এনামুল হক বিজয়ের অভিযোগ, লিগে বছরের পর বছর ভালো খেললেও তাঁকে নিয়মিত জাতীয় দলে দেওয়া হয় না। উপেক্ষার শিকার এই ‘দুঃখী’ ক্রিকেটারের প্রতি হঠাৎই সদয় হয়ে ওঠে গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর নির্বাচক প্যানেল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে দলে নেওয়া হয় বিজয়কে। ক্যারিয়ার-সেরা ৩৯ রানের ইনিংসও খেলেন তিনি।
ওই ইনিংস দিয়েই জাতীয় দলে টিকে গেছেন বিজয়। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চলমান টেস্ট স্কোয়াডে নেওয়া হয় তাঁকে। মাত্র দু’জন ওপেনার দিয়ে সাজানো হয় ১৬ জনের স্কোয়াড। বিকল্প ওপেনার না থাকায় ব্যর্থ বিজয়কে সুযোগ দিতে বাধ্য হয় টিম ম্যানেজমেন্ট। ফলে গলের মতো কলম্বো টেস্টেও ১০ বল খেলে জীবন পেয়ে শূন্যতে আউট হন তিনি।
এই পারফরম্যান্সের পর বিজয়ের টেস্ট ব্যাটিং সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জাতীয় দলের সাবেক প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু জানান, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভালো করার সক্ষমতা নেই বিজয়ের। তাই লিগে হাজার রান করলেও ৩২ বছর বয়সী এ ব্যাটারকে জাতীয় দলে নিতে রাজি হতেন না তারা।
আট টেস্টে একটিও ভালো ইনিংস নেই। গড় ১০.
প্রশ্ন উঠেছে, ১৬ জনের স্কোয়াডে বিকল্প ওপেনার না রাখায়। সমর্থকরা বলাবলি করছেন, বিজয়কে ম্যাচ খেলার সুযোগ করে দিতেই তৃতীয় ওপেনার নেওয়া হয়নি। সমর্থকদের এই অনুমান প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে নান্নু বলেন, ‘নির্বাচক প্যানেল এ ব্যাপারে ভালো বলতে পারবে।’
বিসিবির আগের সাবেক নির্বাচক ও অধিনায়ক হাবিবুল বাশারের মতো টেস্ট দলে বিজয়কে নেওয়ার প্রক্রিয়াটাই ছিল ভুল। তিনি বলেন, ‘বিজয়কে নেওয়াই ভুল ছিল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে তিনজন ওপেনার ছিল, দ্বিতীয় টেস্টে রিজার্ভে থাকা ব্যাটারকে না খেলিয়ে বিজয়কে বাইরে থেকে নিয়ে ম্যাচ খেলানো হয়। এবার শ্রীলঙ্কা সফরে দুই টেস্টের সিরিজে দুইজন ওপেনার নিয়ে গেছে। টেস্ট ম্যাচে মেকশিফট ব্যাটার খেলাতে পারবেন না। ওয়ানডে হলে মিরাজকে দিয়ে ওপেন করতে পারে। আল্লাহ না করুক, টেস্ট ওপেনে কেউ ইনজুরড হলে মিডলঅর্ডার ব্যাটারদের খেলাতে হতো। মাহিদুল ইসলাম অংকন বা নাজমুল হোসেন শান্ত তো ওপেনার না। প্রথমে ভুল করায় বিজয়কে দ্বিতীয় ম্যাচে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে নেওয়ার আগে চিন্তা করা উচিত।’
নান্নু-বাশার দু’জনেই মনে করেন, তুষার ইমরানের মতো বিজয়ও ঘরোয়া লিগের ক্রিকেটার। তাঁর মতে, ‘তুষার ইমরানও অনেক রান করত। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ছিল না। তারা ঘরোয়া ক্রিকেটটা বোঝে, আন্তর্জাতিকে পারে না। কারণ, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অনেক কঠিন। তাই বলে লিগের দোষ না। কারণ ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেই তো সাকিব, তামিম, মাশরাফি, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকরা জাতীয় দলে গেছে। লিটন, মুস্তাফিজ, তাসকিনদের উত্থানও ঘরোয়া ক্রিকেট। সমস্যা মূলত বিজয়ের।’ তারা মনে করেন, জাতীয় দলে নেওয়ার আগে খেলোয়াড়ের সক্ষমতা বোঝা জরুরি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ত য় দল র ন কর ব জয় র ব জয়ক ন করত
এছাড়াও পড়ুন:
শিশু হাফসা হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, আরেক আসামি গ্রেপ্তার
পাবনা পৌর সদরের উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া এলাকায় ৯ বছরের শিশু শিক্ষার্থী হাফসা হত্যার ঘটনায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) দায়ের করা মামলায় আরো এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মামলার নামীয় তিন আসামিকেই গ্রেপ্তার হলো।
