Risingbd:
2025-10-03@08:52:03 GMT

ঝিনুক থেকে চুন

Published: 24th, June 2025 GMT

ঝিনুক থেকে চুন

‘পান খাইতে চুন লাগে’ গানটি শোনেননি এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া কঠিন। পানের সঙ্গে চুনের যুগলবন্দি যুগ-যুগান্তরের। এই চুন ঘিরে আমাদের দেশের মানুষের জীবন ও যাপনের সংস্কৃতিতে গানতো আছেই, আরও আছে এই অঞ্চলের মানুষের বিশ্বাসের প্রতিচ্ছবি।

আমি ছোট বেলায় দেখেছি, কেউ কারও বাড়িতে চুন ধার করতে গেলে চুনকে চুন বলতো না। চুনকে বলতো পান খাওয়ার দই। বা অন্য কিছু। কিন্তু আতিথেয়তায় পানের অনুসঙ্গ হিসেবে চুন দিতেই হতো। পানের পরেই চুনের কদর, এরপরে আসে সুপারির কথা। চুন সাধারণত চার প্রকার হয়— শঙ্খ চুন, ঝিনুক চুন, পাথর চুন, শামুক চুন।

শঙ্খ এবং ঝিনুকের চুনই সাধারণত পানের সঙ্গে খাওয়া হয়। বাকি যে পাথর চুন বা অন্য  চুন বিভিন্ন কাজের ব্যবহৃত হয়। যেমন বিল্ডিংয়ে চুনকাম করার জন্য পাথর চুন ব্যবহার করা হয়। পুকুরের পানি পরিষ্কার করার জন্য চুন ব্যবহার করা হয়। সেগুলো অনেক সময় শামুক থেকে তৈরি করা হয়।

আরো পড়ুন:

বহু বছর ধরে তালাবদ্ধ রাজশাহী কলেজের জাদুঘর

কুমিল্লায় মাটি খুঁড়তেই বেড়িয়ে এলো প্রাচীন স্থাপনা

কারা তৈরি করে: আগে প্রায় প্রতি গ্রামে না হলেও দুই, এক গ্রাম পর পর চুন তৈরির লোকজন পাওয়া যেত। যাদেরকে বলা হতো তাম্বুলী। তখন গ্রাম-গঞ্জের ছোট-বড় জলাশয়ে আগে প্রচুর শামুক ও ঝিনুক পাওয়া যেত। কালক্রমে কৃষিজমিতে অতিরিক্ত সার-কীটনাশক ব্যবহারের ফলে এবং অতিরিক্ত চুন তৈরির কারণে প্রকৃতি থেকে শামুক এবং ঝিনুক হারিয়ে গেছে। 

বর্তমানে প্রাকৃতিকভাবে আর শামুক ও ঝিনুক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বললেই চলে। তাহলে চুন তৈরি হচ্ছে কীভাবে?—বর্তমানে বিভিন্ন খামারে বাণিজ্যিকভাবে মুক্তা চাষ হচ্ছে। ঝিনুক থেকে মুক্তা আহরণ করার পরে স্বাভাবিকভাবেই ওই ঝিনুকটা মারা যায়। মৃত ঝিনুকের খোলসটা চুন তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয়। 
তাম্বুলিরা বিভিন্ন ঝিনুকের খামারিদের কাছ থেকে ঝিনুকের খোলস সংগ্রহ করে থাকে। এগুলোর বেশিরভাগই পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর, যশোর অঞ্চলগুলোতে পাওয়া যায়। কম-বেশি ছয়শো টাকা কেজি দরে তারা কেনে। আগে তারা প্রকৃতি থেকে সংগ্রহ করতো। বলা চলে বিনামূল্যে কাঁচামাল পেয়ে যেতো। ঝিনুক ভেঙে মাঝের অংশটা হাঁসকে খাওয়াতো আর  খোলসটা নিয়ে চুন তৈরি করতো।

চুন বানানোর ধাপ: শামুক, ঝিনুকের খোলস সংগ্রহের পরে এগুলো বিশেষ এক ধরণের চুলায় পোড়াতে হয়। তার আগে পরিষ্কার করে নেয়। তারপর চুলায় পুড়িয়ে ছাইয়ের মতো করে ফেলে। তারপরে চালের গুঁড়ার মতো চেলে নেয়। যে অংশটা পোড়ানোর পরেও ছাই হতো না, সেই অংশ বাদ দেয়। 

ছাইয়ের সঙ্গে পানি মিশিয়ে বেশ কিছুক্ষণ বড় একটা হাতল (বাঁশ বা কাঠের দণ্ড) দিয়ে এটাকে মন্থন করা হয়। ঘুটতে ঘুটতে পানি এবং ঝিঁনুক পোড়া গুঁড়া মিশে মণ্ডের মতো হতো। যতক্ষণ পর্যন্ত সুন্দর মিশ্রণ তৈরি না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত তাড়া এই নাড়াচাড়াটা করতে থাকে। নাড়াচাড়া করতে করতে একটা সময় চুন তৈরি হয়ে যায়। 

এরপর একটি পাতলা কাপড়ে অনেকটা তালের ক্বাথ থেকে পানি ঝরানোর মতো করে পানি ঝরানো হয়। পানি ঝরে গেলেই এই চুন ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়। অনেক সময় তাম্বুলিরা নিজেরাই চুন বিক্রি করে থাকে। আবার অনেক সময় পাইকাররা তাম্বুলিদের কাছ থেকে চুন সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। 
মানুষ, পশু ও পাখির রোগ নিরাময়েও চুনের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে ছিলো। 
মানুষের পেঁট ফাঁপা হলে চুনের পানি খাওয়ানো হতো। চুনের ভেতর পানি দিয়ে রাখা হতো। তারপর যে পানিটা উপরে উঠে আসতো সেই পানিটা খাওয়ানো হতো। 
বোলতা বা মৌমাছি কামড়ালে আক্রান্ত জায়গার চারপাশে চুন লাগিয়ে দেওয়া হতো, এতে ব্যথা কমে যেত। এবং সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যেত।
পশুপাখি আঘাতপ্রাপ্ত হলে ও নির্দিষ্ট জায়গায় হলুদ মিশ্রিত চুন লাগিয়ে দেওয়া হতো। যাতে ব্যথা কমে।

