বরেণ্য অভিনেতা ধর্মেন্দ্র মারা গেছেন
Published: 24th, November 2025 GMT
বলিউডের বরেণ্য অভিনেতা ধর্মেন্দ্র মারা গেছেন। সোমবার (২৪ নভেম্বর) মুম্বাইয়ের বাসভবনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই অভিনেতা। তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই, ইন্ডিয়া টুডে এ খবর প্রকাশ করেছে।
ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর জানিয়ে বলিউড সিনেমার গুণী পরিচালক করন জোহর ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট দিয়েছেন। গুণী তারকার একটি ছবি পোস্ট করে এই নির্মাতা-সঞ্চালক লেখেন, “একটি যুগের অবসান… এক মহাতারার প্রস্থান… মূলধারার সিনেমার এক বীরের প্রতিচ্ছবি… অবিশ্বাস্য রূপবান এবং পর্দায় এক অনন্য রহস্যময় উপস্থিতি… তিনি ছিলেন এবং চিরকাল থাকবেন ভারতীয় সিনেমার এক সত্যিকারের জীবন্ত কিংবদন্তি… যিনি সিনেমার ইতিহাসের পাতায় চিরস্থায়ী হয়ে আছেন। সবচেয়ে বড় ব্যাপার অসাধারণ একজন মানুষ ছিলেন।”
আরো পড়ুন:
থমকে গেছে ক্রিকেটার-গায়কের বিয়ে: বাবার পর স্মৃতির হবু বর হাসপাতালে
থমকে গেল গায়ক পলাশ ও ক্রিকেটার স্মৃতির বিয়ের সানাই
শূন্যতার কথা জানিয়ে করন জোহর লেখেন, “আজ আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে বিশাল শূন্যতা তৈরি হলো… এমন এক শূন্যতা, যা কোনোদিন কোনোভাবে পূরণ হবে না… তিনি চিরকালই আমাদের একমাত্র ধর্মজি… আমরা আপনাকে ভালোবাসি, সদয় মহাশয়… আমরা আপনাকে ভীষণ মিস করব… আজ স্বর্গ ধন্য হলো… আপনার সঙ্গে কাজ করা ছিল আমার আশীর্বাদ…।”
অনেক দিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছেন ধর্মেন্দ্র। গত ১১ নভেম্বর তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়েছিল। যদিও সেই খবর সঠিক ছিল। তারপর থেকে বাড়িতে রেখে তার চিকিৎসা চলছিল। সোমবার (২৪ নভেম্বর) ফের তার মৃত্যুর খবর নেট দুনিয়ায় চাউর হয়। মূলত, আজ এ অভিনেতার বাড়িতে অ্যাম্বুলেন্স যাওয়ার পর এই গুঞ্জনের সূচনা। তাছাড়া শোবিজ অঙ্গনের অনেকে ধর্মেন্দ্রর বাড়িতে হাজির হয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত এ অভিনেতার মৃত্যুর খবর নিয়ে পরিবার থেকে কিছু জানানো হয়নি।
১৯৩৫ সালের ৮ ডিসেম্বর পাঞ্জাবের লুধিয়ানা জেলার সাহনেওয়াল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ধর্মেন্দ্র কেওয়াল কৃষণ দেওল। ছোটবেলায় সিনেমার পর্দা ছিল তার কাছে জাদুর জানালা। সেই গ্রাম থেকে, কাদামাখা রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তিনিও একদিন বড় পর্দায় আলো ছড়াবেন। ফিল্মফেয়ার ম্যাগাজিনের ‘ট্যালেন্ট কনটেস্ট’-এ জয়ী হন। ১৯৬০ সালে ‘দিল ভি তেরা হাম ভি তেরে’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন ধর্মেন্দ্র। প্রথম সিনেমা মুক্তির পরই নজর কাড়েন। তবে প্রকৃত সাফল্য আসে তারও কয়েক বছর পর। বিশেষ করে ‘শোলা আউর শবনম’ (১৯৬১), ‘বন্দিনী’ (১৯৬৩), ‘ফুল আউর পাথর’ (১৯৬৬) ও ‘সত্যকাম’ (১৯৬৯) সিনেমার মাধ্যমে।
