মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে ফেরার পথে প্রাণ গেল মায়ের
Published: 15th, January 2025 GMT
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে ফেরার পথে ট্রাকচাপায় চম্পা বেগম (৫৩) নামের এক নারী নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে মাঝকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কে বনমালীপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত চম্পা বেগম উপজেলার রুপাপাত ইউনিয়নের সুতালীয়া গ্রামের মনু কাজীর স্ত্রী। বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম রসুল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
শ্রীনগরে মোটরসাইকেল-অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহত ১
পঞ্চগড়ে ট্রাক্টর উল্টে চালকের মৃত্যু
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত রাতে চম্পা বেগম মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে নিজ বাড়ি ফিরছিলেন। পথে একটি ট্রাক তাক চাপা দিয়ে পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
ওসি বলেন, ‘‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে, ঘাতক ট্রাকটি আটক করা সম্ভব হয়নি। নিহতের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ না থাকায় এবং আবেদনের ভিত্তিতে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।’’
ঢাকা/তামিম/রাজীব
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক দ র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
পৌর কর্তৃপক্ষের জবাবদিহি নিশ্চিত করুন
‘উন্নয়ন প্রকল্প’ যে অনেক সময় সুপরিকল্পিত দখলদারির অংশ হতে পারে, তার আরেক উদাহরণ দেখা গেল যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায়। সেখানে চিত্রা নদীতে দখলের নেতৃত্ব দিচ্ছে কোনো ভূমিদস্যু বা অপরাধ চক্র নয়; এর নেতৃত্ব দিচ্ছে পৌরসভা। অর্থাৎ রাষ্ট্রের টাকায়, রাষ্ট্রের নামেই, রাষ্ট্রের আইন ভেঙে রাষ্ট্রীয় সম্পদ দখলের এক খারাপ নজির স্থাপন করা হচ্ছে।
ভূমি ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়াল, ১৯৯০ স্পষ্ট ভাষায় বলছে, যে স্থান শুষ্ক মৌসুমে চর পড়ে এবং বর্ষায় পানিতে তলিয়ে যায়, তা নদীতট বা ফোরশোর। এই ভূমির ওপর কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান কিংবা দপ্তরেরই কোনো অধিকার নেই। এখানে কোনো ভবন তোলা তো দূরের কথা, সীমানার খুঁটি বসানোরও আইনগত সুযোগ নেই। অথচ এ নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করে চিত্রা নদীর বুকেই একের পর এক স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে—পৌরসভা ভবন, শৌচাগার, দলীয় কার্যালয়, দোকান, স্মৃতিস্তম্ভ। আর এবার সেই দখলকে পাকাপোক্ত করতে নদীর ভেতর কংক্রিটের সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করছে বাঘারপাড়া পৌরসভা।
যে পৌরসভার জনগণের সেবা দেওয়ার কথা, সেই পৌরসভাই যদি নদী দখল করে, তাহলে যে বার্তা যায়, তা হলো আইন দুর্বল মানুষের জন্য; শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান চাইলেই তা অমান্য করতে পারে। এ বার্তা পরিবেশ ধ্বংসের চেয়েও ভয়াবহ। ২০২০ সালে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন যে তালিকা প্রকাশ করেছিল, সেখানে স্পষ্টভাবে চিত্রা নদী দখলের চিত্র উঠে আসে। সেখানে দখলদার হিসেবে পৌরসভার নামও রয়েছে। এরপরও যদি নদীর ভেতর সীমানাপ্রাচীর দাঁড় করানো হয়, তবে সেটি কেবল আইন ভঙ্গ নয়, এটি আদালত ও কমিশনের প্রতি প্রকাশ্য চ্যালেঞ্জ।
আরেক দিকে সরকারেরই পানি উন্নয়ন বোর্ড জানাচ্ছে, ৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে চিত্রা নদী পুনঃখনন করা হবে। অর্থাৎ এক হাতে নদী উদ্ধারের প্রকল্প, আর অন্য হাতে নদী দখলের অবকাঠামো। এ যেন রাষ্ট্রের দুই হাতেই একে অপরের গলা টিপে ধরা! এই দ্বিচারিতা কেবল হাস্যকর নয়, এটি সুশাসনের কফিনে পেরেক ঠোকার শামিল।
স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তার বক্তব্য, ‘আমি নতুন এসেছি, জানতাম না।’ এটি কোনো গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা হতে পারে না।
চিত্রা নদীর ভেতরে চলমান সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। ইতিমধ্যে যে অংশ নির্মিত হয়েছে, তা দ্রুত ভেঙে ফেলতে হবে। পৌরসভার জড়িত কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। নদী দখলের সঙ্গে যুক্ত সব স্থাপনার তালিকা প্রকাশ ও উচ্ছেদ পরিকল্পনা শুরু করতে হবে। আমরা আশা করি, নদী রক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত স্থানীয় প্রশাসন আশু পদক্ষেপ নেবে।