রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করা যাবে আইন মন্ত্রণালয়ে
Published: 20th, April 2025 GMT
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হওয়া রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা যাবে। রোববার সচিবালয়ে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করার বিষয়ে মন্ত্রণালয় পর্যায়ে গঠিত কমিটির ১১তম সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের মধ্যে হওয়া রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলার শিকার যে কোনো ব্যক্তি এখন থেকে সরাসরি আইন মন্ত্রণালয়ে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করতে পারবেন। আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর বরাবর এই আবেদন করতে হবে। দরখাস্তের সঙ্গে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট মামলার এজাহার ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অভিযোগপত্রের সত্যায়িত অনুলিপি দিতে হবে। রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের চলমান কার্যক্রমকে বেগবান করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরও ৭২৪টি মামলা প্রত্যাহার করার সুপারিশ করা হয়। এর আগে বিভিন্ন সভায় এই কমিটি ৭ হাজার ৫৭০টি মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করে। এ নিয়ে আজ পর্যন্ত মোট ৮ হাজার ২৯৪টি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে তারা।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
১১ মাসে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ঘিরে ৭৩টি ঘটনার শিকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়: এইচআরসিবিএম
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত সময়ে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ঘিরে সংঘটিত ৭৩টি ঘটনার শিকার হয়েছে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করেছে হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনরিটিজ (এইচআরসিবিএম)।
সোমবার রাজধানীর বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে (ক্র্যাব) এক সংবাদ সম্মেলনে এইচআরসিবিএম এই তথ্য তুলে ধরে। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি উল্লেখ করেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক আইনজীবী লাকী বাছাড়। ভুক্তভোগীদের আবেদন এবং প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে এইচআরসিবিএম এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
ধর্ম অবমাননার নামে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ভুক্তভোগী করার ঘটনাকে ‘গভীর সংকট’ হিসেবে উল্লেখ করেছে এইচআরসিবিএম। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথম ১১ মাসে তারা ৭৩টি ধর্ম অবমাননার অভিযোগভিত্তিক ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। এর মধ্যে মামলা হয়েছে ৪০টি ঘটনায়। পাঁচটি ঘটনায় মামলা হয়নি। ধর্ম অবমাননার অভিযোগে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পাঁচজন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বাকি ২৩টি ঘটনার তথ্য বিস্তারিতভাবে সংগ্রহের কাজ করে যাচ্ছেন তাঁরা।
প্রতিবেদনে বেশ কয়েকটি ধর্ম অবমাননার ঘটনায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভুক্তভোগী হওয়ার বিস্তারিত উল্লেখ করেছে এইচআরসিবিএম। এর মধ্যে একটি ঘটনা ব্যাখ্যা করে এইচআরসিবিএম বলেছে, গত ২৩ অক্টোবর খুলনার দাকোপ থানার পূর্বায়ন মণ্ডলকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু এইচআরসিবিএমের অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে, প্রকৃতপক্ষে সনাতন ধর্মের ‘দেবী কালী’কে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তি করেছিলেন আবদুর রহমান নামের এক ব্যক্তি। আবদুর রহমানের সেই মন্তব্যের জবাব দেন পূর্বায়ন মণ্ডল। পূর্বায়ন এখনো কারাগারে থাকলেও আবদুর রহমান ধরাছোঁয়ার বাইরে।
ধর্ম অবমাননার অপব্যবহার বন্ধের জন্য আইন সংস্কারের দাবি জানিয়েছে এইচআরসিবিএম। আইনজীবী লাকী বাছাড় প্রথম আলোকে বলেন, ধর্ম অবমাননার নামে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ভুক্তভোগী করার সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। তাঁরা শুধু ভুক্তভোগীদের সরাসরি অভিযোগ এবং তাঁদের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে যে তথ্য পেয়েছেন, সেসবই উল্লেখ করেছেন প্রতিবেদনে।
এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলনে সম্প্রতি যশোরের অভয়নগর উপজেলার বনগ্রামের বাসিন্দা শান্তি রানী ভদ্রের জমি থেকে জোরপূর্বক গাছ কেটে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে এইচআরসিবিএম বলেছে, শান্তি রানী একজন বয়স্ক বিধবা। তিনি অভয়নগর থানায় অভিযোগ করলেও থানা বিষয়টি এখনো এজাহারভুক্ত করেনি। বিষয়টিকে সংখ্যালঘুরা নিজের জমি নিয়ে নিরাপদ থাকতে পারছে না বলে উল্লেখ করেছে সংগঠনটি।
ঠাকুরগাঁওয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে পরীক্ষার পর বাড়ি ফেরার পথে গত ২৭ নভেম্বর কালো মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নেওয়ার অভিযোগও করেছে এইচআরসিবিএম। সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেছে, এখনো সেই ছাত্রীর সন্ধান পাওয়া যায়নি। ঘটনাটিকে দেশে সংখ্যালঘু মেয়েদের নিরাপত্তাহীনতার বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি হিসেবে উল্লেখ করেছে তারা।