ভারতে ইউটিউবে ৪ বাংলাদেশি টেলিভিশন চ্যানেল বন্ধ
Published: 9th, May 2025 GMT
ভারতে ইউটিউবে বাংলাদেশের ৪টি বেসরকারি টেলিভিশন বন্ধ করা হয়েছে। দেশটির সরকারের আবেদনের প্রেক্ষিতে জাতীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উদ্বেগের কারণ দেখিয়ে চ্যানেলগুলো বন্ধ করে দিয়েছে ভিডিও প্রদর্শনের এই মাধ্যমটি।
বন্ধ হওয়া চ্যানেলগুলো হলো—যমুনা, একাত্তর, বাংলাভিশন এবং মোহনা টেলিভিশন।
শুক্রবার তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান ডিসমিসল্যাব তাদের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, ভারতে এসব চ্যানেলের অনলাইন ঠিকানায় প্রবেশ করলে এই বার্তা দেখাচ্ছে যে– “এটি বর্তমানে এই দেশে প্রদর্শনের জন্য অনুমোদিত নয়, কারণ এটি জাতীয় নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার ভিত্তিতে সরকারি নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত।”
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি আইন, ২০০০-এর ৬৯ (ক) ধারার অধীনে, সরকারের কাছে এমন অধিকার রয়েছে—যদি কোনও তথ্য জাতীয় নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব কিংবা জনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি সৃষ্টি করে, তবে সেটি বন্ধ করার নির্দেশনা দিতে পারে।
যমুনা টেলিভিশনকে পাঠানো বার্তা
যমুনা টেলিভিশন ডিসমিসল্যাবকে নিশ্চিত করেছে, তারা ইউটিউবের কাছ থেকে একটি আনুষ্ঠানিক বার্তা পেয়েছে, যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে—ভারত সরকারের অনুরোধে তাদের সমস্ত পুরোনো ও ভবিষ্যতের অনুষ্ঠান দেশটির দর্শকদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সত্যতা যাচাই
ডিসমিসল্যাব বিষয়টির সত্যতা নিরূপণে ভারতে একটি প্রক্সি সংযোগ স্থাপন করে, যাতে এটি নিশ্চিত হয় যে তারা ভার্চুয়ালভাবে ভারতের অবস্থানে প্রবেশ করেছে। এরপর তারা বাংলাদেশের ৩৮টি সংবাদভিত্তিক চ্যানেল যাচাই করে। দেখা যায়, কেবল যমুনা, একাত্তর, বাংলাভিশন ও মোহনা ভারতের জন্য বন্ধ দেখাচ্ছে। এদের ভিডিওতে একই বার্তা, যেখানে সরকারি নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হয়েছে।
বিষয়টি আরও নিশ্চিত করতে ডিসমিসল্যাব দিল্লি ও কলকাতার দুই সংবাদকর্মীকে লিংক পাঠিয়ে বিষয়টি জানতে চায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই দুই সংবাদকর্মী জানান, সত্যিই ভারতে চ্যানেলগুলো দেখা যাচ্ছে না। একজন স্ক্রিনশটের ছবি পাঠান প্রমাণ হিসেবে।
আঞ্চলিক উত্তেজনা এবং তথ্যনিয়ন্ত্রণের ইঙ্গিত
ডিসমিসল্যাবের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময়ে এলো, যখন দেশটির সশস্ত্র বাহিনী প্রতিবেশী পাকিস্তানে “অভিযান সিঁদুর” শুরু করে। এরপর থেকেই সে দেশের বিভিন্ন প্রচারমাধ্যমে তীব্র জাতীয়তাবাদী প্রচারণা শুরু হয়। এর মধ্যেই ৯ মে স্বাধীন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়্যারের অনলাইন ঠিকানা পুরো ভারতে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওয়্যার জানায়, ভারত সরকার সংবিধানপ্রদত্ত সংবাদপত্রের স্বাধীনতা লঙ্ঘন করে তাদের অনলাইন বন্ধ করে দিয়েছে। এর আগের দিন ৮ মে, আরেক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলা হয়— ভারত সরকার আট হাজারেরও বেশি ব্যবহারকারীর ঠিকানা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে, যার মধ্যে বেশ কিছু স্বাধীন সংবাদ সংস্থা রয়েছে, যেমন মাক্তুব মিডিয়া, দ্য কাশ্মিরিয়াত ও ফ্রি প্রেস কাশ্মির। এ ছাড়া, গত মাসে ভারত সরকার প্রতিবেশী একটি দেশের এক ডজনের বেশি অনলাইন চ্যানেল নিষিদ্ধ করে। নিষেধাজ্ঞার তালিকায় ছিল সেদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, খ্যাতিমান ক্রীড়াবিদ এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের নামও। সম্প্রতি ভারতে নির্বাসনে থাকা বাংলাদেশি লেখক ও অনলাইনকর্মী আসাদ নূর অভিযোগ করেন, তার ভিডিওভিত্তিক চ্যানেলটিও ভারতে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। পরে অবশ্য তা খুলে দেওয়া হয়।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আত্মঘাতী গোলে প্রমোশনের সুযোগ, এরপর যা ঘটল
সহজ ভাষায় ফুটবল বলতে বোঝায় প্রতিপক্ষের জালে গোল দেওয়া আর নিজেরা গোল না খাওয়া। তবে কখনো কখনো খেলোয়াড়েরা ভুলে নিজেদের জালেই বল পাঠিয়ে দেন, ফুটবলে যা আত্মঘাতী গোল হিসেবে পরিচিত। আত্মঘাতী গোল একটি দলকে ম্যাচ হারিয়ে দিতে তো পারেই, ফাইনালে এমন কিছু ঘটলে ট্রফিও হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার শঙ্কা থাকে।
তবে আত্মঘাতী গোল সব সময় খারাপ নয়, কখনো কখনো উপকারীও হতে পারে—আর এমন অদ্ভুতুড়ে এক পরিস্থিতির মুখে পড়েছিল জার্মান ক্লাব তুর্কস্পোর ন্যুর্নবার্গ। একটি আত্মঘাতী গোল করলেই দলটি লিগে প্রমোটেড হতো। কিন্তু দলটি সেটি করেনি। এরপর যা হয়েছে, তা দলটির জন্য বেদনাদায়ক।
এটি ছিল জার্মানি মিডল ফ্রাঙ্কোনিয়ার ডিস্ট্রিক ফুটবল লিগের ম্যাচ। ওপরের ধাপের লিগে জায়গা করতে দুটি টিকিটের লড়াইয়ে ছিল তিনটি ক্লাব তুর্কস্পোর ন্যুর্নবার্গ, এসভি টেনেনলো এবং গোগেলসবাখ। এর মধ্যে টেনেনলো প্রথম দুই ম্যাচ জিতে পরের ধাপে জায়গা করে নেয়। বাকি জায়গাটির লড়াইয়ে ছিল ন্যুর্নবার্গ ও গোগেলসবাখ। ১৩ জুনের ম্যাচে লিগ প্রমোশনের জন্য গোগেলসবাখকে ২ গোল ব্যবধানে জিততে হতো। বিপরীতে এর কম ব্যবধানে হারলেই প্রমোশন নিশ্চিত ছিল ন্যুর্নবার্গের।
তুর্কস্পোর ন্যুর্নবার্গের লোগো।