রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই দিনব্যাপী চাকরি মেলা শুরু
Published: 27th, June 2025 GMT
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) দুই দিনব্যাপী চাকরি মেলা শুরু হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে এই মেলার উদ্বোধন করেন উপাচার্য এস এম আবদুর রাজ্জাক।
পূবালী ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় দুই দিনব্যাপী এই মেলার আয়োজন করেছে রুয়েট ক্যারিয়ার ফোরাম। তাঁরা দশমবারের মতো এই মেলার আয়োজন করল। ২০১৪ সালে প্রথম এই চাকরির মেলার আয়োজন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপাচার্য ছাড়াও বক্তব্য দেন পূবালী ব্যাংকের রাজশাহীর আঞ্চলিক প্রধান সাজিদুর রহমান, রুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক রবিউল ইসলাম সরকার, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এইচ এম রাসেল, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক বিভাগের অধ্যাপক আবদুল খালেক প্রমুখ। অতিথিরা স্টল ঘুরে ঘুরে দেখেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, ‘আমরা চাই একাডেমিয়ার সঙ্গে ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরের একটা সেতুবন্ধ তৈরি হোক। সেটা করার জন্যই আজকের এই আয়োজন। যাঁরা পড়াশোনা শেষ করেছেন, তাঁদের সঙ্গে চাকরিক্ষেত্রের একটা নেটওয়ার্ক তৈরি হবে। এটাই শিক্ষার্থীদের অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। আর শিক্ষার্থীরাও তাঁদের সক্ষমতাকে যাচাই করতে পারবেন। এ ধরনের আয়োজন অব্যাহত থাকবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের আয়োজনকে আরও বিস্তৃত করা হবে।’
পূবালী ব্যাংকের কর্মকর্তা সাজিদুর রহমান বলেন, আজকের এই আয়োজনে থাকতে পেরে তাঁরা আনন্দিত। এই ধরনের আয়োজন আরও করতে চান।
ক্যারিয়ার ফোরামের সভাপতি তাজওয়ার তাসকিন বলেন, এবার ১৯টি কোম্পানি স্টল নিয়ে মেলায় এসেছেন। তাঁরা সবাই চাকরি আহ্বান করছেন। দুই দিনে তাঁরা রুয়েট শিক্ষার্থীদের সিভি সংগ্রহ করবেন। অনেকেই এখানে থেকেই চাকরি দেবেন। অনেকে আবার তাঁদের হেড অফিসে আহ্বান করে চাকরি দেবেন। বিগত চাকরি মেলাগুলোতে সিভি ড্রপ করা শিক্ষার্থীদের ৫০ শতাংশের বেশি চাকরি হয়েছে।
রুয়েটের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইফতেখার আলী আরএফএল কোম্পানিতে ট্রেইনি ইঞ্জিনিয়ারিং পদে সিভি জমা দিয়েছেন। এই পদে ২০টি পদ খালি আছে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এটি তাঁর প্রথম সিভি দেওয়া। আশা করছেন চাকরিটি হয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, সাধারণত চাকরিগুলো ঢাকাকেন্দ্রিক। চাকরি মেলাগুলোও সারা বছরই ঢাকাসহ বড় শহরে হয়। এখানে এই মেলা হওয়ায় তাঁদের জন্য ভালো হয়েছে। তাঁরা সহজেই আলাপচারিতার মাধ্যমে সিভি জমা দিতে পারছেন।
আরএফএলের সহকারী ব্যবস্থাপক (ট্যালেন্ট অ্যাকুইজিশন) তারেক আজিজ বলেন, তাঁরা মোটামুটি ৮০টি শূন্য পদে চাকরি দেবেন এই মেলা থেকে। বিগত বছরগুলোতেও রুয়েট থেকে অনেকেই চাকরি করছেন। এই মেলা দক্ষ জনশক্তি পেতে তাঁদের সহযোগিতা করছে। রুয়েটের অনেকেই তাঁদের কোম্পানিতে সুনামের সঙ্গে চাকরি করছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ই চ কর এই ম ল করছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
শিশু হাফসা হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, আরেক আসামি গ্রেপ্তার
পাবনা পৌর সদরের উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া এলাকায় ৯ বছরের শিশু শিক্ষার্থী হাফসা হত্যার ঘটনায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) দায়ের করা মামলায় আরো এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মামলার নামীয় তিন আসামিকেই গ্রেপ্তার হলো।
গ্রেপ্তাররা হলেন, পাবনা পৌর সদরের উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া মহল্লার টিপু সরদারের ছেলে সাব্বির সরদার (২৬), ছবেদ আলীর ছেলে রমজান আলী (৩০) ও খালেক সরদারের ছেলে পান্না সরদার (২৮)। এদের মধ্যে সাব্বির ও রমজানকে রবিবার এবং পান্নাকে সোমবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
আরো পড়ুন:
‘আবর্জনার মতো লাগে’ বলে অর্ধশত বকুলগাছ কাটা সেই ব্যক্তি গ্রেপ্তার
বরগুনায় নাশকতার অভিযোগে ৩ আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার
এদিকে, শিশু হাফসাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্য করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ।
পাবনা সদর থানার ওসি (অপারেশন) সঞ্জয় কুমার সাহা এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নিহত হাফসার মা রিতু খাতুন বাদী হয়ে সোমবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনজন নামীয়সহ অজ্ঞাতনামা আরো অনেককে আসামি করা হয়েছে।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার দুপুরে পাবনা টেক্সটাইল কলেজ এলাকা থেকে অভিযুক্ত পান্না সরদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে মামলার প্রধান অভিযুক্ত নামীয় তিন আসামিকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে, শিশু হাফসা হত্যার প্রতিবাদে ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
সোমবার (১৬ নভেম্বর) সকালে উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে জেলা প্রশাসক কর্যালয়ের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে তারা। সেখানে নিহত শিশু শিক্ষার্থী হাফসার স্বজন ও এলাকাবাসী বক্তব্য দেন।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে তারা মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভ শেষে তারা আসামিদের গ্রেপ্তার করতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। অন্যত্থায় আরো কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দেন।
এ সময় প্রায় ১ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে সদর থানার ওসি আব্দুস সালাম ঘটনাস্থলে গিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা।
এর আগে, শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে শিশু হাফসাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তার সন্ধান চেয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয়। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে প্রায় ২ ঘণ্টা পর রাত ৮টার দিকে বাড়ির পেছনের জঙ্গলের ভেতর পাটিতে মোড়ানো কাদা মাখা অবস্থায় হাফসার মরদেহ পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় রাতেই সন্দেহভাজন হিসেবে রমজান ও সাব্বির নামের দুইজনকে আটক করা হয়।
নিহত হাফসা সদর উপজেলার মালঞ্চি ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের প্রবাসী হাফিজুর রহমানের মেয়ে এবং স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
হাফসার নানার বাড়ির পাশের বাগানটি দীর্ঘদিন ধরে বখাটে, মাদকসেবী ও জুয়ারুদের আড্ডাস্থল ছিল বলে জানায় স্থানীয়রা। তারা এ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পাবনা সদর থানার ওসি (অপারেশন) সঞ্জয় কুমার সাহা বলেন, “মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদনে শিশু হাফসাকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। ধর্ষণের পর তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। এছাড়া পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতিয়মান হয়েছে।”
ঢাকা/শাহীন/মেহেদী