লক্ষ্মীপুরে তাহেরপুত্র সালাহ উদ্দিনের পরিত্যক্ত বাড়ি এক্সকাভেটর দিয়ে ভাঙা হলো
Published: 6th, February 2025 GMT
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি এ কে এম সালাহ উদ্দিনের পরিত্যক্ত বাড়ি এক্সকাভেটর(খনন যন্ত্র) ভেঙে ফেলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে শহরের তমিজ মার্কেট এলাকার পিংকি প্লাজা নামের বাড়িটি ভাঙচুর করেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।
সালাহ উদ্দিন লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সাবেক আলোচিত মেয়র প্রয়াত আবু তাহেরের ছেলে। শেখ হাসিনার পতনের আগের দিন গত ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতা ওই বাড়িতে আগুন দেন। ওই দিন সালাহ উদ্দিন ও তাঁর পরিবারের লোকজন লক্ষ্মীপুর শহর থেকে পালিয়ে যান। এর পর থেকে চারতলা বাড়িটি পরিত্যক্ত। সালাহ উদ্দিন সাদ আল আফনান, সাব্বির হোসেনসহ চার শিক্ষার্থী হত্যা মামলার প্রধান আসামি। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলার মামলায় এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা শহরের তমিজ মার্কেট এলাকায় জড়ো হন। একপর্যায়ে প্রথমে ভবনের বাইরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। পরে প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। বাড়ির দেয়াল, জানালাসহ বিভিন্ন কাঠামো হাতুড়ি ও লোহার শাবল দিয়ে ভেঙে দেন বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা। ভাঙচুরের একপর্যায়ে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বাড়িটিতে। এরপর এক্সেকেভেটর দিয়ে বাড়িটি ভাঙা হয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত শিক্ষার্থী সাইফুর রহমান ও সজীব হোসেন জানান, তাহের ও টিপু বাহিনীর লোকেদের দ্বারা অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এলাকার মানুষ। এসব কারণে তাঁদের প্রতি যে ক্ষোভ জমেছিল, আজকের হামলা-ভাঙচুর ওই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। এই হামলা-ভাঙচুরে সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা অংশগ্রহণ করেছেন। ভবিষ্যতেও যদি কোনো সরকার রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গিয়ে ফ্যাসিবাদী আচরণ করে, তাদের পরিণতিও একই রকম হবে।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার এক কিশোর ১২ দিন পর মারা গেছে। নিহত কিশোরের নাম মো. শিহাব (১৭)। সে উপজেলার বসন্তপুর গ্রামের মিজানুর রহমান রিপনের ছেলে। চলতি বছর এসএসসি পাস করেছে সে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে ছিল শিহাব। শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে তার মৃত্যু হয়।
এর আগে গত ২০ আগস্ট রাত আটটার দিকে তাকে নির্মম নির্যাতন করা হয়। রিপনের এক ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে শিহাব ছিল সবার বড়। প্রচণ্ড মারধরের পর থেকেই সে অচেতন অবস্থায় ছিল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিহাব গত ২০ অক্টোবর পার্শ্ববর্তী বান্দুড়িয়া এলাকায় তার প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে যায়। সে তেঁতুলতলা বাঁকের কাছে গেলে তার প্রেমিকার আত্মীয়-স্বজনেরা তাকে তাড়া দেয়। শিহাব নিজেকে রক্ষা করতে রাতের অন্ধকারে মাঠের মধ্যে দৌড় দেয়। একপর্যায়ে শিহাব দিক হারিয়ে অন্ধকারের মধ্যে পুকুরে ঝাঁপ দেয়।
সেসময় কিছু ব্যক্তিও পুকুরে নেমে শিহাবকে মারধর শুরু করে। এরপর তাকে পুকুর থেকে তুলে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটান।
একপর্যায়ে শিহাব জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে ঢলে পড়ে। এরপর লাঠি দিয়ে শিহাবকে আরো পিটিয়ে ফেলে রেখে যায় প্রেমিকার আত্মীয়রা। পরে স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন। মাথায় গুরুত্বর আঘাত থাকায় তার জ্ঞান ফেরেনি। তাই তাকে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল।
শিহাবকে নির্যাতনের ঘটনায় তার বাবা রিপন গত ২৪ অক্টোবর রাতে রতন আলী (৩২), মো. কানন (২২), সুজন আলী (৩২), ইয়ার উদ্দীন (৩২), মো. শরীফ (৩৫), মো. রাব্বি (২৫), মো. হালিম (৩০) এবং মো. কলিম (৩২) নামের নয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরো আট থেকে নয়জনকে অজ্ঞাত আসামি করে গোদাগাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন। তবে শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুর পর্যন্ত এদের কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি থানা-পুলিশ।
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে শিহাব হামলার শিকার হয়েছিল। তার মৃত্যুর খবর শুনেছি। ময়নাতদন্তের পর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। হামলার ঘটনায় আগে করা মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তর হবে। আসামিদের গ্রেপ্তারে সব ধরনের চেষ্টা চলছে।”
ঢাকা/কেয়া/এস