সময় পেরিয়ে ফিরে এলেন শিমলা: ‘ম্যাডাম ফুলি’ এবার ফুল ফর্মে!
Published: 3rd, May 2025 GMT
সময় কখনো থামে না, কিন্তু কিছু নাম থাকে, যারা সময়কে ছাপিয়ে যায়। নব্বইয়ের শেষ প্রজন্মের সিনেমাপ্রেমীদের কাছে তেমনই এক নাম ‘ম্যাডাম ফুলি’। শহীদুল ইসলাম খোকনের পরিচালনায় ১৯৯৯ সালে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমা কেবল বক্স অফিস জয় করেনি, জন্ম দিয়েছিল এক উজ্জ্বল তারকার— শিমলা। প্রথম সিনেমায় বাজিমাত, সঙ্গে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার; যেন ক্যারিয়ারের সূচনাতেই তিনি ছুঁয়ে ফেলেছিলেন সাফল্যের চূড়া।
কিন্তু তার পরের গল্পটা যেন আরেক সিনেমার চিত্রনাট্য। শিমলা ছিলেন ব্যস্ত, রূপালি পর্দা দাপিয়ে ফিরতেন চরিত্র থেকে চরিত্রে। অথচ সময়ের স্রোতে তিনি ধীরে ধীরে সরে গেলেন আড়ালে, রঙিন আলোর দুনিয়া থেকে যেন ফিকে হয়ে গেলেন একসময়। মাঝে মাঝে ভেসে উঠেছে তার নাম, কিন্তু ছিল না সেরকম কোনো আলোড়ন।
২০১৫ সালে শিমলার জীবনে নামে আরও এক নাটকীয় অধ্যায়। ‘নাইওর’ নামে নতুন সিনেমার কাজ শুরুর খবরে ফিরেছিলেন শিরোনামে, কিন্তু আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন এক ট্র্যাজেডির কারণে। চট্টগ্রামে বাংলাদেশ বিমান ছিনতাই চেষ্টায় নিহত হন শিমলার সাবেক স্বামী পলাশ আহমেদ। সারা দেশে তখন এ নিয়ে হইচই হলে শিমলা সিনেমার নায়িকা থেকে বাস্তব জীবনের ট্র্যাজেডির মুখপাত্রে পরিণত হন।
এরপর কেটে যায় অনেকটা সময়। শিমলা হয়ে ওঠেন স্মৃতির নাম। কোথায় আছেন, কী করছেন তা নিয়ে চলত কানাঘুষা। ঢালিউডের রুপালি জগৎ তখন ব্যস্ত নতুন মুখের খোঁজে, পুরনো তারকারা যেন হারিয়ে যেতে বসেছিলেন।
কিন্তু সময়ের চাকা আবারও ঘুরল। সম্প্রতি এক জাঁকজমকপূর্ণ অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে লাল গালিচায় পা রেখেই শিমলা জানিয়ে দিলেন— তিনি ফিরেছেন। চোখেমুখে সেই চেনা আত্মবিশ্বাস, ঠোঁটে ঘোষণা, “হ্যাঁ, আবার নিয়মিত কাজ করব। দর্শকদের ভালো কিছু উপহার দিতে চাই।”যেন বলে দিলেন, এই ফেরা শুধু উপস্থিতির জন্য নয়, আবার আলো ছড়ানোর জন্য।
দর্শকমনে প্রশ্ন উঠেছে—শিমলা কি ফিরবেন সেই পুরনো ‘ম্যাডাম ফুলি’ রূপেই? নাকি এই প্রত্যাবর্তন হবে নতুন কাহিনির, নতুন রূপের? নিজেই স্পষ্ট করেছেন শিমলা, তিনি বলেন, “নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছি। এখন কাজ করার জন্য প্রস্তুত। আবার চলচ্চিত্রে নিয়মিত হতে চাই। ভালো গল্প আর বাজেট পেলে কাজ করবো। এরই মধ্যে কয়েকটি কাজের কথা হয়েছে। ব্যাটে-বলে মিললে কাজগুলো করবো।”
সময়ের প্রেক্ষাপটও যেন তার এই ফেরার পক্ষে কথা বলছে। ঢালিউডে এখন অভিজ্ঞ ও পরিণত অভিনেত্রীদের সংকট স্পষ্ট। তাই শিমলার মতো এক সময়ের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত তারকার কামব্যাক সিনেমাপ্রেমীদের জন্য নিঃসন্দেহে আশাব্যঞ্জক। আর যখন এই প্রত্যাবর্তন ঘটছে তার নিজের কথায়, তখন মনে হতেই পারে—‘ম্যাডাম ফুলি’ ফিরেছেন ফুল ফর্মে, নতুন দিনের আলোয়।
এখন শুধু অপেক্ষা রুপালি পর্দায় সেই আলো ছড়িয়ে পড়ার। শিমলার এই নতুন যাত্রা কতটা জাঁকজমকপূর্ণ হয়, তা সময়ই বলে দেবে।
ঢাকা/রাহাত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য সময় র
এছাড়াও পড়ুন:
শিশু হাফসা হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, আরেক আসামি গ্রেপ্তার
পাবনা পৌর সদরের উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া এলাকায় ৯ বছরের শিশু শিক্ষার্থী হাফসা হত্যার ঘটনায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) দায়ের করা মামলায় আরো এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মামলার নামীয় তিন আসামিকেই গ্রেপ্তার হলো।
