মানিকগঞ্জে দোকানিকে মারধরের ভিডিও ফেসবুকে, থানায় অভিযোগ
Published: 24th, June 2025 GMT
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় কম্পিউটার কম্পোজের এক দোকানির দাঁড়ি ধরে টানাহেঁচড়া ও চড়-থাপ্পড়ের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যক্তি মারধরকারীর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। গতকাল সোমবার রাতে উপজেলা সদরে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ওই দোকানির নাম আলী আজম ওরফে মানিক (৩৩)। ঘিওর সদর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তাঁর ‘মানিক কম্পিউটার অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার’ নামে একটি দোকান আছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি নাসিম ভূঁইয়া (৪৫) ঘিওর বাজারে টিনের ব্যবসা করেন। তাঁর বাড়ি উপজেলা সদরের ঘিওর এলাকায়।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, আলী আজম ও নাসিম দুজনেই পূর্বপরিচিত। কম্পিউটারে কম্পোজসহ বিভিন্ন কাজে আজমের দোকানে যেতেন নাসিম। তবে কাজ শেষে ঠিকমতো টাকা দিতেন না। টাকা চাইলে দোকান বন্ধ করে দেবেন বলে ভয়ভীতি ও হুমকি দিতেন। গতকাল রাত নয়টার দিকে দোকানে কাজ করছিলেন আলী আজম। এ সময় নাসিম ভূঁইয়া তাঁর কাছে গিয়ে জরুরি কিছু কাজ করে দিতে বলেন। তবে আলী আজম অন্য লোকজনের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকায় নাসিমকে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নাসিম দোকানি আজমের দাঁড়ি ধরে টানাহেঁচড়া করেন এবং চড়-থাপ্পড় দেন। সেখানে থাকা অন্য লোকজন পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। এরপর ভুক্তভোগীর হাত-পা ভেঙে দেওয়াসহ ব্যবসা করতে দেবেন না বলে হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান।
এ বিষয়ে নাসিম ভূঁইয়া মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ভিডিও চিত্রের আগে ও পরে কী হয়েছে, তা নেই। একটি জমির নামজারির আবেদন লেখাতে ওই দোকানে গিয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ সময় বসিয়ে রাখার পর আজম বলেন, কাজ করতে পারবেন না। এ নিয়ে কথা–কাটাকাটি হয়। পরে আজম তাঁকে বকা দেন। এ কারণে তিনি তাঁকে চড়-থাপ্পড় দেন। তবে তিনি অন্যায় করেছেন বলে স্বীকার করেন।
ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। এ বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছে
প্রযুক্তির উৎকর্ষের মধ্যেও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষেরা বিভিন্নভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে প্রায়ই বিকৃতভাবে বা ভুলভাবে উপস্থাপন করছে। গুগলে ‘ইনডিজেনাস পিপল’ লিখে খোঁজা হলে মাঝেমধ্যে এমন ছবি দেখানো হয়, যা তাদের ‘আদিম’, ‘বন্য’, ‘বর্বর’, ‘জংলি’ ও ‘হিংস্র’ আকারে উপস্থাপন করে।
সোমবার রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এমন অভিযোগ করেন। ‘আদিবাসী নারীর অধিকার রক্ষা ও ভবিষ্যৎ গড়ার লড়াইয়ে আধুনিক প্রযুক্তির ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক।
আলোচনা সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক ফাল্গুনী ত্রিপুরা। তিনি বলেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের ঘিরে এমন উপস্থাপনের প্রভাব নারীদের ওপরও পড়বে।
মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির বলেন, দেশে জাতিসংঘের অনেকগুলো দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হলেও আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালন করা হয় না। তিনি বলেন, বুঝুক আর না বুঝুক বাংলাদেশ জাতিসংঘের বিভিন্ন কনভেনশনকে তড়িঘড়ি করে সমর্থন করে। কিন্তু এই কনভেনশনকে সমর্থন করেনি। সরকার বুঝেশুনেই সমর্থন করেনি। আগের সরকার বলেছে, বাংলাদেশে আদিবাসী নেই, এই সরকারও আদিবাসীদের স্বীকৃতি দিচ্ছে না।
একটাই ধর্ম ও জাতিসত্তা থাকবে, এমন মনোভাব কাম্য নয় উল্লেখ করে এই মানবাধিকারকর্মী বলেন, ‘কিসের ভয়ে আমরা দেশে ভিন্ন ধর্ম, চিন্তা ও জাতিসত্তার মানুষকে থাকতে দেব না? কে অধিকার দিয়েছে যে একটি মাত্র মতবাদ, চিন্তা, ভাষা জাতি ও ধর্ম থাকবে? রাষ্ট্রের জন্য এটা কাম্য হতে পারে না।’
চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে সমতল ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নারীদের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখ করে খুশী কবির বলেন, অভ্যুত্থানের পরে আর নারীদের কোনো অংশগ্রহণ নেই। নারী কমিশন গঠন করা হয়। কিন্তু কমিশনের কোনো কিছু গ্রহণ করা হয়নি। এর অর্থ সরকার নারীদের ভয় পায়। এই অবস্থা টিকে থাকার জন্য অভ্যুত্থান হয়নি। তাই অধিকার আদায়ে নারীদের শক্ত ভূমিকা রাখতে হবে। এখনই উত্তম সময়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির ছবি: প্রথম আলো হেডিং: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছে