বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় সরকারকে সধুবাদ জানিয়েছে বিএনপি। দল‌টির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বিএন‌পি কয়েক মাস আগেই লিখিতভাবে প্রধান উপদেষ্টাকে জানিয়েছিল, আওয়ামী লীগকে মানবতাবিরোধী ও গণহত্যার দায়ে বিচারের আওতায় আনতে হবে। তখন প্রধান উপদেষ্টা যদি দা‌বি‌টি আমলে নিতেন, তাহলে গত ক‌য়েকদিনের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না।

রোববার আন্তর্জা‌তিক মাতৃভাষা ইন‌স্টি‌টিউটে সং‌বিধান সংস্কার বিষ‌য়ে নাগ‌রিক জো‌টের অনুষ্ঠান শে‌ষে সাংবা‌দিক‌দের প্রশ্নে তি‌নি এ কথা ব‌লেন।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিএনপি শাহবাগে না যাওয়ার কারণ সম্পর্কে- সালাহউদ্দিন বলেন, আমরা কেন শাহবাগে যাবো। আমাদের দাবি তো বহু আগেই লিখিতভাবে প্রধান উপদেষ্টাকে দিয়েছি। 

তিনি বলেন, আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ও গণমানুষের কথাগুলো বলেছিলাম। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নজির আছে যে সমস্ত ফ্যাসিবাদী দল গণহত্যার জন্য দায়ী দল হিসেবে তাদেরকে বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়ে এসে নিষিদ্ধ করা হয়। এর উদাহরণ সারা পৃথিবীতে আছে। সুতরাং দেরিতে হলেও অন্তর্বর্তী সরকার আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করবে এই ঘোষণা দেওয়ার জন্য স্বাগতম জানাই।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে বলব, বিএনপি এই রকম যেসব পরামর্শ দিয়েছে দেশ ও জনগণের পক্ষে তা যেন যথাসময়ে আমলে নেয়। সরকার ও দেশ পরিচালনায় আমরা সরকারকে সহযোগিতা করব।

সারাদেশের মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য উদগ্রীব বলে জা‌নি‌য়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, এ জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানিয়েছি, নির্বাচনের একটা রোডম্যাপ ঘোষণা করতে। 

আওয়ামী লীগ ও তাদের অন্যান্য সংগঠনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়ে সরকার আরও একটি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন বলেন, সন্ত্রাসী বিরোধী আইনে সরকার আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা মনে হয় এইজন্য সরকারকে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে কিছুটা সংশোধনী আনতে হবে। কারণ এই আইনে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের কথা বলা আছে। এখানে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়টি উল্লেখ নেই বলেও জানান সালাহউদ্দিন। 

বিএনপি এতদিন যে গণতান্ত্রিক রাজনীতির কথা বলে আসছে, সেখানে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ কতটা গণতান্ত্রিক- এমন প্রশ্নে সালাহউদ্দিন বলেন, তারা একটি ফ্যাসিবাদী শক্তি, তারা একটি মাফিয়া শক্তিতে পরিণত হয়েছিল। তারা দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদী ও মাফিয়াতন্ত্রের চর্চা করেছিল দেশের মানুষের ওপর। তারা আর রাজনৈতিক দল নেই। তারা একটা মাফিয়া শক্তি, ফ্যাসিবাদী দল। সুতরাং তাদেরকে রাজনৈতিক দলের কোনো তকমা দিতে চাই না।  আওয়ামী লীগের ডিএনএতে গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক চর্চা নেই বলেও দাবি করেন সালাহউদ্দিন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ আওয় ম ল গ স ল হউদ দ ন র র জন ত ক সরক র আওয় ম ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচনের আগেই শাপলা-জুলাইসহ সব গণহত্যার বিচার করতে হবে: হেফাজত

নির্বাচনের আগেই শাপলা চত্বর ও জুলাই গণহত্যাসহ প্রতিটি হত্যাযজ্ঞের বিচার দাবি করেছেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী। 