বলা যায়, বাঙালির অবসর- আমোদে, আপ্যায়নে রোগে-নিরোগে চুন ছিল অনেক চেনা ও বহুল ব্যবহৃত এক অনুসঙ্গ।

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবহ র স গ রহ

এছাড়াও পড়ুন:

মেসি-সুয়ারেজদের হারিয়ে প্লে’অফে শিকাগো ফায়ার

দীর্ঘ আট বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে প্লে-অফে জায়গা করে নিল শিকাগো ফায়ার এফসি। বাংলাদেশ সময় বুধবার (০১ অক্টোবর) সকালে দারুণ গোল উৎসবের ম্যাচে ইন্টার মায়ামিকে ৫-৩ গোলে হারিয়ে নিশ্চিত করল তারা ২০১৭ সালের পর প্রথম প্লে-অফ।

শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে শিকাগো। ম্যাচের ১১তম মিনিটেই জ্বলে ওঠেন জে দ’আভিলা। তিনি চমৎকার এক হেডারে এগিয়ে দেন দলকে। এরপর ৩১ মিনিটে দ্রুতগতির পাল্টা আক্রমণ থেকে গোল করেন জনাথন ডিন। ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে একসময় চাপে পড়ে যায় মায়ামি।

আরো পড়ুন:

এমবাপ্পের হ্যাটট্রিকে রিয়ালের বড় জয়

বুসকেটসের অবসর ঘোষণা: এক নিঃশব্দ শিল্পীর শেষ অধ্যায়

তবে ৩৯ মিনিটে টমাস আভিলেস গোল করে ব্যবধান কমান। কিন্তু বিরতিতে যাওয়ার আগেই রোমিং কুওমে গোল করে আবারও দুই গোলে এগিয়ে দেন শিকাগোকে।

দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে মায়ামি পুরোপুরি ভরসা রাখে লুইস সুয়ারেজের অভিজ্ঞতায়। ৫৭ মিনিটে তার গোলেই ব্যবধান দাঁড়ায় ৩-২। এরপর জর্ডি আলবার দুর্দান্ত পাস থেকে ৭৪ মিনিটে সমতায় ফেরান উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার। ম্যাচ তখন দাঁড়িয়ে যায় ৩-৩ এ, আর মনে হচ্ছিল খেলা একেবারেই মায়ামির দিকে হেলে পড়ছে।

কিন্তু শেষ মুহূর্তে নতুন নাটক লিখে শিকাগো। ৮০ মিনিটে জাস্টিন রেইনল্ডস গোল করে আবারও এগিয়ে দেন দলকে। মাত্র তিন মিনিট পর দূরপাল্লার ঝড়ো শটে ব্রায়ান গুতিয়েরেজ নিশ্চিত করেন শিকাগোর স্মরণীয় জয়।

এই জয়ে এমএলএস টেবিলে অষ্টম স্থানে উঠে এসেছে শিকাগো (১৫ জয়, ৬ ড্র, ১১ হার)। অন্যদিকে লিওনেল মেসির মায়ামি (১৬ জয়, ৮ ড্র, ৭ হার) যদিও আগেই প্লে-অফ নিশ্চিত করে রেখেছে। তবে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে গোলশূন্য থাকলেন আর্জেন্টাইন তারকা। আর এই হারের ফলে সাপোর্টার্স শিল্ড জয়ের লড়াইয়ে বড় ধাক্কা খেল মায়ামি। এখন শুধু জয় পেলেই শিরোপা নিশ্চিত করতে পারবে ফিলাডেলফিয়া ইউনিয়ন।

উল্লেখ্য, ম্যাচটি মূলত হওয়ার কথা ছিল ৩০ আগস্টে, কিন্তু লিগস কাপ ফাইনাল খেলতে গিয়ে মায়ামির কারণে তা পিছিয়ে যায়। সেই ম্যাচে সিয়াটলের কাছে ৩-০ গোলে হেরেছিল তারা।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পিস্তল হাতকড়া ওয়াকিটকি নিয়ে জিপ-হাইয়েসে চলে যাওয়া ব্যক্তি কারা
  • চাকরির টাকায় চলছিল না সংসার, মাটি ছাড়া চারা উৎপাদন করে স্বাবলম্বী তাওহিদ
  • সিরাজের বোলিং তোপে দিশেহারা ক্যারিবীয়রা, ভারতের দারুণ শুরু
  • গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার জাহাজে জলকামান ছুড়েছে ইসরায়েলি বাহিনী
  • ম্যাচ পরিত্যক্তর আগে হাবিবুর-সাব্বির ঝড়
  • শেষ ওভারের রোমাঞ্চে ৩ রানের জয় খুলনার
  • মহেশখালীতে পর্যটক টানছে ‘আগুন পান’, কী আছে এতে
  • ভারতের বিষ্ণোই গ্যাংকে কেন কানাডায় ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণা করা হলো
  • ফের মা হতে যাচ্ছেন সোনম কাপুর
  • মেসি-সুয়ারেজদের হারিয়ে প্লে’অফে শিকাগো ফায়ার