ষাট ও সত্তরের দশক ছিল ধর্মেন্দ্রর সোনালি যুগ। শক্তিমত্তা, মাধুর্য ও সংবেদনশীলতার এমন মিশেল বলিউড আগে দেখেনি। ‘মেরা গাঁও মেরা দেশ’, ‘চুপকে চুপকে’, ‘ড্রিম গার্ল’, ‘শোলে’—প্রতিটি সিনেমায় ধর্মেন্দ্র হয়ে উঠেছেন ভারতীয় পুরুষত্বর নতুন সংজ্ঞা। শক্তির মধ্যে প্রেম, সাহসের মধ্যে কোমলতা—এই অনন্য ভারসাম্যই তাকে আলাদা করে দেয় সমসাময়িক নায়কদের থেকে।
ধর্মেন্দ্র ও হেমা মালিনীর প্রেমের গল্পই যেন একটি সিনেমা। ‘তুম হাসিন ম্যায় জওয়ান’ সিনেমার শুটিং সেটে তাদের দেখা হয়। তারপর ‘শোলে’, ‘সীতা আউর গীতা’, ‘ড্রিম গার্ল’ এর মতো একের পর এক সিনেমায় রোমান্সের পরত জমতে থাকে। তখন ধর্মেন্দ্রর সংসারে ছিলেন প্রথম স্ত্রী প্রকাশ কৌর। তবু হৃদয়ের টান থামেনি। সমাজের চোখ রাঙানি, সমালোচনা, বিতর্ক—সব পেরিয়ে ধর্মেন্দ্র ও হেমা এক হয়েছেন। ধর্মেন্দ্র বলেছিলেন, “আমি কাউকে আঘাত করিনি, আমি শুধু হৃদয়ের কথা শুনেছি।”
হেমা মালিনী তার আত্মজীবনীতে লিখেছেন, “তিনি একসঙ্গে শক্তিশালী ও কোমল। ঝড়ের মাঝেও পাহাড়ের মতো পাশে থেকেছেন।” তাদের দুই মেয়ে এষা ও অহনা আজও বলেন—বাবা এখনো মায়ের জন্য শায়রি লেখেন, ভালোবাসায় বলেন, “মেরি হেমা।” ধর্মেন্দ্রর দুই সংসারে ছয়জন সন্তান রয়েছে। তারা হলেন—পুত্র সানি ও ববি দেওল, কন্যা এষা, অহনা, বিজেতা ও অজিতা।
ধর্মেন্দ্রর অভিনয়ে অদ্ভুত মানবিকতা ছিল। ‘সত্যকাম’ সিনেমায় আদর্শবাদী যুবক থেকে শুরু করে ‘অনুপমা’ সিনেমার সংবেদনশীল লেখক—প্রতিটি চরিত্রেই জীবনের রঙ ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি। ‘শোলে’ সিনেমায় ‘বীরু’ চরিত্রে তার সংলাপ—“বসন্তি, ইন কুত্তো কে সামনে মৎ নাচনা” এখনো ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে অমর। কিন্তু পর্দার বাইরে তিনি একেবারে আলাদা মানুষ। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “স্রষ্টা আমাকে সব দিয়েছেন। কিন্তু আমি কখনো দাবিদার হইনি।” এটাই ধর্মেন্দ্রর জীবনের দর্শন, বিনয়, মহত্ত্ব।
খ্যাতির চূড়ায় থেকেও ধর্মেন্দ্র তার জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত মাটির মানুষ ছিলেন। লোনাভালার খামারে কাজ করেছেন, ট্র্যাক্টর চালিয়ে ভিডিও পোস্ট করেছেন ইনস্টাগ্রামে। ২০২৫ সালের দশেরা উপলক্ষে ভিডিও বার্তায় বলেন, “ভালো মানুষ হয়ে বাঁচুন, তবেই সাফল্য আপনার পিছু নেবে।” তার এই সরলতাই তাকে কোটি ভক্তের হৃদয়ে অমর করেছে।
