মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, আবিষ্কার যত বেশি পরস্পর আদান-প্রদান করা যাবে, তত বেশি সফল হবে। এর সুফল পেতে হলে গ্রামগঞ্জের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। বুধবার বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিলের সম্মেলন কক্ষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় আয়োজিত ইনোভেশন শোকেসিংয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের প্রতি সচেতন করা গেলে দেশ আরও এগিয়ে যাবে। দেশের উন্নয়নের জন্য ইনোভেটিভ আইডিয়া মাঠ পর্যায় থেকে সংগ্রহ করতে হবে। দপ্তর সংস্থাকে আগামীতে আরও বেশি ইনোভেটিভ আইডিয়া (উদ্ভাবনী চিন্তা) দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
ফরিদা আখতার বলেন, পান্তা ভাতকে পচন থেকে সহজে রোধ করার জন্য পানি দিয়ে ভাত সংরক্ষণ করার ধারণা প্রথম নারীদের মাথা থেকেই আসে। এ ছাড়া লেবু পাতার মাধ্যমে পচা মাছকেও যে খাওয়ার উপযোগী করা যায়, সেই ধারণাও প্রথম নারীদের মাথা থেকেই আসে। তাই উদ্ভাবনী কার্যক্রমে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব তোফাজ্জেল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন অতিরিক্ত সচিব ইমাম উদ্দীন কবীর, এটুআই প্রকল্পের পরিচালক রশিদুল মান্নাফ কবীর।
.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আবারও নীতি সুদহার অপরিবর্তিত রাখল ফেডারেল রিজার্ভ
আবারও নীতি সুদহার অপরিবর্তিত রাখল যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ। যদিও তারা বলেছে, ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কনীতির জেরে দেশটিতে মূল্যস্ফীতি ও বেকারত্ব বৃদ্ধির ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। ফলে মার্কিন অর্থনীতির ভবিষ্যৎ বা পূর্বাভাস নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল বলেছেন, মার্কিন অর্থনীতি স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় রাখতে পারবে বা ক্রমবর্ধমান অনিশ্চয়তার চাপে গতি হারিয়ে ফেলবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে। খবর রয়টার্সের
গতকাল বুধবার মুদ্রানীতি ঘোষণা উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদে সম্মেলনে জেরোম পাওয়েল আরও বলেন, ট্রাম্প শেষমেশ কোনো নীতিতে থাকবেন বা রাজনৈতিক ও আইনি লড়াই শেষে কী পরিস্থিতি দাঁড়াবে—এ সবকিছু নিয়ে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা আছে। সেই সঙ্গে যে নীতি গৃহীত হবে, তার পরিসর, ফলাফল ও মাত্রা নিয়ে এত এত অনিশ্চয়তা আছে যে এই মুহূর্তে মুদ্রানীতি কী হবে, সে বিষয়ে ফেডের পরিষ্কার ধারণা নেই।
এ কথার মধ্য দিয়ে পাওয়েল বুঝিয়ে দিলেন, ট্রাম্পের পাইকারি হারে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে ফেডারেল রিজার্ভকে কোণঠাসা করে রাখা হয়েছে।
ফেডারেল রিজার্ভ এবারও নীতি সুদহার অপরিবর্তিত রাখায় নীতি সুদহার এখন ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ সীমার মধ্যে আছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে সুদহার এর মধ্যেই ঘোরাফেরা করছে। এর লক্ষ্য হলো মুদ্রাস্ফীতি ২ শতাংশে নামিয়ে আনা এবং একই সঙ্গে বেকারত্ব নিয়ন্ত্রণে রাখা।
গত ২ এপ্রিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের প্রায় সব দেশের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন। এরপর শুরু হয় তোলপাড়। এই শুল্ক কার্যকর হলে বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়। কিন্তু শেষমেশ গত ৯ এপ্রিল এই শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেন ট্রাম্প। ৯০ দিন পর কী হবে, তা এখনো অনিশ্চিত।
বছরের প্রথম প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি সংকুচিত হয়েছে। শঙ্কা আছে, বাণিজ্যনীতি নিয়ে অনিশ্চয়তার জেরে মন্দা হতে পারে। ফেডারেল রিজার্ভের ওপর নীতি সুদ হ্রাসের চাপ আছে। এ ছাড়া ফেড যেভাবে স্বাধীন পন্থায় কাজ করে, তা নিয়ে ট্রাম্পেরও আপত্তি আছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে সুদহারে তফসিলি ব্যাংকগুলোকে স্বল্প সময়ের জন্য ঋণ দেয়, সেটাই হচ্ছে নীতি সুদহার। ইংরেজিতে একে বলে রেপো রেট। রেপোর বাংলা হচ্ছে পুনঃক্রয় চুক্তি। এটা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য মুদ্রানীতির একটি অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে পরিচিত।
অর্থনীতিতে নগদ তারল্যের জোগান দিতে বা অন্যভাবে বলতে গেলে ব্যাংকগুলোর জরুরি প্রয়োজনে অর্থ সরবরাহ করতে মুদ্রানীতির এ হাতিয়ার ব্যবহার করা হয়। বিশ্বের প্রায় সব দেশেরই কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ হাতিয়ার ব্যবহার করে। নীতি সুদহার বাড়ানো হয় মূলত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য। নীতি সুদহার বুঝতে হলে রিভার্স রেপো রেটের আলোচনাও সামনে চলে আসবে।
যেমন কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি মনে করে বাজারে অতিরিক্ত তারল্য আছে, তাহলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ওই তারল্য তুলে নেয়। সে জন্যও নির্দিষ্ট সুদের হার থাকে। অর্থ তুলে নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে সুদের হার দেয় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে, তাকে বলা হয় রিভার্স রেপো। সাধারণত নীতি সুদহার বা রেপো রেটের তুলনায় রিভার্স রেপোর সুদহার কম থাকে।