বেলাবতে নারীর কাদামাখা লাশ উদ্ধার, মানসিক ভারসাম্যহীন বলছে পরিবার
Published: 19th, February 2025 GMT
নরসিংদীর বেলাব উপজেলায় একটি সেতুর নিচ থেকে কাদামাখা অবস্থায় এক নারীর (৫৮) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার খামারের চর সেতুর নিচ থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।
ওই নারী রায়পুরার বাসিন্দা। স্বজনদের দাবি, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ও মৃগীরোগে আক্রান্ত ছিলেন। প্রায় ২০ বছর ধরে বাড়িতে না থেকে পথে পথে ঘুরে বেড়াতেন।
পুলিশ, স্বজন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেলে ঘটনাস্থলে ওই নারীর লাশ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় লোকজন। এ সময় তাঁর শরীরে কোনো কাপড়চোপড় ছিল না এবং কাদামাখা ছিল। পরে খবর পেয়ে সন্ধ্যার দিকে ঘটনাস্থল থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল ও আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ওই নারীকে শনাক্ত করেন স্থানীয় ব্যক্তিরা। পরে তাঁর ভাই ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন। রাতেই সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর লাশ নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
ওই নারীর ভাইয়ের ভাষ্য, ছোটবেলা থেকেই তাঁর বোন মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। প্রায় ২০ বছর ধরে বাড়িতে থাকতেন না, পথে পথে ঘুরে বেড়াতেন। তাঁর মৃগীরোগ ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, কাদাপানিতে নেমে তাঁর বোন মৃগীরোগে আক্রান্ত হন। এরপর আর ওপরে উঠে আসতে পারেননি।
বেলাব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মাহবুবুর রহমান জানান, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে, ওই নারী হত্যাকাণ্ডের শিকার হননি। প্রাথমিকভাবে তাঁর শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে পরিবারের সদস্যদের কোনো অভিযোগ নেই। মৃত্যুর কারণ ময়নাতদন্ত শেষে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ওই ন র
এছাড়াও পড়ুন:
‘কবর’ কবিতার শতবর্ষ পূর্তি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক
পল্লিকবি জসীমউদ্দীনের ‘কবর’ কবিতা বাংলা সাহিত্যের এক অবিস্মরণীয় সৃষ্টি। ১৯২৫ সালে লেখা অমর এ কবিতার শতবর্ষ এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। ‘কবর’ কবিতা তৎকালীন সময়ের সমাজের চিত্রকে তুলে ধরেছে।
‘কবর’ কবিতার শতবর্ষ উপলক্ষে প্রকাশিত ‘শতবর্ষে কবর’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে এ কথা বলেন বক্তারা। শনিবার বিকেলে রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মিলনায়তনে ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
‘শতবর্ষে কবর’ গ্রন্থটি সম্পাদনা করেছেন মফিজ ইমাম মিলন। ৪৮ জন লেখকের লেখা নিয়ে প্রকাশিত এই গ্রন্থ প্রকাশ করেছে নয়নজুলি প্রকাশনাী।
অনুষ্ঠানে অতিথিদের বক্তব্যে উঠে আসে জসীমউদ্দীনের অবিস্মরণীয় সৃষ্টি ‘কবর’ কবিতার নানান প্রসঙ্গ। কবিতাটি ১৯২৫ সালে ‘গ্রাম্য কবিতা’ পরিচয়ে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল কল্লোল পত্রিকার তৃতীয় বর্ষ তৃতীয় সংখ্যায়।
আলোচকেরা বলেন, ‘কবর’ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই বিপুল সাড়া জাগিয়েছিল। কবিতাটি দীনেশচন্দ্র সেন, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল। এমনকি ‘কবর’ পড়ে দীনেশচন্দ্র সেন ‘অ্যান ইয়াং মোহামেডান পোয়েট’ শিরোনামে একটি আলোচনাও লিখেছিলেন ফরওয়ার্ড পত্রিকায়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল (সি আর) আববার বলেন, ‘কবর’ কবিতার শত বছর পূর্তির ঘটনা একটা গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। কবিতাটির শতবর্ষ নিয়ে বই প্রকাশ ব্যতিক্রমী প্রয়াস।
এ সময় শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, প্রতিটি শহরে ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের মতো সংগঠন থাকা উচিত। একটা বৃহত্তর পরিবারের মতো কাজ করে তারা। তিনি বলেন, এ ধরনের নাগরিক সমাজ রাষ্ট্রের বাইরে থেকে দেশ ও সমাজ সম্পর্কে ভাবে। এটা বিশাল শক্তি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফরিদপুর ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জালাল আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক আন্দালিব রাশদী, পক্ষিবিশারদ ইনাম আল হক, কথাসাহিত্যিক ফারুক মঈন উদ্দীন। গবেষক, সাংবাদিক ও ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মফিজ ইমাম মিলনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন নয়নজুলি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আলী খান, অধ্যাপক এম এ সামাদ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ কাকলী মুখোপাধ্যায়, ডেইলি স্টারের সাহিত্য সম্পাদক ইমরান মাহফুজ প্রমুখ।
‘শতবর্ষে কবর’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠান শুরু হয় ‘কবর’ কবিতা আবৃত্তির মধ্য দিয়ে। স্বাগত বক্তব্য দেন ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক আলতাফ হোসেন।