Samakal:
2025-08-13@10:49:43 GMT

বনাঞ্চল উজাড় করে মাছের ঘের

Published: 9th, May 2025 GMT

বনাঞ্চল উজাড় করে মাছের ঘের

বরগুনার তালতলীতে আন্ধারমানিক নদীর তীরে গড়ে ওঠা বনাঞ্চলের গাছ কেটে মাছের ঘের করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ উঠেছে, বন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে বনের জমিতে এসব ঘের নির্মাণ করছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। 
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বড়বগী ইউনিয়নের নিশানবাড়িয়া খেয়াঘাট থেকে শারিকখালী ইউনিয়নের চাউলাপাড়া গ্রাম পর্যন্ত আন্ধারমানিকের তীরঘেঁষে প্রায় ২০ কিলোমিটারজুড়ে ছইলা, কেওড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপণ করে বন বিভাগ। এসব গাছ বড় হয়ে বিস্তীর্ণ বনাঞ্চলে পরিণত হয়েছে। পরিচিতি লাভ করেছে উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী হিসেবে।
বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, আন্ধারমানিক নদীতীরবর্তী শারিকখালী ইউনিয়নের চাউলাপাড়া গ্রামে বনাঞ্চলের কয়েকশ চারা গাছ কেটে ও খননযন্ত্র দিয়ে উপড়ে ফেলে মাছের ঘের করেছেন বাবুল মৃধা ও জাকির মৃধা। তারা সম্পর্কে চাচাত ভাই। ঘেরের পাড়ঘেঁষে পড়ে আছে ছোট-বড় নানা প্রজাতির গাছ। স্থানীয়রা জানান, বন বিভাগের লোকজনের যোগসাজশে এভাবে প্রতিদিনই বনাঞ্চলের গাছ কেটে নেওয়া হচ্ছে। এতে ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে বনাঞ্চলের পরিধি। 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, এই বনের জন্য ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে তাদের গ্রামসহ আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা রক্ষা পেয়ে আসছে। গ্রামের বাবুল মৃধা ও জাকির মৃধার মতো প্রভাবশালীরা যেভাবে বনের জমি দখল করে ঘের করছেন তাতে আগামী দিনে বনের অস্তিত্ব থাকবে না। এই বন ধ্বংস হলে ঝড়ের তাণ্ডব থেকে দুই ইউনিয়নের (বড় বগী ও শারিকখালী) মানুষ রক্ষা পাবে না। 
বনাঞ্চলের গাছ কাটার অভিযোগ প্রসঙ্গে বাবুল মৃধা ও জাকির মৃধা জানান, এটি তাদের বাড়ির সামনে সরকারি খাসজমি। ওই জমি বন্দোবস্ত নিয়ে তারা চিংড়ির ঘের খনন করেছেন। বন বিভাগের লোকজন বিষয়টি দেখে গেছেন। 
ধরিত্রী রক্ষায় আমরার (ধরা) উপজেলা সমন্বয়ক পরিবেশকর্মী আরিফ রহমান বলেন, এভাবে প্রতিনিয়ত উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী ধ্বংস ও দখল করছে একশ্রেণির ভূমিদস্যু। এ ভূমিদস্যুদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত বিচার করা উচিত। 
শারিকখালী ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন বলেন, বনের জমি দখল করে ঘের করার বিষয়টি বন বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জেনেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
বন বিভাগের তালতলী রেঞ্জ কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান বলেন, কাউকে বনাঞ্চলের জমি বন্দোবস্ত দেননি তারা। বিষয়টি নজরে আসার পর অভিযুক্ত দু’জনকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ঘটনা তদন্ত করে বনের জমি উদ্ধার ও বন উজাড়কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বন বিভাগের লোকজন টাকার বিনিময়ে স্থানীয় প্রভাবশালীদের বনের মধ্যে জমি দখলে সহযোগিতার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।
তালতলীর ইউএনও উম্মে সালমা বলেন, এ বিষয়ে বন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলবেন তিনি। জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: নদ বন ব ভ গ র কর মকর ত ঘ র কর ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

জয়নাল হাজারী কলেজে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ

ফেনীর জয়নাল হাজারী কলেজে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধসহ চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান করেছেন শিক্ষার্থীরা। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দফাগুলো দাবি বাস্তবায়ন না হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে মিছিল নিয়ে কলেজ মাঠে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। পরে তারা কলেজের অধ্যক্ষের কাছে চার দফা দাবি তুলে ধরে স্মারকলিপি দেন।

মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘ক্যাম্পাস রাজনীতি, চলবে না চলবে না’, ‘দলীয় রাজনীতির ঠিকানা, এ ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

আরো পড়ুন:

বিসিএসে অযৌক্তিক অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ

উত্তরবঙ্গের রেলপথ আটকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

শিক্ষার্থীরা বলেন, ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই জয়নাল হাজারী কলেজে ছাত্র রাজনীতির ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা ছিল। যা কলেজের শিক্ষা ও শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠন কলেজের শিক্ষার্থীদের দলীয় রাজনীতিতে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি কমিটি গঠনের চেষ্টা করছে। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করে কলেজের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।

তারা বলেন, আমরা কলেজের অফিসিয়াল পত্রে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ক্যাম্পাসে সব ধরনের গোপন ও প্রকাশ্য রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবি করছি। পাশাপাশি গত ১১ আগস্টের ঘটনার সঠিক তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে সৃষ্ট সংশয় দূর করতে কলেজ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে হবে।

আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এসব দাবি বাস্তবায়ন না হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লালপোল এলাকায় অবরোধের হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, “শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি নিয়ে আমার কাছে এসেছিল। কলেজটি যেহেতু দীর্ঘদিন রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত ছিল, সে হিসেবে গভর্নিং বডি থেকে শুরু করে শিক্ষকরাও ক্যাম্পাস রাজনীতি মুক্ত রাখতে একমত। এই বিষয়ে আমরা গভর্নিং বডির সঙ্গে একটি সভা করব। আগামী রবিবারের (১৭ আগস্ট) মধ্যে ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।”

জয়নাল হাজারী কলেজে দীর্ঘদিন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা থাকলেও গত সোমবার (১১ আগস্ট) প্রার্থিতা ফরম বিতরণের মধ্য দিয়ে কলেজে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আনুষ্ঠানিকভাবে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করে। তারপর থেকে ক্ষোভে ফেটে পড়েন কলেজের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা/সাহাব উদ্দিন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