তেহরানে আটকা পড়া বাংলাদেশিরা ফিরবেন আগামী সপ্তাহে
Published: 22nd, June 2025 GMT
ইরানের রাজধানী তেহরানে আটকা পড়া বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। এ জন্য ১০০ জনের তালিকা করা হয়েছে। প্রথম দলটি আগামী সপ্তাহেই দেশে ফিরবে। রোববার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়।
এদিকে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। এক বিবৃতিতে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র আসিফ শাহ রহমান বলেন, ইরানে উদ্ভূত যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সেখানে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশে ফেরানোর প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সরকার শুরু করেছে। ইরানের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সহযোগিতায় এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।
তিনি জানান, তারা আশা করছেন প্রত্যাবাসনপ্রত্যাশীদের প্রথম দলটি আগামী সপ্তাহেই বাংলাদেশে পৌঁছবে। পর্যায়ক্রমে অন্যদেরও ফেরত আনা হবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ফিরতে আগ্রহী সব বাংলাদেশির নাম, ঠিকানা ও অন্য তথ্যাদিসহ তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাসে নিবন্ধনের জন্য অনুরোধ করেছে মন্ত্রণালয়।
ইরানে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকরা এবং তাদের স্বজনরা জরুরি প্রয়োজনে দূতাবাস ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিচের মোবাইল ফোন নম্বরগুলোতে (হোয়াটসঅ্যাপসহ) সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। বাংলাদেশ দূতাবাস, তেহরান হটলাইন নম্বর +৯৮৯৯০৮৫৭৭৩৬৮ ও +৯৮৯১২২০৬৫৭৪৫। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হটলাইন নম্বর +৮৮০১৭১২০১২৮৪৭।
ইরানে চলমান সংঘাতের বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান স্পষ্ট করে আসিফ শাহ বলেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। এ ধরনের পরিস্থিতি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করার ঝুঁকি তৈরি করে এবং যা আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতিও হুমকিস্বরূপ।
এ ক্ষেত্রে পাকিস্তান নাকি অন্য কোনো দেশকে ব্যবহার করে বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনা হবে, সে বিষয়টি স্পষ্ট করেননি মুখপাত্র। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, তেহরান থেকে দেশে ফিরতে চান এমন ৯২ জন বাংলাদেশির একটি তালিকা পাকিস্তানের কাছে পাঠানো হয়েছে। তাদের স্থলপথে ইরান থেকে পাকিস্তানে আনা হবে। সেখান থেকে দুবাই হয়ে আকাশপথে দেশে ফেরানো হবে। এ প্রক্রিয়ায় প্রথম ধাপে ২৫ বাংলাদেশি নাগরিকের ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: দ শ ফ র র আগ প রক র য়
এছাড়াও পড়ুন:
শিশু হাফসা হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, আরেক আসামি গ্রেপ্তার
পাবনা পৌর সদরের উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া এলাকায় ৯ বছরের শিশু শিক্ষার্থী হাফসা হত্যার ঘটনায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) দায়ের করা মামলায় আরো এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মামলার নামীয় তিন আসামিকেই গ্রেপ্তার হলো।
গ্রেপ্তাররা হলেন, পাবনা পৌর সদরের উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া মহল্লার টিপু সরদারের ছেলে সাব্বির সরদার (২৬), ছবেদ আলীর ছেলে রমজান আলী (৩০) ও খালেক সরদারের ছেলে পান্না সরদার (২৮)। এদের মধ্যে সাব্বির ও রমজানকে রবিবার এবং পান্নাকে সোমবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
আরো পড়ুন:
‘আবর্জনার মতো লাগে’ বলে অর্ধশত বকুলগাছ কাটা সেই ব্যক্তি গ্রেপ্তার
বরগুনায় নাশকতার অভিযোগে ৩ আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার
এদিকে, শিশু হাফসাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্য করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ।
পাবনা সদর থানার ওসি (অপারেশন) সঞ্জয় কুমার সাহা এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নিহত হাফসার মা রিতু খাতুন বাদী হয়ে সোমবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনজন নামীয়সহ অজ্ঞাতনামা আরো অনেককে আসামি করা হয়েছে।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার দুপুরে পাবনা টেক্সটাইল কলেজ এলাকা থেকে অভিযুক্ত পান্না সরদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে মামলার প্রধান অভিযুক্ত নামীয় তিন আসামিকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে, শিশু হাফসা হত্যার প্রতিবাদে ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
সোমবার (১৬ নভেম্বর) সকালে উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে জেলা প্রশাসক কর্যালয়ের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে তারা। সেখানে নিহত শিশু শিক্ষার্থী হাফসার স্বজন ও এলাকাবাসী বক্তব্য দেন।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে তারা মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভ শেষে তারা আসামিদের গ্রেপ্তার করতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। অন্যত্থায় আরো কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দেন।
এ সময় প্রায় ১ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে সদর থানার ওসি আব্দুস সালাম ঘটনাস্থলে গিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা।
এর আগে, শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে শিশু হাফসাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তার সন্ধান চেয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয়। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে প্রায় ২ ঘণ্টা পর রাত ৮টার দিকে বাড়ির পেছনের জঙ্গলের ভেতর পাটিতে মোড়ানো কাদা মাখা অবস্থায় হাফসার মরদেহ পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় রাতেই সন্দেহভাজন হিসেবে রমজান ও সাব্বির নামের দুইজনকে আটক করা হয়।
নিহত হাফসা সদর উপজেলার মালঞ্চি ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের প্রবাসী হাফিজুর রহমানের মেয়ে এবং স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
হাফসার নানার বাড়ির পাশের বাগানটি দীর্ঘদিন ধরে বখাটে, মাদকসেবী ও জুয়ারুদের আড্ডাস্থল ছিল বলে জানায় স্থানীয়রা। তারা এ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পাবনা সদর থানার ওসি (অপারেশন) সঞ্জয় কুমার সাহা বলেন, “মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদনে শিশু হাফসাকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। ধর্ষণের পর তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। এছাড়া পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতিয়মান হয়েছে।”
ঢাকা/শাহীন/মেহেদী