সমুদ্রের গভীরে দীর্ঘদিন থাকার জন্য তৈরি হচ্ছে ঘাঁটি, কেন
Published: 6th, February 2025 GMT
সমুদ্রের গভীরেও আছে রহস্যময় এক জগৎ। আর তাই তো দীর্ঘদিন ধরেই সমুদ্রের গভীরে থাকা নানা ধরনের রহস্য ভেদ করার চেষ্টা করে যাচ্ছে মানুষ। কিন্তু সমুদ্রে ডুব দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কি সব রহস্য জানা সম্ভব? মোটেও তা নয়। এ সমস্যা সমাধানে এবার সমুদ্রের গভীরে স্থায়ী ঘাঁটি তৈরির পরিকল্পনা করেছে যুক্তরাজ্যের ‘ডিপ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
ডিপের তথ্যমতে, নতুন এ পরিকল্পনার আওতায় সমুদ্রপৃষ্ঠের ২০০ মিটার নিচে মানুষের বসবাসের জন্য একটি স্থায়ী ঘাঁটি স্থাপন করা হবে। মহাকাশে থাকা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের (আইএসএস) আদলে দীর্ঘদিন বসবাসের উপযোগী করে তৈরি করা হবে ঘাঁটিটি। প্রাথমিকভাবে ছয়জন ব্যক্তি ঘাঁটিটিতে বসবাস করে বিভিন্ন ধরনের গবেষণা করতে পারবেন। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৭ সালের মধ্যে এই ঘাঁটিতে মানুষ বসবাস শুরু করবে।
আরও পড়ুনপৃথিবীর গভীরে হিমালয়ের চেয়ে শত গুণ বড় দুটি পর্বতের খোঁজ মিলেছে২৫ জানুয়ারি ২০২৫সমুদ্রের গভীরে ঘাঁটি তৈরির বিষয়ে ডিপের প্রেসিডেন্ট স্টিভ ইথারটন জানিয়েছেন, ‘এটা কোনো পণ্য নয়, আমরা আসলে একটি সিস্টেম তৈরি করতে যাচ্ছি। আমরা পানির নিচে বসবাসের জন্য আবাসস্থল ও পরবর্তী প্রজন্মের পোশাক তৈরিসহ বিভিন্ন কাজ করছি। সমুদ্রের গভীরে কী আছে তা বোঝার জন্য এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমরা অনেকটা মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার আদলে কাজ করব।’
দুই বছর ধরে ইউরোপের সর্ববৃহৎ থ্রিডি প্রিন্টিং মেশিনের মাধ্যমে সমুদ্রের গভীরে স্থাপন উপযোগী ঘাঁটির নকশা তৈরি করা হয়েছে। এই ঘাঁটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সেন্টিনেল’। সমুদ্রের মহাদেশীয় ঢাল ও সূর্যের আলো পৌঁছানোর এপিপেলাজিক অঞ্চলে স্থাপন করা হবে এই ঘাঁটি।
সূত্র: এনডিটিভি
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপির মনোনয়ন পেলেন কৃষক দলের নেতা নাসির, অন্য পক্ষে অসন্তোষ
বোয়ালমারী, আলফাডাঙ্গা ও মধুখালী উপজেলা নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-১ আসনে অবশেষে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ও এই আসনের সাবেক স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য খন্দকার নাসির উল ইসলাম।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে চারটায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আগে স্থগিত করা ৬৩টি আসনের মধ্যে ৩৫টি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। ওই তালিকায় ফরিদপুর-১ আসনে মনোনয়ন পান খন্দকার নাসির উল ইসলাম।
গত ৩ নভেম্বর প্রথম দফায় বিএনপি দেশের ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে ২৬৭টিতে দলীয় মনোনয়ন ঘোষণা করে। সে সময় ফরিদপুরের চারটি আসনের মধ্যে তিনটিতে প্রার্থী ঘোষণা দেওয়া হলেও ফরিদপুর-১ আসনটি স্থগিত রাখা হয়।
এ আসনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন বিএনপির অন্তত সাতজন নেতা। তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল খন্দকার নাসির ও বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি শামসুদ্দীন মিয়ার মধ্যে।
গত ২৩ অক্টোবর ফরিদপুর-১ আসনভুক্ত ৩টি উপজেলা ও ৩টি পৌরসভায় ১০১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে জেলা বিএনপি। এসব কমিটিতে খন্দকার নাসিরের সমর্থকদের—যাঁদের অনেকেই অতীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন, তাঁদের প্রাধান্য দিয়ে ‘বিএনপির নামে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসন’ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন শামসুদ্দীন মিয়ার সমর্থকরা।
ঘোষিত কমিটি বাতিল এবং দলীয় মনোনয়নের দাবিতে নাসির ও শামসুদ্দীনের সমর্থকেরা মিছিল, সড়ক অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন। সবশেষে ৭ নভেম্বর বোয়ালমারী উপজেলা সদরে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় পাল্টাপাল্টি দুটি মামলায় খন্দকার নাসির ও শামসুদ্দীনকে এক নম্বর আসামি করা হয়। সংঘর্ষের পরও দুই নেতা গত বুধবার পর্যন্ত দলীয় মনোনয়ন দাবি করে বিভিন্ন মিছিল-সমাবেশ চালিয়ে যান।
দলের মনোনয়ন পাওয়ার পর খন্দকার নাসির উল ইসলাম বলেন, ‘বিগত স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে জোরালো ভূমিকা রাখায় আমার একাধিকবার মামলা হয়েছে, তারপরও আমি মাঠ ছাড়িনি। এ মনোনয়ন দিয়ে দল আমার মূল্যায়ন যথাযথ করেছে। দলের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।’
তবে ক্ষোভ প্রকাশ করে শামসুদ্দীন মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, এ তিন উপজেলার মূল জাতীয়তাবাদী শক্তিকে পাশ কাটিয়ে আওয়ামী লীগ, বিএনএম, জাতীয় পার্টি, জামায়াত-শিবিরসহ বিভিন্ন দলের নেতাদের ভাগিয়ে আনা লোকজন দিয়ে দল করা খন্দকার নাসিরকে মনোনয়ন দিয়ে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করা হয়েছে। তাঁর কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই, এলাকায় তাঁর কোনো ভোটও নেই। যারা তিল তিল করে বিএনপি করেছে, দলকে আজকের পর্যায়ে এনেছে, তাদের মূল্যায়ন করা হয়নি। সমর্থকদের নিয়ে বসে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
এসব অভিযোগ সম্পর্কে খন্দকার নাসির উল ইসলাম বলেন, ‘এ রকম ঘটনা থাকলে তারা প্রমাণ দিক। তবে এখন বিরোধ কিংবা জেদাজেদির সময় নয়। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে আমাদের একত্র হয়ে কাজ করতে হবে।’