০ কম্পিউটারের জন্য একটি ‘বেসিক’ সফটওয়্যার প্রোগ্রাম তৈরি করছেন।

বাস্তবে বিল ও পলের কাছে কোনো আলটেয়ার ৮৮০০ কম্পিউটার ছিল না। এমনকি কম্পিউটার চালানোর মতো প্রস্তুত কোনো কোডও হাতে ছিল না। আসলে তাঁরা জানতে চাইছিলেন, এ কথায় প্রতিষ্ঠানটি আগ্রহী হয় কি না। হলোও তা–ই। এমআইটিএসের প্রেসিডেন্ট এড রবার্টস এই দুই তরুণকে সফটওয়্যারটির একটি ডেমো দেখাতে বললেন।

এ কথা শোনার পর গেটস ও অ্যালেন আদাজল খেয়ে নামেন। দেরি হলেই সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাবে। তাই দুই মাস প্রায় দিনরাত এক করে হার্ভার্ডের কম্পিউটার ল্যাবে বেসিক সফটওয়্যার প্রোগ্রামটি তৈরি করলেন।

ফোর্বস সাময়িকী অনুযায়ী তিনি টানা ১৯৯৫ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত বিশ্বের ৪০০ ধনীর তালিকার শীর্ষে ছিলেন। পরে ২০০৯ সাল ও ২০১৪ থেকে ২০১৭ পর্যন্তও ছিলেন শীর্ষস্থানে। ফোর্বসের ২০২৫ সালের হিসাব অনুযায়ী, তাঁর মোট সম্পদ প্রায় ১০ হাজার ৭৩০ কোটি ডলার।

অ্যালেন সফটওয়্যারটি নিয়ে নিউ মেক্সিকোর আলবুকারকে এমআইটিএসের অফিসে নিয়ে গেলেন। মজার ব্যাপার হলো, তাঁরা সফটওয়্যারটি বাস্তবে কখনোই আলটেয়ার ৮৮০০ কম্পিউটারে চালিয়ে দেখেননি। তবু ঝুঁকি নিয়ে সেটি টেস্ট রান করালেন। আশ্চর্যজনকভাবে সফটওয়্যারটিও নিখুঁতভাবে কাজ করল।

এড রবার্টস খুব খুশি হলেন। সঙ্গে সঙ্গে অ্যালেনকে চাকরি দিলেন এমআইটিএসে। অল্প কিছুদিন পর গেটসও অ্যালেনের সঙ্গে কাজ করার জন্য পড়াশোনা অসমাপ্ত রেখে হার্ভার্ড ছেড়ে দিলেন।

মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠা

১৯৭৫ সালের জুলাই মাসে বিল গেটস ও পল অ্যালেন আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের সফটওয়্যার ব্যবসা শুরু করেন। প্রতিষ্ঠানের নাম রাখেন মাইক্রো-সফট। মাইক্রোকম্পিউটার ও সফটওয়্যার—দুটি শব্দ মিলিয়ে নামটি রাখা হয়। প্রথমে নামের মাঝখানে একটি হাইফেন ছিল। এক বছরের মধ্যেই সেটি বাদ দিয়ে নামকরণ করা হয় মাইক্রোসফট।

আলটেয়ার কম্পিউটারে মাইক্রোসফটের সফটওয়্যারটি দারুণভাবে কাজ করেছিল। এ জন্য এমআইটিএস গেটস ও অ্যালেনকে মূল্য পরিশোধ করে এবং মালিকানা স্বত্ব দেয়।

গেটস তাঁর বিপুল পরিমাণ অর্থের বড় একটি অংশ জনমানুষের সেবায় ব্যয় করছেন। ২০০০ সালে তিনি ও তাঁর সাবেক স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস ১ হাজার ৬০০ কোটি ডলারের তহবিল নিয়ে ‘বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন’ গঠন করেন।

১৯৭০-এর দশকের শেষ দিকে ব্যক্তিগত কম্পিউটারের বাজার দ্রুত প্রসারিত হতে শুরু করে। সে সময় মাইক্রোসফট বুঝে গেল, আগামীর বিশ্বের চাবিকাঠি সফটওয়্যারের হাতেই। গেটস ও অ্যালেন সিদ্ধান্ত নিলেন, শুধু একটি কম্পিউটারের জন্য নয়; বরং বাজারে যত ব্যক্তিগত কম্পিউটার আসবে, সব কটির জন্য সফটওয়্যার তৈরি করবে মাইক্রোসফট।

