দর্শক দাঁতভাঙা জবাব দিয়েছে, পাইরেসি নিয়ে শাকিব খান
Published: 23rd, June 2025 GMT
পবিত্র ঈদুল আজহায় মুক্তি পেয়েছে শাকিব খান অভিনীত চলচ্চিত্র ‘তাণ্ডব’। ছবিটি মুক্তির এক সপ্তাহের মধ্যেই পাইরেসির কবলে পড়ে। পাইরেসির পরও দর্শককেরা ছবিটি দেখতে সিনেমা হলে ভিড় করছেন।
বিষয়টি নিয়ে অভিনেতা শাকিব খান বলেন, ‘সিনেমাপ্রেমী মানুষদের, বিদেশে থাকা প্রত্যেক বাংলাদেশিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। একটা সিনেমা একটি কুচক্রী মহল পাইরেটেড কপি ঘরে ঘরে পৌঁছে দিল আর আমার দেশের মানুষ, আমার দেশের দর্শক দাঁতভাঙা জবাব দিয়ে দিল যে আমরা পাইরেটেড কোনো কপি দেখব না। আমরা সিনেমা হলে গিয়েই দেখতে চাই। যারা আমাকে হিডেন ভালোবাসা সব সময় দিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদের প্রতি আমি সব সময়ই কৃতজ্ঞ।’
গতকাল রোববার রাতে ঢাকার স্টার সিনেপ্লেক্সের সনি স্কয়ার শাখায় সিনেমাটির বিশেষ প্রদর্শনীতে অংশ নেন শাকিব খান।
সেখানে শাকিব খান বলেন, ‘আমরা সবাই জানি, সিনেমা হচ্ছে সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম। এটি বিনোদনের মধ্য দিয়ে কৃষ্টিকালচারকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরে। আজকে আমাদের সিনেমা যখন পুরো পৃথিবী ছড়িয়ে যাচ্ছে, একটা হলিউড, বলিউডের সিনেমার সঙ্গে টেক্কা দিয়ে চলছে, সেই সময়ে এসে গতবারও দেখেছি অল্প সময়ের মধ্যেই “বরবাদ” পাইরেসি হয়ে গেছে। “তাণ্ডব” তো এক সপ্তাহের মধ্যেই পাইরেসি হয়ে গেছে। রাফী যে কথাটা বললেন, যে সিনেমা বিশ্বজয় করছে, যে সিনেমা এগিয়ে যাচ্ছে, সেই সিনেমাকে টার্গেট করা হচ্ছে।’
শাকিব খানের ভাষ্য, ‘পাইরেসির বিরুদ্ধে আমরা সবাই সোচ্চার। যেভাবে আপনারা সাপোর্ট করে যাচ্ছেন। যেভাবে পাইরেসি হওয়ার পরও ৪০ থেকে ৫০টি শো হাউসফুল যাচ্ছে; এই যে ভালোবাসা দেখাচ্ছেন, সেই ভালোবাসা দিয়ে কুচক্রী মহলকে রুখতে হবে। প্রতিবাদ করতে হবে যে আমরা আমাদের দেশের চলচ্চিত্রকে ধ্বংস হতে দেব না। আমরা একসঙ্গে আমাদের চলচ্চিত্রকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাব।’
পাইরেসির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে ধন্যবাদ জানিয়ে শাকিব খান বলেন, ‘তারা অল্প সময়ের মধ্যে শক্ত পদক্ষেপ নিয়েছে। গ্রেপ্তার করেছে। মূল হোতাকে বের করতে অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে। যারা দেশের সংস্কৃতির বিরুদ্ধে কাজ করবে, তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াব।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন এসভিএফ আলফা আই এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার শাকিল, চরকির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রেদওয়ান রনি, ছবিটির নির্মাতা রায়হান রাফী ও অভিনেত্রী সাবিলা।
‘তাণ্ডব’ প্রযোজনা করেছে এসভিএফ আলফা আই এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেড। সহপ্রযোজনায় আছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকি। সহযোগিতা করেছে দীপ্ত।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিক হত্যার বিচার দাবিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মানবাধিকার সংগঠনের বিবৃতি
গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনসহ দুই দিনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঁচ ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় নিন্দা ও বিচারের দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সাংবাদিক ও মানবাধিকার সংগঠন। একই সঙ্গে এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে তারা। শুক্রবার পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ও বিবৃতিতে এসব দাবি জানানো হয়।
গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে স্থানীয় সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে (৩৮) কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তুহিন দৈনিক প্রতিদিনের কাগজে গাজীপুরের নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করতেন।
জনগণের নিরাপত্তা রক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার দাবি জানিয়ে গণসংহতি আন্দোলনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গত দুই দিনে পঞ্চগড়, গাজীপুর, নাটোর, মৌলভীবাজার ও সিলেটে পাঁচজনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে, যা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতির বহিঃপ্রকাশ। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যর্থতা। এই ব্যর্থতার দায় সরকার এড়াতে পারে না। অবিলম্বে হত্যাকাণ্ডগুলোর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।’
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘সাংবাদিক আসাদুজ্জামানকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, তাতে আমরা স্তম্ভিত। জুলাই অভ্যুত্থানের পরের বাংলাদেশেও এ রকম নৃশংসতা দেখতে হবে, তা কল্পনাও করা যায় না। সাংবাদিকদের নিরাপত্তা রক্ষায় সামগ্রিকভাবে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধী ও তাদের পেছনে থাকা রাজনৈতিক শক্তিকে আইনের আওতায় আনতে ব্যর্থ হলে গাজীপুরের পুরো পুলিশ ও প্রশাসনকে প্রত্যাহার করতে হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ‘সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতা গণতন্ত্র ও সুশাসনের জন্য বিপজ্জনক সংকেত। মনে রাখতে হবে, চব্বিশের জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের যে পরিণতি, নানা চাপের মধ্যেও তা এগিয়ে নিতে পেরেছেন এই সাহসী সাংবাদিকেরাই। ফলে সাংবাদিকদের ওপর এমন বর্বর হামলা কেবল ব্যক্তি নয়, বরং মুক্ত সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের অধিকারের ওপর সরাসরি আঘাত।’
এ ঘটনায় পুরো সাংবাদিক সমাজ নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে উল্লেখ করে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি সাজ্জাদ আলম খান ও সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘প্রকাশ্য দিবালোকে একজন সাংবাদিককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় পুরো দেশবাসী হতবাক। একটি সভ্য রাষ্ট্রে এমন হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ ঘটনা সাংবাদিকদের নিরাপত্তাহীনতার মুখোমুখি করেছে। গোটা সাংবাদিক সমাজ নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন।’
ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি জানিয়ে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এটি দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তার ওপর সরাসরি হামলা। এ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’