গ্রেপ্তাররা হলেন, পাবনা পৌর সদরের উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া মহল্লার টিপু সরদারের ছেলে সাব্বির সরদার (২৬), ছবেদ আলীর ছেলে রমজান আলী (৩০) ও খালেক সরদারের ছেলে পান্না সরদার (২৮)। এদের মধ্যে সাব্বির ও রমজানকে রবিবার এবং পান্নাকে সোমবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
আরো পড়ুন:
‘আবর্জনার মতো লাগে’ বলে অর্ধশত বকুলগাছ কাটা সেই ব্যক্তি গ্রেপ্তার
বরগুনায় নাশকতার অভিযোগে ৩ আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার
এদিকে, শিশু হাফসাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্য করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ।
পাবনা সদর থানার ওসি (অপারেশন) সঞ্জয় কুমার সাহা এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নিহত হাফসার মা রিতু খাতুন বাদী হয়ে সোমবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনজন নামীয়সহ অজ্ঞাতনামা আরো অনেককে আসামি করা হয়েছে।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার দুপুরে পাবনা টেক্সটাইল কলেজ এলাকা থেকে অভিযুক্ত পান্না সরদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে মামলার প্রধান অভিযুক্ত নামীয় তিন আসামিকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে, শিশু হাফসা হত্যার প্রতিবাদে ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
সোমবার (১৬ নভেম্বর) সকালে উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে জেলা প্রশাসক কর্যালয়ের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে তারা। সেখানে নিহত শিশু শিক্ষার্থী হাফসার স্বজন ও এলাকাবাসী বক্তব্য দেন।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে তারা মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভ শেষে তারা আসামিদের গ্রেপ্তার করতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। অন্যত্থায় আরো কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দেন।
এ সময় প্রায় ১ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে সদর থানার ওসি আব্দুস সালাম ঘটনাস্থলে গিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা।
এর আগে, শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে শিশু হাফসাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তার সন্ধান চেয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয়। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে প্রায় ২ ঘণ্টা পর রাত ৮টার দিকে বাড়ির পেছনের জঙ্গলের ভেতর পাটিতে মোড়ানো কাদা মাখা অবস্থায় হাফসার মরদেহ পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় রাতেই সন্দেহভাজন হিসেবে রমজান ও সাব্বির নামের দুইজনকে আটক করা হয়।
নিহত হাফসা সদর উপজেলার মালঞ্চি ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের প্রবাসী হাফিজুর রহমানের মেয়ে এবং স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
হাফসার নানার বাড়ির পাশের বাগানটি দীর্ঘদিন ধরে বখাটে, মাদকসেবী ও জুয়ারুদের আড্ডাস্থল ছিল বলে জানায় স্থানীয়রা। তারা এ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পাবনা সদর থানার ওসি (অপারেশন) সঞ্জয় কুমার সাহা বলেন, “মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদনে শিশু হাফসাকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। ধর্ষণের পর তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। এছাড়া পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতিয়মান হয়েছে।”
ঢাকা/শাহীন/মেহেদী