ফেরদৌসী রহমানের জন্মদিনে ভিন্ন রকম আয়োজন
Published: 27th, June 2025 GMT
বরেণ্য সংগীতশিল্পী ফেরদৌসী রহমানের জন্মদিন আগামীকাল। যদিও অনেক বছর ধরে আলাদা করে জন্মদিন উদযাপন করতে দেখা যায়নি তাঁকে। ভক্ত-অনুরাগীদের শুভেচ্ছা আর ভালোবাসায় সিক্ত হওয়ার পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাতে দেখা গেছে তাঁকে। এবার শিল্পীর পক্ষ থেকে তাঁর ৮৫তম জন্মদিনে ভিন্ন ধরনের আয়োজন করছে চ্যানেল আই।
আগামীকাল ২৮ জুন সংগীতজ্ঞ ফেরদৌসী রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে চানেল আই প্রচার করবে ‘তারকাকথন’ অনুষ্ঠানের বিশেষ পর্ব। সেখানে তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছায় অভিষিক্ত করবেন চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ। তাঁকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন ‘এসো গান শিখি’ অনুষ্ঠানের প্রিয় দুই মুখ মিঠু ও মন্টি। তাদের সঙ্গে থাকবে একদল নতুন প্রজন্মের শিশু।
এছাড়াও শুভেচ্ছা জানাবেন ‘এসো গান শিখি’র প্রযোজক মেনোকা হাসান এবং এই প্রজন্মের কণ্ঠশিল্পী কনা। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করবেন সানজিদা, প্রযোজনায় অনন্যা রুমা। ‘তারকাকথন’ প্রচার হবে দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে। ফেরদৌসী রহমানের কথায়, ‘‘শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে জন্মদিনে তেমন কিছু করা হয় না। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই সময় কাটাই। এ জন্য শুধু জন্মদিনকে ঘিরে চ্যানেল আইয়ে আয়োজিত ‘তারকাকথন’ অনুষ্ঠানে অংশ নেব। আগেও এতে অংশ নিয়েছি। সেখানে শিল্পীজীবনের নানা অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলতে ভালোই লাগে।’’
স্মৃতিচারণায় ফোরদৌসী রহমান তাঁর জন্মদিন নিয়ে এক মজার তথ্যও তুলে ধরেছেন। জানিয়েছেন, তাদের বাড়িতে জন্মদিন সেভাবে উদযাপন করা হতো না। একমাত্র তাঁর বড় ভাই মোস্তফা কামালের (সাবেক প্রধান বিচারপতি) জন্মদিন হইচই করে উদযাপন করা হতো। গান হতো, কবিতা হতো, খাওয়া-দাওয়া হতো। কিন্তু একটি অর্জন বদলে দিয়েছিল তাদের বাড়ির চিত্র। সেটি ছিল ১৯৫৬ সাল। সে বছরই মেট্রিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন ফেরদৌসী রহমান। জন্মদিনের ঠিক দু’দিন আগে ২৬ জুন প্রকাশ পায় তাঁর মেট্রিকের রেজাল্ট। ফলাফল বোর্ড স্ট্যান্ড করার পাশাপাশি সারাদেশে মেয়ের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন তিনি; যা আনন্দ দিয়েছিল সবাইকে। সেই সুবাদে ঘটা করে উদযাপন করা হয় ফেরদৌসী রহমানের জন্মদিন।
কিংবদন্তি শিল্পী ও ভাওয়াইয়াসম্রাট আব্বাস উদ্দীন আহমদের উত্তরসূরি হিসেবে সংগীত বলয়ে ফেরদৌসী রহমানের বেড়ে ওঠা। ১৯৪১ সালের ২৮ জুন ভারতের কোচবিহারে তাঁর জন্ম। ছোটবেলায় বাবার কাছে তাঁর সংগীতে হাতেখড়ি। এরপর ওস্তাদ মোহাম্মদ হোসেন খসরু, ইউসুফ খান কোরেইশী, কাদের জামেরী, গুল মোহাম্মদ খান প্রমুখ সংগীতজ্ঞের কাছে তালিম নিয়েছেন। খুব অল্প বয়স থেকে তিনি মঞ্চে পারফরম্যান্স শুরু করেন। মাত্র ৮ বছর বয়সে রেডিওতে খেলাঘর নামের অনুষ্ঠানে অংশ নেন। ১৯৬০ সালে ‘আসিয়া’ নামের চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম নেপথ্য কণ্ঠ দেন। দুই দশকের বেশি সময় ধরে দুই শতাধিক সিনেমায় প্লেব্যাক করেছেন তিনি। ১৯৪৮ সালে রেডিওতে শিশুশিল্পী এবং ১৯৫৬ সালে তিনি প্রথম বড়দের অনুষ্ঠানে গান করেন।
