আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হওয়া রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা যাবে। রোববার সচিবালয়ে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করার বিষয়ে মন্ত্রণালয় পর্যায়ে গঠিত কমিটির ১১তম সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের মধ্যে হওয়া রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলার শিকার যে কোনো ব্যক্তি এখন থেকে সরাসরি আইন মন্ত্রণালয়ে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করতে পারবেন। আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর বরাবর এই আবেদন করতে হবে। দরখাস্তের সঙ্গে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট মামলার এজাহার ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অভিযোগপত্রের সত্যায়িত অনুলিপি দিতে হবে। রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের চলমান কার্যক্রমকে বেগবান করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরও ৭২৪টি মামলা প্রত্যাহার করার সুপারিশ করা হয়। এর আগে বিভিন্ন সভায় এই কমিটি ৭ হাজার ৫৭০টি মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করে। এ নিয়ে আজ পর্যন্ত মোট ৮ হাজার ২৯৪টি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে তারা।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

খালেদা জিয়ার জন্য শুক্রবার সারা দেশে দোয়া-প্রার্থনার আহ্বান জানাল সরকার

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনা করে আগামীকাল শুক্রবার বাদ জুমা দেশের সব মসজিদে দোয়ার আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

পাশাপাশি মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ অন্যান্য ধর্মের উপাসনালয়ে সংশ্লিষ্ট ধর্মের রীতি ও আচার অনুযায়ী প্রার্থনার আহ্বান জানানো হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এই আহ্বান জানানো হয়।

একই পোস্টে দেশের সর্বস্তরের মানুষকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির জন্য দোয়া ও প্রার্থনা করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

খালেদা জিয়া রাজধানীর বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত বলে জানা গেছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাতটার পর খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা প্রায় আধা ঘণ্টা হাসপাতালে অবস্থান করেন। এ সময় তিনি খালেদা জিয়ার পরিবার ও দলের নেতা-কর্মীদের ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানান। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে তাঁর চিকিৎসক দল প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করে।

এ সময় সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা। একই সঙ্গে তিনি দেশবাসীর কাছে খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় দোয়া ও প্রার্থনার আহ্বান জানান।

হাসপাতালটির একটি সূত্র জানায়, অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অধীন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে।

আরও পড়ুনখালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত ৮ ঘণ্টা আগে

বিএনপির একটি সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার ফুসফুসে সংক্রমণের কারণে যে জটিলতা তৈরি হয়েছিল, তা কিছুটা উন্নতির দিকে। তাঁর হৃদ্‌যন্ত্রে জটিলতা রয়েছে। অন্য সমস্যাগুলো অনেকটাই অপরিবর্তিত।

গতকাল রাতে চীন থেকে দেশটির চারজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঢাকায় আসেন। রাতেই তাঁরা খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডে যোগ দেন। রাত ১১টা ৫০ মিনিটে বিএনপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।

বিএনপির মিডিয়া উইং থেকে জানানো হয়, চীন থেকে আসা এই চার চিকিৎসক হলেন কাই জিয়ানফাং, ইউয়ান জিন, মিজ ঝাং ইউহুই ও মিজ মেং হং।

এর আগে দুপুরে যুক্তরাজ্য থেকে ঢাকায় আসেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রিচার্ড বেলে। তিনি ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। খালেদা জিয়াকে দেখেন। এরপর তিনি খালেদা জিয়ার সর্বশেষ পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রতিবেদনগুলো দেখেন। তবে এই চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে গতকাল রাত পর্যন্ত বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো তথ্য জানানো হয়নি।

আরও পড়ুনএখনো ‘ট্রাভেল পাস’ চাননি তারেক রহমান, মায়ের বিষয়ে চিকিৎসকদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়১০ ঘণ্টা আগে

সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র থেকে জানা গেছে, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া যাবে কি না, সে বিষয়ে বিদেশে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা মতামত দেবেন। এই মতামতের ওপরই অনেকটা নির্ভর করছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ সন্তান তারেক রহমান কবে দেশে ফিরবেন।

উন্নত চিকিৎসার জন্য গত জানুয়ারিতে লন্ডনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সেখানে প্রথমে হাসপাতালে, পরে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় থেকে তিনি চিকিৎসা নেন। প্রায় চার মাস পর গত ৬ মে তিনি দেশে ফেরেন।

গত ২৩ নভেম্বর রাতে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরীক্ষায় ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ায় তাঁকে ভর্তি করা হয়। গত রোববার ভোরের দিকে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে এসডিইউ থেকে সিসিইউতে নেওয়া হয়।

আরও পড়ুনখালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে চীনের রাষ্ট্রদূত১০ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