অনিয়ন্ত্রিত গতির ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ক্যাম্পাসে বন্ধ করা হয়েছিল অবৈধ যানটির চলাচল। ‘যাতায়াতে ভোগান্তির’ কারণে এখন সেই অটোরিকশাই ফেরানোর দাবি তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী। গতকাল বুধবার এ দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিভিন্ন বিভাগের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অবস্থান নেন। ভবনের মূল ফটকে তালাও দেন তারা। 

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, গত বছরের ১৯ নভেম্বর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় ৫৩ ব্যাচের ছাত্রী আফসানা করিম রাচির মৃত্যু হয়। এর পর শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ক্যাম্পাসে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। এর পর থেকে ক্যাম্পাসে শুধু প্যাডেলচালিত রিকশা চলছে। তবে তা শিক্ষার্থীদের চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। এর মধ্যে যাতায়াতে ভোগান্তি কমাতে গত ১৩ এপ্রিল চারটি এবং পরবর্তী সময়ে আরও চারটি ইলেকট্রিক কার্ট চালু করে প্রশাসন। তবে এতেও সমস্যার সমাধান হয়নি। 

সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী শাশ্বত প্রামাণিক বাবাই বলেন, সব শিক্ষার্থীর ভোগান্তির কথা ভেবেই আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি। বর্তমানে ক্লাসে যাওয়া-আসা থেকে শুরু করে অধিকাংশ সময়ই শিক্ষার্থীরা রিকশা পান না। এমনকি অসুস্থ হলেও যানবাহন পাওয়া যায় না। শুধু প্যাডেলচালিত রিকশা থাকায় ভাড়াও বেশি দিতে হয়। আর ইলেকট্রিক কার্ট প্রয়োজনের সময় পাওয়া যায় না বললেই চলে। এ কারণে আমার ক্যাম্পাসে ফের অটোরিকশা চালুর দাবি জানিয়েছি।

একই বিভাগের শিক্ষার্থী রাব্বি হোসেন বলেন, রাঁচির মৃত্যুতে অটোরিকশার গতি নিয়ন্ত্রণ এবং আসামির শাস্তি নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার ছিল। কিন্তু প্রশাসন শুধু অটোরিকশা বন্ধ করেই দায় সেরেছে। শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে উপাচার্যকে জানানো হয়েছে। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে একটি কমিটি করে এই সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। 

এদিকে আন্দোলনের এক পর্যায়ে প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটকে শিক্ষার্থীরা তালা ঝুলিয়ে দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েন। এ ছাড়া উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসা কমনওয়েলথ গুড অফিসেস সেকশন গভর্ন্যান্স অ্যান্ড পিস ডিরেক্টরেটের উপদেষ্টা মিশেল স্কোবি আটকে পড়েন বলে জানা গেছে। 

এ বিষয়ে আন্দোলনকারীদের দাবি, কমনওয়েলথের প্রতিনিধি আসার পর তালা খুলে দেওয়া হয়। বের হওয়ার সময়ও তালা খোলা হয়। এ সময় কিছুটা সময়ক্ষেপণ হয়েছে শুধু। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়কে ঘিরে আতঙ্ক নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়কে ঘিরে দেশে কোনো আতঙ্ক নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, সবকিছু স্বাভাবিক। সড়কে কোনো আতঙ্ক নেই। তবে ছোটখাটো দু-একটা ঘটনা ঘটছে।

আজ সোমবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, বরিশাল, মাদারীপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ কিছুটা কঠিন জায়গা। তবে ওই সব জেলায় এখন পর্যন্ত বড় কোনো ঘটনা ঘটেনি। শুধু করাত দিয়ে গাছ কেটে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হচ্ছে। বড় গাছ হওয়ায় সরাতে সময় লাগে। মহাসড়ক থেকে সরাতে সময় লাগছে। রায়কে ঘিরে কেউ কেউ ককটেল ফাটাচ্ছে। যারা ফাটাচ্ছে তারা ধরা পড়ছে।

শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙতে যাওয়া বিক্ষোভকারীদের বিষয়ে উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপদেষ্টা বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বলা দরকার যে তোমরা স্কুল–কলেজে পড়াশোনা করো। এটা দেখার জন্য আমরা আছি। আমরা দেখব।’ উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষার্থীদের অনেকে উসকে দেয়। সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেই ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা সদস্য পাঠানো হয়েছে।

শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতকে আবার চিঠি দেওয়া হবে কি না, জানতে চাইল উপদেষ্টা বলেন, ‘দরকার পড়লে ভারতকে আমরা আবার চিঠি দেব।’

মানুষ, পুলিশ ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল নিক্ষেপকারীদের গুলি করতে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী যে নির্দেশ দিয়েছেন, এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আত্মরক্ষার জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, নিজে বিপদে থাকলে গুলি পরিচালনা করার অধিকার প্রতিটি নাগরিকের আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