মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় মেঘনা নদীতে দুই স্পিডবোটের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। একজন নিখোঁজ আছেন। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের মেঘনা নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের মামুন ব্যাপারীর ছেলে অদুদ ব্যাপারী (৩৫) ও একই এলাকার মো.

বাবুল (৩৮)। নিহত আরেকজন ও নিখোঁজ ব্যক্তির নাম–পরিচয় জানা যায়নি।

নৌ পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিন রাতে গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নে মেঘনা নদী থেকে নয়ন ও পিয়াসের লোকজন ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু লুট করে। বালু উত্তোলনের সময় তারা নিজস্ব কয়েকটি ট্রলার দিয়ে মেঘনা নদীর বিভিন্ন অংশে মহড়া দেন। ধারণা করা হচ্ছে, স্পিডবোট দুটি বালুমহালের অবৈধ বালু উত্তোলনে মহড়ার কাজ করছিল। অন্ধকার ও কুয়াশার কারণে একটি স্পিডবোট অন্যটিকে দেখতে না পাওয়ার কারণে সংঘর্ষ হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয় লোকজন ও জেলেরা সংঘর্ষের শব্দ পেয়ে ঘটনাস্থলে যান। সেখান থেকে বেশ কয়েকজনকে উদ্ধার করে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান তাঁরা।

গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সায়মা আক্তার শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাত পৌনে ১০টার দিকে ৩ জনকে আমাদের হাসপাতালে আনা হয়। তাঁদের মধ্যে দুজন মৃত ছিলেন। আবদুল হালীম (৩৪) নামে অন্য একজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে গুরুতর অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।’

গজারিয়ার নৌ পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ পরিদর্শক মো. মাহাবুব আলম বলেন, ‘আমরা যত দূর জানতে পেরেছি, রাতে কুয়াশার কারণে ওই দুটি স্পিডবোট চলাচলের সময় একটি আরেকটিকে দেখতে পায়নি। এতে তাদের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজন মারা গেছেন। একজন নিখোঁজ আছেন। আহতও আছেন দু-একজন। তবে ওই দুটি স্পিডবোট রাতে এখানে কী করছিল, কোথা থেকে এসেছে, বিস্তারিত জানা যায়নি।’

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে সৌদিতে বৈঠকে বসবেন ট্রাম্প-পুতিন

ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে সৌদি আরবে ‘শান্তি আলোচনায়’ অংশ নেবেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আজ বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

এর আগে গতকাল বুধবার পুতিন ও ট্রাম্প ফোনে কথা বলেন। পরে ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইউক্রেন নিয়ে শান্তি আলোচনার জন্য তিনি শিগগির রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। এই বৈঠক সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত হবে।

হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের ফিরে আসার পর এটা ছিল দুই নেতার ‘দ্বিতীয় আনুষ্ঠানিক ও স্বীকৃত’ যোগাযোগের ঘটনা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, পুতিনের সঙ্গে তার দীর্ঘ ও ফলপ্রসূ ফোনালাপ হয়েছে।

তিনি বলেন, আলোচনায় ইউক্রেন, মধ্যপ্রাচ্য, জ্বালানি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ডলার ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ট্রাম্প ট্রুথে লিখেছেন, ‘আমরা দু’জনেই একমত হয়েছি যে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে যে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, তা বন্ধ করতে চাই।’ 

তিনি বলেন, আমরা উভয়েই এতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। কিন্তু প্রথমেই আমরা একসঙ্গে কাজ করতে এবং একে অপরের দেশ পরিদর্শন করতে সম্মত হয়েছি।

ইতোমধ্যে দুই নেতা তাদের দলকে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটানোর জন্য আলোচনা শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। এই যুদ্ধ প্রায় তিন বছর আগে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল।

ট্রাম্প বলেন, আর কোনো জীবনহানি হওয়া উচিত নয়। আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনকে তার সময় ও প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ জানাই এবং গতকাল মুক্তি পাওয়া মার্ক ফোগেলের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। তিনি একজন অসাধারণ মানুষ, যাকে আমি গত রাতে হোয়াইট হাউসে ব্যক্তিগতভাবে স্বাগত জানিয়েছি।

এই ফোনালাপটি মার্ক ফোগেলের মুক্তির একদিন পরেই অনুষ্ঠিত হয়। ফোগেল একজন মার্কিন নাগরিক, যিনি রাশিয়ায় তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্দি ছিলেন। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র আলেকজান্ডার ভিনিক-কে মুক্তি দিতে পারে। যিনি গত বছর অর্থপাচার ষড়যন্ত্রের দায় স্বীকার করেছিলেন। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি পুতিনের সঙ্গে তার যোগাযোগের বিষয়ে খোলাসা করেননি।

ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারের সময় ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন যে, প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার আগেই তিনি এই যুদ্ধ বন্ধ করতে পারবেন। পুতিনের সঙ্গে এই ফোনালাপ ইঙ্গিত দিচ্ছে যে শান্তি আলোচনা আরও গুরুতর হতে পারে।

ট্রাম্প ও তার মিত্ররা ইউক্রেনে মার্কিন সহায়তা অব্যাহত রাখার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন এবং তিনি বলেছেন, যে ইউরোপের উচিত কিয়েভকে সমর্থনে আরও বড় ভূমিকা নেওয়া। পাশাপাশি, গত মাসে ট্রাম্প মস্কোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন। যদি তারা যুদ্ধবিরতির আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানায়।

এদিকে সহ-রাষ্ট্রপতি জেডি ভ্যান্স ইউরোপের মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিতে যাচ্ছেন এবং সেখানে তিনি জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট ইউক্রেনে গিয়ে জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করবেন। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদে আরও বেশি প্রবেশাধিকার পেতে চায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নোয়াখালীতে ৫ দিনে আ. লীগের ৫৬ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
  • রেল স্টেশনে প্রথম দেখা, লং ডিসটেন্স ঝড় তুলেছিল অলকার প্রেম জীবনে
  • বিজয়নগরে প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে শিশুর মৃত্যু
  • জীবনানন্দ দাশ সারাবিশ্বেই গুরুত্বপূর্ণ
  • সেনাসদস্যকে মারধর করায় রেলওয়ের ৩ কর্মচারী আটক
  • এনসিটিবি ভবনের সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় আরও একজন গ্রেপ্তার
  • ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ
  • সুনাগরিক, ভারসাম্যপূর্ণ শিক্ষা ও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়
  • ৫ আগস্টের ‘মার্চ অন ঢাকা’ ঠেকাতে যেভাবে পরিকল্পনা করেছিল ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা সরকার
  • ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে সৌদিতে বৈঠকে বসবেন ট্রাম্প-পুতিন