বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) তারুণ্যের সমাবেশে আজ শনিবার যোগ দিয়েছেন ক্রিকেটার তামিম ইকবাল। হঠাৎ পলোগ্রাউন্ডের মঞ্চে বিএনপি নেতাদের পাশে তামিমকে দেখে উল্লাসে ফেটে পড়েন সমাবেশে আগত লোকজন। এ সময় সভাস্থল তামিম তামিম চিৎকারে মুখর হয়ে ওঠে।

শুধু সমাবেশ মঞ্চে আসীন ছিলেন তা নয়, জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক বক্তব্যও দিয়েছেন। চট্টগ্রামের ছেলে তামিম ইকবালের বক্তব্যজুড়ে ছিল স্থানীয় খেলাধুলাকে এগিয়ে নেওয়ার নানামুখী পদক্ষেপের কথা।

আজ বেলা তিনটায় চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ডে বিএনপির তিন অঙ্গসংগঠন—জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের উদ্যোগে আয়োজিত এই সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিশেষ অতিথি ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন।

বিকেল ৫টা ৪২ মিনিটে তামিম ইকবাল মঞ্চে ওঠেন। এ সময় মঞ্চে তাঁকে স্বাগত জানান মির্জা ফখরুল। পরে নেতাদের প্রথম সারিতে তামিমকে বসানো হয়। সন্ধ্যা ৬টা ৩ মিনিটে বক্তব্য দেওয়ার জন্য মাইক্রোফোনে তামিমের ডাক পড়ে।

চট্টগ্রামের খেলোয়াড়দের জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া নিয়ে কথা বলেন তিনি। চট্টগ্রামের খেলোয়াড়দের উদ্দেশে তামিম ইকবাল বলেন, ‘আমরা এমনভাবে পরিশ্রম করব যাতে জাতীয় দলে প্রতিনিধিত্ব করতে পারি। আজ থেকে ১০-২০ বছর আগে যেভাবে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করত চট্টগ্রাম, আমরা আবার ওই জায়গায় ফিরে যাব।’

বিএনপির নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত কথা হওয়ার বিষয়টিও বক্তব্য উল্লেখ করেছেন তামিম ইকবাল। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামের খেলাধুলা নিয়ে আমার সঙ্গে বিএনপি নেতাদের নিয়মিত কথা হয়। আমরা কীভাবে চট্টগ্রামের খেলাধুলাকে আগের জায়গায় নিয়ে আসতে পারি, সে ব্যাপারে আলোচনা হয়।’

তামিম ইকবাল যোগ করেন, ‘আমি নিশ্চিত, তাঁরা যখন সুযোগ পাবেন সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন চট্টগ্রামকে এগিয়ে নিতে। সেটি যে ধরনের খেলাধুলাই হোক না কেন। ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন, যেকোনো ইভেন্ট প্রোমোট করবেন।’

পরে নিজের অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে বক্তব্য শেষ করেন তামিম ইকবাল। তিনি বলেন, ‘আজ আপনাদের ভালোবাসা পেয়ে খুশি। আপনারা জানেন আমি অসুস্থ। ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছি। বেশি কথা বলা উচিত নয়।’

হঠাৎ তামিমের বিএনপির সমাবেশে অংশগ্রহণের পর তাঁর রাজনীতিতে জড়ানোর বিষয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। তাহলে কি তামিম ইকবাল বিএনপিতে যোগদান করছেন, কিংবা নির্বাচনে দাঁড়াবেন, নাকি ক্রিকেট বোর্ডের দায়িত্ব পাচ্ছেন—এসব নানা আলোচনা ডালপালা মেলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত ম ম ইকব ল ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

আট দশক পর দেশের মাটিতে ফিরে যাওয়া

জাপানের টোকিওর নগরকেন্দ্রের ব্যস্ত এক জায়গাজুড়ে আছে বিতর্কিত একটি শিন্তো মন্দির। জাপানে যেটা ইয়াসুকুনি মন্দির নামে পরিচিত। ১৮৬৯ সালে যাত্রা শুরু করা শিন্তো ধর্মের এই মন্দির তৈরি করা হয়েছিল মূলত এক বছর আগে গৃহযুদ্ধের মধ্য দিয়ে সামন্ত্রতান্ত্রিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে আধুনিক জাপানের ভিত্তি তৈরি করে নেওয়া মেইজি পুনরুত্থানের সময় গৃহযুদ্ধে নিহত বিজয়ী পক্ষের সৈন্যদের ‘দেবতুল্য’ ভাবমূর্তি তুলে ধরার উদ্দেশ্যে। ফলে বিজয়ী পক্ষের নিহত সব সৈনিকের নাম সেখানে দেবতার সারিতে সন্নিবেশিত আছে, পরাজিতদের নয়।

দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জীবন বিসর্জন দেওয়ার বিনিময়ে পাওয়া এ রকম প্রতিদানের মধ্যে বিতর্কের কিছু থাকার কথা নয়। দীর্ঘকাল ধরে এটা নিয়ে কোনো রকম বিতর্কও ছিল না। তবে সেই হিসাব পাল্টে যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুদ্ধাপরাধী হিসেবে সর্বোচ্চ সাজা পাওয়া জাপানের সেই সময়ের কয়েকজন নেতাকে ১৯৭০–এর দশকের শেষ দিকে ইয়াসুকুনির দেবতার তালিকায় যুক্ত করার প্রচেষ্টা চালানোর মধ্য দিয়ে।

ফলে যুদ্ধের পুরো সময় ধরে জাপানের যে কয়েক লাখ তরুণ দেশপ্রেমে নিবেদিত থেকে নিজেদের প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন, ইয়াসুকুনির সেই ঘটনার আলোকে তাঁদেরও এখন ধরে নেওয়া হচ্ছে ‘বিতর্কিত’ হিসেবে। জাপানের জন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের বাইরে অন্য একটি মর্মান্তিক দিক হচ্ছে এটা।

যেকোনো যুদ্ধের বলি সর্বাগ্রে হতে হয় যুদ্ধে জড়িত কোনো একটি দেশের তরুণদের। নিজেরা না চাইলেও দেশপ্রেমের দোহাই দিয়ে যুদ্ধে যোগ দিতে যাঁদের সাধারণত বাধ্য করা হয়। এর পরোক্ষ ফলশ্রুতিতে নেতৃত্বের স্খলনের জন্য নেতারাই কেবল নয়, সেসব তরুণকেও চিহ্নিত করা হয় ‘খলনায়ক’ হিসেবে।

এমনটাই সম্ভবত ঘটেছে আট দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের মাটিতে চিরনিদ্রায় শায়িত জাপানের কয়েকজন তরুণ সৈনিকের জীবনে। তাঁদের অনেকেরই সম্ভবত জানা ছিল না কেন তাঁরা যুদ্ধে জড়িত। আর যাঁরা তাঁদের যুদ্ধের ময়দানে পাঠিয়েছিলেন, তাঁরা ধরে নিয়েছিলেন যে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা সেই তরুণদের ভাগ্যে শেষ পর্যন্ত কী ঘটে, তা নিয়ে খুব বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করার দরকার সম্ভবত নেই।

সমাধিতে চিরনিদ্রায় শায়িত জাপানিদের নামফলক

সম্পর্কিত নিবন্ধ