চলচ্চিত্র নির্মাতা সাদেক সিদ্দিকী পরিচালিত ‘দেনা পাওনা’ সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন বর্তমান সময়ের উদীয়মান অভিনেত্রী ও মডেল এঞ্জেলিনা জাস মান্নাত। ২০২২-২৩ অর্থবছরের সরকারি অনুদানে নির্মিত এই সিনেমাটির চিত্রায়ণ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।

মান্নাত জানান, তিনি গতকালই সিনেমাটিতে কাজ করার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন এবং খুব শিগগিরই শুটিংয়ে অংশ নেবেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কালজয়ী ছোটগল্প ‘দেনা পাওনা’ অবলম্বনে নির্মিত হচ্ছে এই চলচ্চিত্র। চিত্রনাট্য করেছেন পরিচালক নিজেই, সংলাপ ও চিত্ররূপ দিয়েছেন মিরণ মহিউদ্দিন।

সিনেমার কাহিনি আবর্তিত হয়েছে একটি গ্রামীণ মধ্যবিত্ত পরিবারকে ঘিরে, যেখানে রয়েছে পাঁচ ছেলে, তাদের পাঁচ বউ, একমাত্র মেয়ে ও দুই নাতনি। পাশের গ্রামের এক জমিদারপুত্র ভালোবেসে ফেলে ওই মেয়েটিকে, এবং শেষমেশ তাদের বিয়ে হয়। তবে পণের টাকা নিয়ে দেখা দেয় অশান্তি, যা গড়ায় এক ট্র্যাজিক পরিণতিতে— মেয়েটির মৃত্যু। এই বিয়ের প্রেক্ষাপটে উঠে আসে পরিবারের প্রতিটি সদস্যের ব্যক্তিত্ব, পারস্পরিক টানাপড়েন এবং গ্রামের নারীদের হাসি-কান্না মিলিয়ে এক বাস্তবধর্মী চিত্র।

এই সিনেমায় ‘দ্বিতীয় বউ’ চরিত্রে অভিনয় করছেন মান্নাত। তার ভাষায়, “এই চরিত্রটা বেশ চ্যালেঞ্জিং। বাইরে থেকে কঠিন, কিছুটা খিটখিটে স্বভাবের মনে হলেও, ভিতরে সে অনেক নরম মনের। স্বামীর সঙ্গে প্রায়ই খুনসুটি ও খটমট চলে।”

সিনেমাটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করছেন ইমন এবং দীঘি। এঞ্জেলিনা জাস মান্নাত শোবিজে যাত্রা শুরু করেন মডেলিংয়ের মাধ্যমে। এরপর নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করে নিজেকে এগিয়ে নিচ্ছেন নিয়মিত। বর্তমানে তার হাতে কয়েকটি নাটকের কাজ থাকলেও বড়পর্দাই তার মূল লক্ষ্য। জানান, এরই মধ্যে আরও কয়েকটি সিনেমার বিষয়ে আলোচনা চলছে।

ঢাকা/রাহাত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

শিশু হাফসা হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, আরেক আসামি গ্রেপ্তার

পাবনা পৌর সদরের উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া এলাকায় ৯ বছরের শিশু শিক্ষার্থী হাফসা হত্যার ঘটনায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) দায়ের করা মামলায় আরো এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মামলার নামীয় তিন আসামিকেই গ্রেপ্তার হলো।

গ্রেপ্তাররা হলেন, পাবনা পৌর সদরের উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া মহল্লার টিপু সরদারের ছেলে সাব্বির সরদার (২৬), ছবেদ আলীর ছেলে রমজান আলী (৩০) ও খালেক সরদারের ছেলে পান্না সরদার (২৮)। এদের মধ্যে সাব্বির ও রমজানকে রবিবার এবং পান্নাকে সোমবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

আরো পড়ুন:

‘আবর্জনার মতো লাগে’ বলে অর্ধশত বকুলগাছ কাটা সেই ব্যক্তি গ্রেপ্তার

বরগুনায় নাশকতার অভিযোগে ৩ আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার 

এদিকে, শিশু হাফসাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্য করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ।

পাবনা সদর থানার ওসি (অপারেশন) সঞ্জয় কুমার সাহা এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নিহত হাফসার মা রিতু খাতুন বাদী হয়ে সোমবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনজন নামীয়সহ অজ্ঞাতনামা আরো অনেককে আসামি করা হয়েছে।

তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার দুপুরে পাবনা টেক্সটাইল কলেজ এলাকা থেকে অভিযুক্ত পান্না সরদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে মামলার প্রধান অভিযুক্ত নামীয় তিন আসামিকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

এদিকে, শিশু হাফসা হত্যার প্রতিবাদে ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।

সোমবার (১৬ নভেম্বর) সকালে উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে জেলা প্রশাসক কর্যালয়ের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে তারা। সেখানে নিহত শিশু শিক্ষার্থী হাফসার স্বজন ও এলাকাবাসী বক্তব্য দেন।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে তারা মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভ শেষে তারা আসামিদের গ্রেপ্তার করতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। অন্যত্থায় আরো কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দেন।

এ সময় প্রায় ১ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে সদর থানার ওসি আব্দুস সালাম ঘটনাস্থলে গিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা।

এর আগে, শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে শিশু হাফসাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তার সন্ধান চেয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয়। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে প্রায় ২ ঘণ্টা পর রাত ৮টার দিকে বাড়ির পেছনের জঙ্গলের ভেতর পাটিতে মোড়ানো কাদা মাখা অবস্থায় হাফসার মরদেহ পাওয়া যায়।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় রাতেই সন্দেহভাজন হিসেবে রমজান ও সাব্বির নামের দুইজনকে আটক করা হয়।

নিহত হাফসা সদর উপজেলার মালঞ্চি ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের প্রবাসী হাফিজুর রহমানের মেয়ে এবং স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

হাফসার নানার বাড়ির পাশের বাগানটি দীর্ঘদিন ধরে বখাটে, মাদকসেবী ও জুয়ারুদের আড্ডাস্থল ছিল বলে জানায় স্থানীয়রা। তারা এ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পাবনা সদর থানার ওসি (অপারেশন) সঞ্জয় কুমার সাহা বলেন, “মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদনে শিশু হাফসাকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। ধর্ষণের পর তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। এছাড়া পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতিয়মান হয়েছে।”

ঢাকা/শাহীন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