১৯৮০ সালে বিশ্ববিখ্যাত কম্পিউটার কোম্পানি আইবিএম তাদের নতুন পিসি তৈরি করছিল। কম্পিউটার চালানোর জন্য দরকার ছিল একটি অপারেটিং সিস্টেম বা ওএস। আইবিএম মাইক্রোসফটের কাছে সাহায্য চাইল। মাইক্রোসফট তখনো নিজস্ব ওএস তৈরি করেনি, কিন্তু সুযোগ বুঝে গেটস চমৎকার এক সিদ্ধান্ত নিলেন। শহরের এক ছোট কোম্পানি থেকে কিউডিওস নামের একটি অপারেটিং সিস্টেম কিনলেন। পরে সেটিকে সাজিয়ে-গুছিয়ে নতুন নামে বাজারে আনলেন। নাম দেওয়া হলো মাইক্রোসফট অপারেটিং সিস্টেম বা এমএস-ডিওএস। এটিই হয়ে গেল আইবিএম পিসির প্রাণ।

১৯৭০ সালে সিয়াটলের লেকসাইড স্কুলে বিল গেটস ও তাঁর বন্ধু পল অ্যালেন.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সফটওয় য র ব ল গ টস র পল অ য ল ন ন ম র একট র বন ধ গ টস ও র জন য ব শ বব ক জ কর বছর র ব যবস প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

সেই বাইকের মালিক বলেন, ‘শোরুমে গেলেই সত্য বেরিয়ে আসবে’

ইনকিবাল মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক মো. আব্দুল হান্নানকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। 

শনিবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে হান্নানকে আটক করে র‌্যাব। রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) হান্নানকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করে পুলিশ।

আরো পড়ুন:

শেরপুরে নয়, হালুয়াঘাটে দুজনকে গ্রেপ্তার: পুলিশ

হাদিকে গুলি: সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার দাবিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাওয়ের ডাক

রাজধানীর পল্টন থানার উপ-পরিদর্শক সামিম হাসান জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হান্নানের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট দিদারুল আলমের আদালতে এই আবেদনের শুনানি হয়। 

রাষ্ট্রপক্ষের ঢাকা মহানগরের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী আদালতে বলেন, হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত হোন্ডার মালিকানার তথ্য যাচাই করে পুলিশ আবদুল হান্নানের নাম পেয়েছে। যারা গুলি করেছে, তাদের সঙ্গে হোন্ডার মালিকের সম্পর্ক কী, সেটা যাচাই করা এবং হত্যাচেষ্টার রহস্য উদ্‌ঘাটনের জন্য এই আসামিকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন। 

ফারুকী আরো বলেন, সামনে নির্বাচন, আর সারা জাতি এই হত্যাচেষ্টার রহস্য উদ্‌ঘাটনের দিকে তাকিয়ে আছে।

অন্যদিকে, আদালতে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আব্দুল হান্নান দাবি করেন, তিনি ওই মোটরসাইকেল বিক্রি করে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, বিষয়টি প্রমাণ করার জন্য তিনি গ্রেপ্তার হওয়ার পর র‌্যাব ও পুলিশকে অনুরোধ করেছিলেন তাকে শোরুমে (বিক্রয়কেন্দ্র) নিয়ে যেতে, যাতে সব সত্য বেরিয়ে আসে। কিন্তু তারা তা করেনি। হান্নান জানান, তিনি হাতের সমস্যার কারণে বাইকটি চালানো বন্ধ করে দিয়েছিলেন এবং নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় মিরপুর মাজার রোড থেকে কেনা হোন্ডাটি একটি শোরুমে বিক্রি করে দেন। 

আদালতে হান্নান দাবি করেন, মালিকানা থেকে তার নাম পরিবর্তন করে দেবেন বলে শোরুমকে জানিয়েছিলেন কিন্তু অসুস্থতার কারণে মালিকানা পরিবর্তন করার জন্য যেতে পারেননি।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হাদিকে শুক্রবার দুপুরে নির্বাচনি গণসংযোগ করে অটোরিকশায় ফেরার সময় চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। বর্তমানে তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন এবং তার অবস্থা এখনো সংকটজনক।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে সেই মোটরসাইকেলের কাগজপত্রে নাম থাকা মালিক হান্নানকে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

ঢাকা/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