গ্রেপ্তাররা হলেন, পাবনা পৌর সদরের উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া মহল্লার টিপু সরদারের ছেলে সাব্বির সরদার (২৬), ছবেদ আলীর ছেলে রমজান আলী (৩০) ও খালেক সরদারের ছেলে পান্না সরদার (২৮)। এদের মধ্যে সাব্বির ও রমজানকে রবিবার এবং পান্নাকে সোমবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
আরো পড়ুন:
‘আবর্জনার মতো লাগে’ বলে অর্ধশত বকুলগাছ কাটা সেই ব্যক্তি গ্রেপ্তার
বরগুনায় নাশকতার অভিযোগে ৩ আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার
এদিকে, শিশু হাফসাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্য করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ।
পাবনা সদর থানার ওসি (অপারেশন) সঞ্জয় কুমার সাহা এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নিহত হাফসার মা রিতু খাতুন বাদী হয়ে সোমবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনজন নামীয়সহ অজ্ঞাতনামা আরো অনেককে আসামি করা হয়েছে।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার দুপুরে পাবনা টেক্সটাইল কলেজ এলাকা থেকে অভিযুক্ত পান্না সরদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে মামলার প্রধান অভিযুক্ত নামীয় তিন আসামিকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে, শিশু হাফসা হত্যার প্রতিবাদে ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
সোমবার (১৬ নভেম্বর) সকালে উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে জেলা প্রশাসক কর্যালয়ের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে তারা। সেখানে নিহত শিশু শিক্ষার্থী হাফসার স্বজন ও এলাকাবাসী বক্তব্য দেন।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে তারা মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভ শেষে তারা আসামিদের গ্রেপ্তার করতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। অন্যত্থায় আরো কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দেন।
এ সময় প্রায় ১ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে সদর থানার ওসি আব্দুস সালাম ঘটনাস্থলে গিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা।
এর আগে, শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে শিশু হাফসাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তার সন্ধান চেয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয়। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে প্রায় ২ ঘণ্টা পর রাত ৮টার দিকে বাড়ির পেছনের জঙ্গলের ভেতর পাটিতে মোড়ানো কাদা মাখা অবস্থায় হাফসার মরদেহ পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় রাতেই সন্দেহভাজন হিসেবে রমজান ও সাব্বির নামের দুইজনকে আটক করা হয়।
নিহত হাফসা সদর উপজেলার মালঞ্চি ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের প্রবাসী হাফিজুর রহমানের মেয়ে এবং স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
হাফসার নানার বাড়ির পাশের বাগানটি দীর্ঘদিন ধরে বখাটে, মাদকসেবী ও জুয়ারুদের আড্ডাস্থল ছিল বলে জানায় স্থানীয়রা। তারা এ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পাবনা সদর থানার ওসি (অপারেশন) সঞ্জয় কুমার সাহা বলেন, “মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদনে শিশু হাফসাকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। ধর্ষণের পর তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। এছাড়া পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতিয়মান হয়েছে।”
ঢাকা/শাহীন/মেহেদী