মাদারীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব মাসুম বিল্লাহকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মাদারীপুর জেলা ও সদর উপজেলা সমন্বয় কমিটি স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত দুইটার দিকে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে মাদারীপুর জেলা কমিটির ৫ নম্বর সদস্য আবদুল্লাহ আদিল (টুটুল) ও ৬ নম্বর সদস্য রাতুল হাওলাদারকে সংগঠনের সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত আসে কমিটি স্থগিত ঘোষণার ঠিক আধা ঘণ্টা আগে।

দুটি পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মাদারীপুর জেলা ও সদর উপজেলা সমন্বয় কমিটির কার্যক্রম স্থগিতের অনুমোদন দিয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন এবং দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। পরে কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেনের নির্দেশনায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

বিষয়টি জানতে চাইলে মাদারীপুর জেলা কমিটির সদ্য স্থগিত হওয়া যুগ্ম সমন্বয়কারী মো.

হাসিবুল্লাহ বলেন, অপরাধী যে–ই হোক, তার বিচার হওয়া উচিত। তবে কাউকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আওয়ামী ট্যাগ দিয়ে হেয় করা ঠিক নয়। ওই দুই নেতা ৫ আগস্টের আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।

এদিকে মাসুম বিল্লাহকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা অভিযোগ করেছেন, এনসিপির কমিটি গঠন নিয়ে মো. হাসিবুল্লাহর সঙ্গে মাসুম বিল্লাহর বিরোধ সৃষ্টি হয়। কমিটিতে মাসুম বিল্লাহ ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের স্থান না দেওয়ায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

জানা গেছে, সদ্য গঠিত ৩১ সদস্যের জেলা কমিটি প্রত্যাখ্যান করেন মাসুম বিল্লাহ, আহ্বায়ক নেয়ামত উল্লাহসহ অনেকে। পরে তাঁরা ২৬ সদস্যের পৃথক উপজেলা কমিটি গঠন করেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বুধবার বিকেলে ভূঁইয়া কমিউনিটি সেন্টারে এনসিপির কর্মিসভায় যোগ দেন মাসুম বিল্লাহ। সভায় উপস্থিতির পরপরই এনসিপির কয়েকজন সদস্য তাঁর ওপর হামলা চালান। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে মাদারীপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সদস যসচ ব এনস প র ক য় কম ট র র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে ফ্যাসিবাদ তৈরি হবে না: রেজাউল

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘‘আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ তৈরি হবে না। জবাবদিহিমূলক সরকার কায়েম হবে। একটি সুন্দর দেশ গঠন হবে।’’ 

আজ মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৩টায় মাগুরা শহরের নোমানী ময়দানে প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার, গণহত্যার বিচার, সংখ্যা অনুপাতিক পিয়ার পদ্ধতিতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দাবি এবং ইসলাম, দেশ ও মানবতাবিরোধী ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের প্রতিবাদে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মাগুরা শাখা আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। 

সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘‘জবাবদিহিতার অভাবে ফ্যাসিবাদ তৈরি হয়। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে ক্ষমতায় কেন্দ্রীয়করণ হ্রাস পাবে  এবং সংলাপের সংস্কৃতি সৃষ্টি হবে। তাছাড়া প্রতিটি ভোটের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত হবে। সকল দল-মতের প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার তৈরি হবে।’’ 

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও মাগুরা জেলা সভাপতি মুফতি মোস্তফা কামাল। সঞ্চালনায় ছিলেন সেক্রেটারি হাফেজ মনিরুজ্জামান।

সমাবেশে পীর সাহেব চরমোনাই আরো বলেন, ‘‘১৫ বছর ফ্যাসিবাদের বিষাক্ত ছোঁয়া দেশকে এখনো অনিরাপদ রেখেছে। তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ দলের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সমালোচনা ও মন্তব্য করতে শিষ্টাচারের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। কোনো অবস্থায় ফ্যাসিবাদের সুযোগ করে দেয়া যাবে না।’’  

চরমোনাই আমীর বলেন, ‘‘৫ আগস্টের পর রাষ্ট্র সংস্কারে ঐক্যমত তৈরি হয়েছে। সেই সংস্কার হবে হবে রাষ্ট্রের কাঠামোতে, আইনে এবং রাজনৈতিক দলের চরিত্র ও সংস্কৃতিতে।’’  

সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাগুরা জেলার সহ-সভাপতি ও মাগুরা-১ আসনে দলের সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা নাজিরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মাওলানা মশিউর রহমান প্রমুখ।  

ঢাকা/শাহীন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