১৯৬৪ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন। এরপর দেশের সংগীতপ্রেমীদের মাঝে সাড়া ফেলেন ‘এসো গান শিখি’ গানের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। ফেরদৌসী রহমানের বড় ভাই মোস্তফা কামালও ছিলেন সংগীত অনুরাগী। আরেক ভাই লোকগানের নন্দিত কণ্ঠশিল্পী মুস্তাফা জামান আব্বাসী। শুধু ভাইবোনই নয়, তাদের উত্তসূরিদের প্রায় সবাই দেশীয় সংগীতকে ধারণ ও লালন করেন যাচ্ছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন
এছাড়াও পড়ুন:
‘অনুকূল পরিবেশে’ সব বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী ভারত: জয়সোয়াল
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল বলেছেন, অনুকূল পরিবেশে বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে আলোচনা করতে আগ্রহী তাঁর দেশ। তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সব দিক সামাল দেওয়ার জন্য ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে প্রতিষ্ঠিত কাঠামো রয়েছে। গতকাল শনিবার সাংবাদিকদের এ কথাগুলো বলেন জয়সোয়াল।
ভারতের পররাষ্ট্রবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার জন্য সাবেক কূটনীতিক ও বিশেষজ্ঞরা যখন প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখন এ মন্তব্য করলেন জয়সোয়াল।
বিভিন্ন সূত্র দ্য হিন্দুকে জানিয়েছে, সংসদীয় কমিটির বৈঠকে আলোচনায় অংশ নেবেন সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিব শংকর মেনন, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতা হাসনাইন, ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস এবং জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) অধ্যাপক অমিতাভ মাত্তু।
১৯৯৬ সালের গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তি নবায়ন–সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে জয়সোয়াল বলেন, ‘অনুকূল পরিবেশে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট সংলাপে সব বিষয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত।’
১৯ জুন চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে এক ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ সম্পর্কে আরেক প্রশ্নের জবাবে জয়সোয়াল বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী দেশে যেসব পারিপার্শ্বিক ঘটনা ভারতের স্বার্থ ও নিরাপত্তার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, সেসব ঘটনা আমরা অব্যাহতভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। প্রতিটি দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক স্বাধীনভাবে গড়ে উঠলেও পারিপার্শ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় তা মূল্যায়ন করা হয়।’
প্রাথমিক প্রস্তুতির তথ্য অনুযায়ী, বৈঠকে অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ধর্মীয় মৌলবাদের উত্থান, বাংলাদেশে অস্থিরতার কারণে ভারতে নিরাপত্তা ঝুঁকি এবং ২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর বাংলাদেশ-চীনের ‘কৌশলগত সম্পর্ক’ নিয়ে উদ্বেগ–সংক্রান্ত নানা প্রশ্নের জবাব দেবেন বিশেষজ্ঞরা।
ভারত সম্পর্কে বাংলাদেশের জনমনে যে ধারণা, তা নিয়েও বিশেষজ্ঞরা সংসদীয় কমিটিকে পরামর্শ দেবেন। বিশেষ করে, নয়াদিল্লি বাংলাদেশের জনগণ নয়, বরং পতিত শেখ হাসিনা সরকারের পক্ষ নিয়েছিল—মানুষের এই ধারণা প্রসঙ্গে বিশেষভাবে আলোচনা করবেন তাঁরা।
কমিটি সংসদ সদস্যদের এমন পরামর্শও দিতে পারে যে বাংলাদেশে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সমন্বয় করা প্রয়োজন।