ধর্মেন্দ্রর জীবন মানেই হিন্দি সিনেমার ক্রমবিবর্তনের প্রতিচ্ছবি। সাদা-কালো যুগের সামাজিক নাটক থেকে সত্তরের দশকের অ্যাকশন ব্লকবাস্টার—সবকিছুতেই তিনি ছিলেন সামনের সারিতে। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমা হলো— ফুল আউর পাথর (১৯৬৬), সত্যকাম (১৯৬৯), মেরা গাঁও মেরা দেশ (১৯৭১), শোলে (১৯৭৫), চুপকে চুপকে (১৯৭৫), দ্য বার্নিং ট্রেন (১৯৮০), লাইফ ইন আ মেট্রো (২০০৭), আপনে (২০০৭), রকি আউর রানি কি প্রেম কাহানি (২০২৪) প্রভৃতি। মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে তার অভিনীত ‘ইক্কিস’ সিনেমা। আগামী ডিসেম্বরে এটি মুক্তির কথা রয়েছে।
অভিনয়ের স্বীকৃতি স্বরূপ বেশ কিছু সম্মাননা জমা পড়েছে ধর্মেন্দ্রর ঝুলিতে। ১৯৯০ সালে ‘ঘায়েল’ সিনেমার জন্য ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন ধর্মেন্দ্র। ২০১২ সালে পদ্মভূষণ পুরস্কার পান। ২০০৪ সালে লোকসভায় বিকানেরের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তাছাড়া অসংখ্য আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন এই অভিনেতা। তবে পুরস্কার ধর্মেন্দ্র একবার বলেছিলেন—“আমার সবচেয়ে বড় পুরস্কার সাধারণ মানুষের হাসিমুখ।”
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র র ম ত য র খবর প রস ক র র জ বন
এছাড়াও পড়ুন:
বরেণ্য অভিনেতা ধর্মেন্দ্র মারা গেছেন
বলিউডের বরেণ্য অভিনেতা ধর্মেন্দ্র মারা গেছেন। সোমবার (২৪ নভেম্বর) মুম্বাইয়ের বাসভবনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই অভিনেতা। তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই, ইন্ডিয়া টুডে এ খবর প্রকাশ করেছে।
ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর জানিয়ে বলিউড সিনেমার গুণী পরিচালক করন জোহর ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট দিয়েছেন। গুণী তারকার একটি ছবি পোস্ট করে এই নির্মাতা-সঞ্চালক লেখেন, “একটি যুগের অবসান… এক মহাতারার প্রস্থান… মূলধারার সিনেমার এক বীরের প্রতিচ্ছবি… অবিশ্বাস্য রূপবান এবং পর্দায় এক অনন্য রহস্যময় উপস্থিতি… তিনি ছিলেন এবং চিরকাল থাকবেন ভারতীয় সিনেমার এক সত্যিকারের জীবন্ত কিংবদন্তি… যিনি সিনেমার ইতিহাসের পাতায় চিরস্থায়ী হয়ে আছেন। সবচেয়ে বড় ব্যাপার অসাধারণ একজন মানুষ ছিলেন।”
আরো পড়ুন:
থমকে গেছে ক্রিকেটার-গায়কের বিয়ে: বাবার পর স্মৃতির হবু বর হাসপাতালে
থমকে গেল গায়ক পলাশ ও ক্রিকেটার স্মৃতির বিয়ের সানাই
