দেশে চলতি বছর ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ হয়েছিল গত অক্টোবরে। আর নভেম্বর শেষ হওয়ার তিন দিন বাকি থাকতেই আজ সেই আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেল। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭ জন আর এ সময় নতুন করে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৬৭ জন।

আজ বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৫৬৭ জন রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের হাসপাতালগুলোয় ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়েছেন ২১১ জন। দুই সিটির বাইরে ঢাকা বিভাগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৯২। সব মিলিয়ে এবার এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে ৯২ হাজার ৭৮৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর এখন পর্যন্ত এডিস মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩৭৭ জন।

এ মাসে ডেঙ্গু যে বেশি ছড়াবে, তা গত মাসেই আশঙ্কা করেছিলেন একাধিক গবেষক। এ মাসে ইতিমধ্যেই সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী ডিসেম্বরে ডেঙ্গু কিছু কমতে পারে, তবে তা খুব বেশি হারে কমবে না। আর ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার উপদ্রুবও খুব বেশি কমেনি এ মাসে, জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই তাঁদের ধারণা, ডেঙ্গুর আক্রমণ কমার জন্য আগামী বছরের জানুয়ারির শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।

বিশিষ্ট কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবীরুল বাশার আজ প্রথম আলোকে বলেন, এ মাসে এডিস মশার বিস্তার যতটা কমবে বলে ভাবা হয়েছিল, তা কমেনি। আর এর ফলে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। আগামী মাসেও ডেঙ্গুর সংক্রমণ যে উল্লেখযোগ্য হারে কমবে, তা মনে হয় না। ডেঙ্গুর আক্রমণ কমতে পারে আগামী জানুয়ারি মাসের শেষ দিক থেকে।

অধ্যাপক কবীরুল বাশার মনে করেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কিউলেক্স মশার উপদ্রব বাড়তে পারে। বৃষ্টি হওয়ার এক মাস পর সাধারণত এডিস মশার বিস্তার বাড়তে থাকে। চলতি মাসের শুরুর দিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হয়। সে অনুযায়ী, এ দফায় এডিসের বিস্তার কমতে আগামী মাসের অন্তত সাত তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্যবিদ মুশতাক হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, যদি এর মধ্যে আবার বৃষ্টি হয়, তবে ডেঙ্গুর প্রকোপ আবারও বাড়তে পারে।

এরই মধ্যে সাগরে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই এখন পর্যন্ত জানাচ্ছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদেরা।

২৪ ঘণ্টায় ৭ জনের মৃত্যু

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে ডেঙ্গুতে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে চারজনই মারা গেছেন ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার বিভিন্ন হাসপাতালে। এর মধ্যে দক্ষিণ সিটির ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজন এবং মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়। উত্তর সিটির কোভিড–১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালে মারা গেছেন একজন। বাকি তিনজনের মধ্যে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজন এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়।

২০০০ সালে ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ওই বছর ৫ হাজার ৫৫১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এর মধ্যে মারা যান ৯৩ জন। ঘটনাটি সাধারণ মানুষের কাছে নতুন ছিল। ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত ও মারা যান ২০২৩ সালে। সে বছর আক্রান্ত হয়েছিলেন তিন লাখের বেশি মানুষ, মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জন র ম ত য হয় ছ ল ৭ জন র ক রমণ

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনার দুই ব্যাংক লকার থেকে ৯ কেজি ৭০৭ গ্রাম স্বর্ণ উদ্ধার

দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী পুনঃযাচাইয়ের অংশ হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদের নামে থাকা দুটি ব্যাংকের তিনটি লকার খুলে ৯ কেজি ৭০৭ গ্রাম (৮৩২ ভরি) স্বর্ণ উদ্ধার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার (২৬ নভেম্বর) দুদক প্রধান কার্যালয়ে নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

আরো পড়ুন:

হাসিনাকে ফেরাতে আগের চিঠির উত্তর পাইনি, এবার পাব: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

শেখ হাসিনা, রেহানা, টিউলিপসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে রায় ১ ডিসেম্বর

দুদক জানায়, দুদকের উপ-পরিচালক (বিশেষ অনু. ও তদন্ত-১) মো. মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত অনুসন্ধান দল ২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে লকার খোলার অনুমতির আবেদন করেন। আদালত একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বাংলাদেশ ব্যাংকের বুলিয়ন শাখার একজন স্বর্ণ বিশেষজ্ঞ, এনবিআরের একজন কর গোয়েন্দা ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিআইসি) মনোনীত দুই কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে লকার খোলার নির্দেশ প্রদান করেন।

পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) পূবালী ব্যাংক পিএলসির মতিঝিল কর্পোরেট শাখা ও অগ্রণী ব্যাংক পিএলসির প্রিন্সিপাল শাখায় থাকা মোট তিনটি লকার খোলা হয়। এর মধ্যে পূবালী ব্যাংকের লকার নম্বর ১২৮-গ্রাহক শেখ হাসিনার নামে- থেকে একটি খালি ছোট পাটের ব্যাগ পাওয়া যায়।

অন্যদিকে, গ্রাহক শেখ হাসিনা ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামে থাকা অগ্রণী ব্যাংকের লকার (নম্বর ৭৫১/বড়/১৯৬) থেকে আনুমানিক ৪ হাজার ৯২৩ দশমিক ৬০ গ্রাম স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করা হয়। একই ব্যাংকের গ্রাহক শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সিদ্দিকীর নামে থাকা লকার (নম্বর ৭৫৩/বড়/২০০) থেকে পাওয়া যায় ৪ হাজার ৭৮৩ দশমিক ৫৬ গ্রাম স্বর্ণালঙ্কার।

দুদক জানায়, উদ্ধারকৃত স্বর্ণালঙ্কারসমূহ লকারে সংরক্ষিত বর্ণনা ও লিখিত চিরকুট অনুযায়ী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের— শেখ রেহানা সিদ্দিকী, সাইমা ওয়াজেদ পুতুল, সজীব ওয়াজেদ জয় ও ববি-হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রাথমিক ইনভেন্টরি তালিকা প্রস্তুতের পর সংশ্লিষ্ট শাখা ব্যবস্থাপকদের জিম্মায় মালামাল হস্তান্তর করা হয়েছে।

দুদক বলেছে, ইনভেন্টরি তালিকা পর্যালোচনা, মালিকানা সুনির্দিষ্টকরণ ও স্বর্ণকারের মাধ্যমে স্বর্ণের মূল্য নির্ধারণ শেষে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মালিকানা ও আইনগত দায়-দায়িত্ব নিরূপণ করা হবে।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাহান্নামের আগুন যাদের দিয়ে প্রথম জ্বালানো হবে
  • মিস ইউনিভার্সের মালিকদের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও মাদক পাচারের অভিযোগ
  • জ্ঞান চর্চার ছয় স্তর: ইবনুল কাইয়িমের দিকনির্দেশনা
  • ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই...
  • সাফল্য তোমাকে অসুখীও করে তুলতে পারে: ইয়ামালকে পরামর্শ নাদালের
  • নরসিংদীতে ২২ ঘণ্টার ব্যবধানে ট্রেন দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত
  • ঢাকায় বিএনপির প্রার্থী সানজিদা ইসলামের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার মামলা
  • রাঙামাটিতে কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে অটোরিকশার সংঘর্ষে একজনের মৃত্যু
  • শেখ হাসিনার দুই ব্যাংক লকার থেকে ৯ কেজি ৭০৭ গ্রাম স্বর্ণ উদ্ধার