শিশুদের ঝগড়া নিয়ে সালিশে সংঘর্ষ, বাড়িঘর ভাঙচুর
Published: 25th, June 2025 GMT
কেশবপুরে শিশুদের ঝগড়া নিয়ে সালিশ পছন্দ না হওয়ায় সংঘর্ষে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতিসহ দু’জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজিত জনতা প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর করেছে। গত মঙ্গলবার রাতে পাঁজিয়া ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, গত সোমবার বিকেলে কমলাপুর গ্রামের সাদ্দাম হোসেনের মেয়ে তাসলিমা খাতুন ও প্রতিবেশী আমিনুর রহমান দফাদারের ছেলে শিহাব হোসেন বাড়ির আঙিনায় খেলছিল। এ সময় দু’জনের মধ্যে ঝগড়া হয়। বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির নেতাদের ঘটনা জানালে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে সমাধানের আশ্বাস দেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর কমলাপুর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এবাদুল শেখের সভাপতিত্বে এলাকার শহিদুল ইসলামের চায়ের দোকানের সামনে সালিশ বৈঠক বসে মীমাংসার চেষ্টা করেন মাতবররা। সালিশের সিদ্ধান্ত আমিনুর রহমান দফাদারের বিপক্ষে যাওয়ায় তিনি উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে সালিশের সভাপতি এবাদুল শেখকে ‘ঘুষ খেয়ে বিচার করছিস’ বলেই পেছন থেকে লাথি মেরে ফেলে দেন এবং তাঁর কাছে থাকা ছুরি দিয়ে আঘাত করতে যান।
এ সময় তাঁর পাশে থাকা ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য তুহিন মোড়ল ঠেকাতে গেলে ওই ছুরির আঘাত তাঁর বুকের বাঁ পাশে লেগে জখম হয়। সালিশের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন চিকিৎসক। ওই রাতেই সালিশে উপস্থিত জনতা উত্তেজিত হয়ে আমিনুর রহমান ও তাঁর বাবা আব্দুস সালাম দফাদারের বসতঘরে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। এরপর থেকে তারা গা ঢাকা দিয়েছেন।
পাঁজিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মকবুল হোসেন মুকুল জানান, আহত ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এবাদুল শেখ প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য তুহিন মোড়লের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বুধবার (গতকাল) বিকেলে তাঁর অপারেশন হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আনোয়ারুল ইসলামের ভাষ্য, তুহিন মোড়ল নামে একজনকে এখানে আনা হয়েছিল। তাঁর বুকের বাঁ পাশে ছুরিকাঘাতের গভীর ক্ষত রয়েছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কেশবপুর থানার এসআই আসমত আলী বলেন, কমলাপুরে মারামারির ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। ওসি এসে অভিযোগটি দেখে দিলে তারপর
মামলা হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়কে ঘিরে আতঙ্ক নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়কে ঘিরে দেশে কোনো আতঙ্ক নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, সবকিছু স্বাভাবিক। সড়কে কোনো আতঙ্ক নেই। তবে ছোটখাটো দু-একটা ঘটনা ঘটছে।
আজ সোমবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, বরিশাল, মাদারীপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ কিছুটা কঠিন জায়গা। তবে ওই সব জেলায় এখন পর্যন্ত বড় কোনো ঘটনা ঘটেনি। শুধু করাত দিয়ে গাছ কেটে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হচ্ছে। বড় গাছ হওয়ায় সরাতে সময় লাগে। মহাসড়ক থেকে সরাতে সময় লাগছে। রায়কে ঘিরে কেউ কেউ ককটেল ফাটাচ্ছে। যারা ফাটাচ্ছে তারা ধরা পড়ছে।
শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙতে যাওয়া বিক্ষোভকারীদের বিষয়ে উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপদেষ্টা বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বলা দরকার যে তোমরা স্কুল–কলেজে পড়াশোনা করো। এটা দেখার জন্য আমরা আছি। আমরা দেখব।’ উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষার্থীদের অনেকে উসকে দেয়। সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেই ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা সদস্য পাঠানো হয়েছে।
শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতকে আবার চিঠি দেওয়া হবে কি না, জানতে চাইল উপদেষ্টা বলেন, ‘দরকার পড়লে ভারতকে আমরা আবার চিঠি দেব।’
মানুষ, পুলিশ ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল নিক্ষেপকারীদের গুলি করতে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী যে নির্দেশ দিয়েছেন, এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আত্মরক্ষার জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, নিজে বিপদে থাকলে গুলি পরিচালনা করার অধিকার প্রতিটি নাগরিকের আছে।