শূন্যতার কথা জানিয়ে করন জোহর লেখেন, “আজ আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে বিশাল শূন্যতা তৈরি হলো… এমন এক শূন্যতা, যা কোনোদিন কোনোভাবে পূরণ হবে না… তিনি চিরকালই আমাদের একমাত্র ধর্মজি… আমরা আপনাকে ভালোবাসি, সদয় মহাশয়… আমরা আপনাকে ভীষণ মিস করব… আজ স্বর্গ ধন্য হলো… আপনার সঙ্গে কাজ করা ছিল আমার আশীর্বাদ…।”
অনেক দিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছেন ধর্মেন্দ্র। গত ১১ নভেম্বর তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়েছিল। যদিও সেই খবর সঠিক ছিল। তারপর থেকে বাড়িতে রেখে তার চিকিৎসা চলছিল। সোমবার (২৪ নভেম্বর) ফের তার মৃত্যুর খবর নেট দুনিয়ায় চাউর হয়। মূলত, আজ এ অভিনেতার বাড়িতে অ্যাম্বুলেন্স যাওয়ার পর এই গুঞ্জনের সূচনা। তাছাড়া শোবিজ অঙ্গনের অনেকে ধর্মেন্দ্রর বাড়িতে হাজির হয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত এ অভিনেতার মৃত্যুর খবর নিয়ে পরিবার থেকে কিছু জানানো হয়নি।
১৯৩৫ সালের ৮ ডিসেম্বর পাঞ্জাবের লুধিয়ানা জেলার সাহনেওয়াল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ধর্মেন্দ্র কেওয়াল কৃষণ দেওল। ছোটবেলায় সিনেমার পর্দা ছিল তার কাছে জাদুর জানালা। সেই গ্রাম থেকে, কাদামাখা রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তিনিও একদিন বড় পর্দায় আলো ছড়াবেন। ফিল্মফেয়ার ম্যাগাজিনের ‘ট্যালেন্ট কনটেস্ট’-এ জয়ী হন। ১৯৬০ সালে ‘দিল ভি তেরা হাম ভি তেরে’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন ধর্মেন্দ্র। প্রথম সিনেমা মুক্তির পরই নজর কাড়েন। তবে প্রকৃত সাফল্য আসে তারও কয়েক বছর পর। বিশেষ করে ‘শোলা আউর শবনম’ (১৯৬১), ‘বন্দিনী’ (১৯৬৩), ‘ফুল আউর পাথর’ (১৯৬৬) ও ‘সত্যকাম’ (১৯৬৯) সিনেমার মাধ্যমে।
ষাট ও সত্তরের দশক ছিল ধর্মেন্দ্রর সোনালি যুগ। শক্তিমত্তা, মাধুর্য ও সংবেদনশীলতার এমন মিশেল বলিউড আগে দেখেনি। ‘মেরা গাঁও মেরা দেশ’, ‘চুপকে চুপকে’, ‘ড্রিম গার্ল’, ‘শোলে’—প্রতিটি সিনেমায় ধর্মেন্দ্র হয়ে উঠেছেন ভারতীয় পুরুষত্বর নতুন সংজ্ঞা। শক্তির মধ্যে প্রেম, সাহসের মধ্যে কোমলতা—এই অনন্য ভারসাম্যই তাকে আলাদা করে দেয় সমসাময়িক নায়কদের থেকে।
ধর্মেন্দ্র ও হেমা মালিনীর প্রেমের গল্পই যেন একটি সিনেমা। ‘তুম হাসিন ম্যায় জওয়ান’ সিনেমার শুটিং সেটে তাদের দেখা হয়। তারপর ‘শোলে’, ‘সীতা আউর গীতা’, ‘ড্রিম গার্ল’ এর মতো একের পর এক সিনেমায় রোমান্সের পরত জমতে থাকে। তখন ধর্মেন্দ্রর সংসারে ছিলেন প্রথম স্ত্রী প্রকাশ কৌর। তবু হৃদয়ের টান থামেনি। সমাজের চোখ রাঙানি, সমালোচনা, বিতর্ক—সব পেরিয়ে ধর্মেন্দ্র ও হেমা এক হয়েছেন। ধর্মেন্দ্র বলেছিলেন, “আমি কাউকে আঘাত করিনি, আমি শুধু হৃদয়ের কথা শুনেছি।”
হেমা মালিনী তার আত্মজীবনীতে লিখেছেন, “তিনি একসঙ্গে শক্তিশালী ও কোমল। ঝড়ের মাঝেও পাহাড়ের মতো পাশে থেকেছেন।” তাদের দুই মেয়ে এষা ও অহনা আজও বলেন—বাবা এখনো মায়ের জন্য শায়রি লেখেন, ভালোবাসায় বলেন, “মেরি হেমা।” ধর্মেন্দ্রর দুই সংসারে ছয়জন সন্তান রয়েছে। তারা হলেন—পুত্র সানি ও ববি দেওল, কন্যা এষা, অহনা, বিজেতা ও অজিতা।
ধর্মেন্দ্রর অভিনয়ে অদ্ভুত মানবিকতা ছিল। ‘সত্যকাম’ সিনেমায় আদর্শবাদী যুবক থেকে শুরু করে ‘অনুপমা’ সিনেমার সংবেদনশীল লেখক—প্রতিটি চরিত্রেই জীবনের রঙ ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি। ‘শোলে’ সিনেমায় ‘বীরু’ চরিত্রে তার সংলাপ—“বসন্তি, ইন কুত্তো কে সামনে মৎ নাচনা” এখনো ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে অমর। কিন্তু পর্দার বাইরে তিনি একেবারে আলাদা মানুষ। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “স্রষ্টা আমাকে সব দিয়েছেন। কিন্তু আমি কখনো দাবিদার হইনি।” এটাই ধর্মেন্দ্রর জীবনের দর্শন, বিনয়, মহত্ত্ব।
খ্যাতির চূড়ায় থেকেও ধর্মেন্দ্র তার জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত মাটির মানুষ ছিলেন। লোনাভালার খামারে কাজ করেছেন, ট্র্যাক্টর চালিয়ে ভিডিও পোস্ট করেছেন ইনস্টাগ্রামে। ২০২৫ সালের দশেরা উপলক্ষে ভিডিও বার্তায় বলেন, “ভালো মানুষ হয়ে বাঁচুন, তবেই সাফল্য আপনার পিছু নেবে।” তার এই সরলতাই তাকে কোটি ভক্তের হৃদয়ে অমর করেছে।
ধর্মেন্দ্রর জীবন মানেই হিন্দি সিনেমার ক্রমবিবর্তনের প্রতিচ্ছবি। সাদা-কালো যুগের সামাজিক নাটক থেকে সত্তরের দশকের অ্যাকশন ব্লকবাস্টার—সবকিছুতেই তিনি ছিলেন সামনের সারিতে। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমা হলো— ফুল আউর পাথর (১৯৬৬), সত্যকাম (১৯৬৯), মেরা গাঁও মেরা দেশ (১৯৭১), শোলে (১৯৭৫), চুপকে চুপকে (১৯৭৫), দ্য বার্নিং ট্রেন (১৯৮০), লাইফ ইন আ মেট্রো (২০০৭), আপনে (২০০৭), রকি আউর রানি কি প্রেম কাহানি (২০২৪) প্রভৃতি। মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে তার অভিনীত ‘ইক্কিস’ সিনেমা। আগামী ডিসেম্বরে এটি মুক্তির কথা রয়েছে।
অভিনয়ের স্বীকৃতি স্বরূপ বেশ কিছু সম্মাননা জমা পড়েছে ধর্মেন্দ্রর ঝুলিতে। ১৯৯০ সালে ‘ঘায়েল’ সিনেমার জন্য ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন ধর্মেন্দ্র। ২০১২ সালে পদ্মভূষণ পুরস্কার পান। ২০০৪ সালে লোকসভায় বিকানেরের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তাছাড়া অসংখ্য আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন এই অভিনেতা। তবে পুরস্কার ধর্মেন্দ্র একবার বলেছিলেন—“আমার সবচেয়ে বড় পুরস্কার সাধারণ মানুষের হাসিমুখ।”
ঢাকা/শান্ত