আজ বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ দপ্তর সম্পাদক মাওলানা আফসার মাহমুদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতি দেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ইসলামবিদ্বেষী, ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী চেতনা সংরক্ষণ, রাষ্ট্র-সংস্কারের গণ-আকাঙ্ক্ষা সুসংহতকরণ এবং জাতীয় ঐকমত্য গঠনকল্পে অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে হবে। সেইসাথে নির্বাচনের আগেই শাপলা চত্বরে আলেম ওলামা হত্যাকাণ্ড ও জুলাই গণহত্যাসহ ফ্যাসিস্ট হাসিনার প্রতিটি হত্যাযজ্ঞের বিচার সম্পন্ন করতে হবে। এর অন্যথা হলে ড. ইউনূস সরকারকে ছাত্র-জনতা ক্ষমা করবে না।
আজিজুল হক বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে বুঝতে হবে, এখনো বিছানায় কাতরাচ্ছে পঙ্গুত্ব ও অন্ধত্ব বরণ করা হাজার হাজার আহত শাপলা ও জুলাই-যোদ্ধা। অগণিত শহীদের রক্তের ফসল জুলাই বিপ্লব ব্যর্থ হলে গণঅভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতার কাছে ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারকে জবাব দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, শাপলা চত্বরের রক্তাক্ত ইতিহাসের পথ বেয়ে জুলাই বিপ্লব আমাদের জাতীয় জীবনে হাজির হয়েছে। জুলাই বিপ্লব চলমান প্রক্রিয়া। জুলাইকে বিস্মৃত হতে দেওয়া যাবে না। জুলাই বিপ্লবের সাথে গাদ্দারি করে জনসমর্থন ধরে রাখা যাবে না। এদেশে যারাই ভারতীয় আধিপত্যবাদের গোলামি করবে, দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিবে, মাফিয়াতন্ত্র জারি রাখবে, মানবাধিকার লঙ্ঘন করে ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইবে, তাদের বিরুদ্ধে জুলাইর গণপ্রতিরোধের চেতনা বারবার ফিরে আসবে। দেশের জনগণের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে ছাত্র-জনতা আবারও রাজপথে নামতে বিলম্ব করবে না। মনে রাখতে হবে, ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। ফেরাউন পারেনি; হাসিনাও পারেনি। ভবিষ্যত ক্ষমতাসীনদের এই ঐতিহাসিক শিক্ষা ধারণ করতে হবে।

মাওলানা ইসলামাবাদী বলেন, জুলাই বিপ্লবের অন্যতম দাবি কাঠামোগত সংস্কার। ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার জন্ম দেওয়া বিদ্যমান রাষ্ট্র-কাঠামোর বিলোপ ও পুনর্নির্মাণের মধ্যেই বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত ভবিষ্যত পরিদৃষ্ট। জুলাই গণঅভ্যুত্থান সেই মাহেন্দ্রক্ষণ এনে দিয়েছে। গণহত্যার বিচার ও সংস্কার প্রশ্নে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

তিনি বলেন. প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসকে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্র-সংস্কারের মৌলিক কাজগুলো আরও বেগবান করতে হবে। ব্যক্তিগত ক্ষুদ্র স্বার্থের চেয়ে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থ রক্ষায় আত্মনিবেদিত হওয়ার মধ্যেই মাহাত্ম্য নিহিত। আর সংস্কারকাজে অবশ্যই ইসলামবিরোধী অপশক্তির ফাঁদ ও কু-মন্ত্রণা এড়িয়ে যেতে হবে। সংবিধানের মূলনীতি থেকে বহুত্ববাদ বাদ দিতে হবে। কুরআন-সুন্নাহবিরোধী নারী কমিশন বাতিল করতে হবে‌। বৃহত্তর জনগোষ্ঠির ধর্ম, সভ্যতা সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের আলোকে সংস্কার কাজ সম্পন্ন করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই মাসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবি
  • নির্বাচনের আগেই শাপলা-জুলাইসহ সব গণহত্যার বিচার চায় হেফাজত
  • নির্বাচনের আগেই শাপলা চত্বর ও জুলাই গণহত্যার বিচার চায় হেফাজতে ইসলাম
  • নির্বাচনের আগেই শাপলা-জুলাইসহ সব গণহত্যার বিচার করতে হবে: হেফাজত
  • নতুন করে আরেক ফ্যাসিস্ট জন্ম নিয়েছে: ফয়জুল করীম