বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রথম সারির ক্রিকেটার গাজী আশরাফ হোসেন লিপু, ফারুক আহমেদ, মিনহাজুল আবেদীন নান্নুরা। অনেক প্রথমের সাক্ষী হয়ে আছেন তারা। তবে মর্যাদার টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে নেই তাদের নাম। ২০০০ সালে বাংলাদেশ টেস্ট দল হিসেবে স্বীকৃতি পায়। জুনে স্বীকৃতি পাওয়ার পর বাংলাদেশ নভেম্বরে প্রথম টেস্ট খেলে ভারতের বিপক্ষে। যেই দলে ছিলেন হাবিবুল বাশার, নাঈমুর রহমান, আমিনুল ইসলাম, মোহাম্মদ রফিক, মানজারুল ইসলাম ও হাসিবুল ইসলামরা।
দেশের জার্সিতে টেস্ট খেলার সুযোগ পাওয়ায় নিজেদের খুবই ভাগ্যবান মনে করছেন প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম। বুধবার বিসিবি সভাপতি আমিনুল বলেছেন, “আমাদের আগের ক্রিকেটাররা যারা ছিলেন, ফারুক ভাই ছিলেন, আতাহার আলী ভাই ছিলেন, নান্নু ভাই ছিলেন— অনেক ক্রিকেটার ছিল যারা টেস্ট খেলার সুযোগ পায়নি। আমরা ওই সময়টায় নিজেদেরকে ভাগ্যবান মনে করতাম যে প্রথম টেস্টে আমরা খেলতে পেরেছিলাম। যদিও আমাদের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শেষের দিকে ছিলাম, তারপরও আমরা মনে করি ভাগ্যবান।”
টেস্ট খেলার স্বীকৃতি পাওয়ার ২৫ বছর উদযাপন করছে বিসিবি। আজ ঢাকাতে ধানমন্ডির রিয়া গোপ মহিলা কমপ্লেক্সে রজতজয়ন্তী উদযাপনে গিয়েছিলেন আমিনুল। আনন্দময় পরিবেশে শিশু কিশোরদের সঙ্গে ব্যাট বল নিয়ে মেতে উঠেন বিসিবি সভাপতি।
আরো পড়ুন:
ইতিহাস গড়েও হারের গ্লানিতে ভারত, জয়ের রেকর্ড গড়ল ইংল্যান্ড
সৌরভের বায়োপিক: রাজকুমার বললেন, নার্ভাস লাগছে
বৃহস্পতিবার মিরপুর শের ই বাংলা স্টেডিয়ামে একসঙ্গে হবেন বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট ম্যাচ খেলা ক্রিকেটাররা। তাঁদের দেওয়া হবে বিশেষ ব্লেজার ও সম্মাননা। যেখানে উপস্থিত থাকতে দাওয়াত দেয়া হয়েছে প্রথম টেস্ট অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয়কে। যিনি বিসিবির পরিচালক ছিলেন, হয়েছিলেন সংসদ সদস্যও। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আড়ালে চলে গিয়েছেন। তাঁকে নিয়ে আমিনুল বলেছেন, ‘‘দাওয়াতও দিয়েছে, কলও করা হয়েছে।’’ তবে দুর্জয় আসবেন না জানিয়ে দিয়েছেন, “সেই স্কোয়াডে যারা এভেইলেবল আছে, সবাইকে কালকে আমাদের ক্রিকেট বোর্ডে দাওয়াত দিয়েছি। মূলত আমাদের পূর্বের সেই ২৫ বছরের স্মৃতিতে ফিরে যাওয়া। আমাদের সেই ক্রিকেটের বন্ধুত্ব, যাতে অটুট থাকে এবং তাদেরকে সম্মাননা জানানো।”
দেশজুড়ে নানা আয়োজনে রজতজয়ন্তী উদ্যাপনের দুটি কারণও ব্যাখ্যা করেছেন আমিনুল, ‘‘প্রোগ্রামটা আমরা দুইটা কারণে করেছি, একটা হচ্ছে টেস্ট ক্রিকেটের ২৫ বছর উদ্যাপন। আরেকটা হচ্ছে দেশব্যাপী বহু জায়গায় ক্রিকেট ঘুমিয়ে ছিল, তাদের একটা ওয়াকআপ কল দেওয়া। এটা আমরা অত্যন্ত সফলভাবে করতে পেরেছি।’’
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রথম ট স ট ন আম ন ল ল ইসল ম আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
পূজার ছুটিতেও পর্যটকশূন্য খাগড়াছড়ি
সাপ্তাহিক ছুটিসহ দুর্গাপূজা উপলক্ষে টানা চার দিনের ছুটি উপভোগ করছেন সরকারি চাকরিজীবীসহ অনেকে। আনন্দমুখর পরিবেশে ছুটি উপভোগ করতে অনেকেই ভ্রমণ করছেন পর্যটন স্পটগুলোতে। তবে, পর্যটকশূন্য রয়েছে বাংলাদেশের অন্যতম ভ্রমণ গন্তব্য খাগড়াছড়ি।
সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে এক স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে জুম্ম ছাত্র-জনতা নামের একটি সংগঠন। খাগড়াছড়ি সদর ও গুইমারা উপজেলায় বিক্ষোভ চলাকালে ব্যাপক সহিংসতা হয়। পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর সঙ্গে বাঙালিদের সংঘর্ষও হয়। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় সহিংসতাকবলিত এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। এর প্রভাব পড়েছে পর্যটনেও। পূজার ছুটিতে পার্বত্য অঞ্চলের অন্যান্য জেলাতে পর্যটকদের ঢল নামলেও খাগড়াছড়িতে তা নেই।
অন্যান্য বছর পূজার ছুটিতে খাগড়াছড়ির পর্যটন স্পটগুলো জমজমাট থাকলেও এ বছর হয়েছে তার উল্টো। পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গুটি কয়েক মানুষ ছাড়া তেমন পর্যটক নেই খাগড়াছড়ির স্পটগুলোতে। পর্যটননির্ভর ব্যবসায়ীরা এখন অলস সময় পার করছেন। সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে ঘটে যাওয়া সহিংসতার কারণে এ জেলায় পর্যটকদের আগমন কমেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন পর্যটননির্ভর ব্যবসায়ীরা।
খাগড়াছড়ির মূল আর্কষণ আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্র। সেখান থেকে দেখা যায় পুরো খাগড়াছড়ি শহর ও শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া আঁকাবাঁকা চেঙ্গী নদীর মনোরম দৃশ্য এবং এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ের সৌন্দর্য। সেই পর্যটন স্পটে এখন হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া পর্যটক নেই। খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ হর্টিকালচার পার্কেও পর্যটকের আনাগোনা খুবই কম।
ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা মো. ইসমাইল হোসেন ও চট্টগ্রাম থেকে আসা নিলুফার জাহান বলেছেন, পাহাড়ের মনোরম দৃশ্য দেখে তারা খুশি। কিন্তু, পর্যটক কম থাকায় তাদের ভালো লাগছে না।
পর্যটন ব্যবসায়ী টিটু চাকমা জানিয়েছেন, পর্যটক না আসায় তার প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা অলস সময় কাটাচ্ছেন।
হোটেল গাইরিংয়ের ম্যানেজার প্রান্ত বিকাশ ত্রিপুরা ও অরণ্য বিলাসের ম্যানেজার আব্দর রশিদ সাগর জানিয়েছেন, পূজার ছুটিতে তাদের হোটেলের ৮৫ ভাগ সিট বুকিং ছিল। কিন্তু, সহিংস পরিস্থিতির কারণে বুকিং বাতিল করছেন পর্যটকরা।
খাগড়াছড়ি পর্যটন মোটেলের অভ্যর্থনা ব্যবস্থাপক মো. সুজনুর রহমান সাগর জানিয়েছেন, তাদের যা বুকিং ছিল, সব বাতিল করেছেন পর্যটকরা। আশা ছিল, পূজার ছুটিতে ভালো ব্যবসা হবে। সহিংসতার কারণে তাদের প্রচুর ক্ষতি হলো।
পর্যটন খাতকে হরতাল, অবরোধের আওতামুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আশ্বস্ত করেছেন যে, পর্যটকরা এলে তাদের নিরাপত্তার দেওয়া হবে।
খাগড়াছড়িতে এখনো ১৪৪ ধারা বলবৎ আছে। জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার জানিয়েছেন, পরিস্থিতি আরো স্বাভাবিক হলে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হবে।
ঢাকা/রফিক