গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে গঠিত তদন্ত কমিশনের মেয়াদ আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

রাষ্ট্রপতির আদেশে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদের সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকার কর্তৃক ২০২৪ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর জারি করা প্রজ্ঞাপনে গঠিত গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের মেয়াদ এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত করা হলো। এই সিদ্ধান্ত ১ জুলাই থেকে কার্যকর হিসেবে গণ্য হবে।

পুলিশ, র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), বিশেষ শাখা (এসবি), গোয়েন্দা শাখা (ডিবি), আনসার ব্যাটালিয়ন, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), প্রতিরক্ষা বাহিনী, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), কোস্ট গার্ডসহ দেশের আইন প্রয়োগকারী কোনো সংস্থার সদস্যের মাধ্যমে গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে এই তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়।

কমিশনের সভাপতি হিসেবে আছেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। বাকি সদস্যরা হলেন– হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকারকর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাবিলা ইদ্রিস ও মানবাধিকারকর্মী সাজ্জাদ হোসেন।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

বিতর্কিত ৩ নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ইসিতে বিএনপির অভিযোগ, থানায় মামলা

বিএনপি ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের ভোট পরিচালনাকারী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে।

আজ রোববার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত আবেদন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এম এম নাসিরুদ্দিনের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।

দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন খানের (মামলা ও তথ্য সংরক্ষণ সমন্বয়ক) নেতৃত্বে একটি প্রতনিধি দল আবেদন নিয়ে নির্বাচন কমিশনে আসে। এ সময় কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় বিএনপি নেতাদের মধ্যে মো. মিজানুর রহমান, মো. ইকবাল হোসেন, শরিফুল ইসলাম ও নাঈম হাসান উপস্থিত ছিলেন।

মামলার আবেদনের কপি নিয়ে একটি প্রতিনিধিদল প্রথমে নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়। এরপর তারা  শেরেবাংলা থানায় মামলার আবেদন করবেন বলে জানান বিএনপির সদস্য সালাহ উদ্দিন খান।

তিনি বলেন, ‘বিতর্কিত এই তিন নির্বাচনকে ঘিরে বারবার অভিযোগ করার পরেও তৎকালীন সিইসি ও  সংশ্লিষ্টরা কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি। আমরা আশা করি, বর্তমান নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে ভাইদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে। আমরা বিএনপির মহাসচিবের এ সংক্রান্ত চিঠি জমা দিয়েছি।’

যেহেতু নির্বাচন ভবন আগারগাঁও এলাকায়, সেজন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করা হবে বলে জানান তিনি। আজ সকাল সোয়া ১০ টার দিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে অভিযোগপত্র হস্তান্তর করে প্রতিনিধি দল।

ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ আমলে হওয়া ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে সিইসি, ইসি ও সচিবদের ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠনে অন্তবর্তী সরকারের উদ্যোগের মধ্যে বিএনপির পক্ষ থেকে মামলার পদক্ষেপ এলো।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য হয়ে যান। সেই সংসদকে ‘বিনা ভোটের সংসদ’ আখ্যা দেয় ভোট বর্জন করা বিএনপি।

কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন এ কমিশনে চার নির্বাচন কমিশনার ছিলেন- সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আবু হাফিজ, সাবেক যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ আব্দুল মোবারক, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাবেদ আলী এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা দায়রা জজ মো. শাহনেওয়াজ।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলেও ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ উঠে। অধিকাংশ ভোট আগের রাতে হয়ে যাওয়ার অভিযোগের মধ্যে বিরোধীরা মাত্র সাতটি আসনে জয় পায়। সে নির্বাচনের নাম হয় ‘নীশিরাতের নির্বাচন’।

কেএম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন এ কমিশনের সদস্য ছিলেন সাবেক সচিব রফিকুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার, অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ কবিতা খানম ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী।

২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারিতে বিএনপি ও সমমনাদের বর্জনে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক দেখাতে শরিক ও বিরোধীদল জাতীয় পার্টির জন্য আসন ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের সঙ্গে দলের বিদ্রোহীদের। এ নির্বাচনের নাম হয় ‘আমি আর ডামি’ নির্বাচন।

কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন এ কমিশনে চার নির্বাচন কমিশনার ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ রাশেদা সুলতানা ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান।

২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে। সবশেষ গত ১৬ জুন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে আলোচনা শেষে সরকারপ্রধানের দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে হওয়া ‘বিতর্কিত’ তিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৭৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ইকো কনটেইনার পোর্ট নির্মাণ করতে চায় বিআইডব্লিউটিএ
  • বিতর্কিত ৩ নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ইসিতে বিএনপির অভিযোগ, থানায় মামলা