পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ইউসুফ খন্দকার (৭০) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। 

শুক্রবার (২৭ জুন) সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তিনি গতকাল ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জুনায়েদ হোসেন লেলিন।

মৃত ইউসুফ খন্দকার কলাপাড়া উপজেলার রজপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। 

জেলা সির্ভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জানা যায়, মারা যাওয়া ওই ব্যক্তিসহ গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে জেলায় ৭ জনের শরীরে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। 

এ ছাড়া জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৫৬৪ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৪৯৬ জন। বর্তমানের জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৬৭ জন। জেলার ডেঙ্গুর হটস্পট মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন ২৭ জন ডেঙ্গু রোগী। 

ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালগুলোতে আলাদা ওয়ার্ড খোলার নির্দেশনা থাকলেও স্থান, বেড ও লোকবল সংকটে তা সম্ভব হচ্ছেনা বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে প্রত্যেক ওয়ার্ডে ডেঙ্গুর কর্নার খোলা হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.

জুনায়েদ হোসেন লেলিন বলেন, ‘‘এ বছর উপজেলায় এই প্রথম বৃদ্ধ ব্যক্তি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। ডেঙ্গু সংক্রমণ প্রতিরোধে বাড়ির আশপাশ পরিস্কার রাখাসহ পানি জমতে না দেওয়ার জন্য জনসাধারণকে আরো বেশি সচেতন করতে সরকারি-বেসরকারিভাবে আরো প্রচার প্রচারণা চালাতে হবে।’’  

এছাড়া তিনি ডেঙ্গুর জ্বর, কাশি ও মাথাব্যথাসহ ডেঙ্গুর উপসর্গ দেখা দিলে নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

ঢাকা/ইমরান/টিপু 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র কল প কল প ড় উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েল-ভারত যেভাবে পাকিস্তানের পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস করতে চেয়েছিল

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র সাবেক প্রধান জর্জ টেনেট তাঁকে ‘ওসামা বিন লাদেনের মতোই বিপজ্জনক’ বলে মনে করতেন এবং মোসাদের সাবেক প্রধান শাবতাই শ্যাভিট তাঁকে হত্যা না করার জন্য আফসোস করেছিলেন। তিনি হচ্ছে আব্দুল কাদির খান, পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচির জনক। পাকিস্তানের প্রায় ২৫০ মিলিয়ন পাকিস্তানি নাগরিকদের কাছে একজন কিংবদন্তি, একজন জাতীয় বীর। এই পরমাণুবিজ্ঞানী ১৯৩৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ৮৫ বছর বয়সে ২০২১ সালে মারা যান।

আব্দুল কাদির খান ইরান, লিবিয়া এবং উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক কর্মসূচিতে সহায়তার জন্য একটি গোপন অত্যাধুনিক নেটওয়ার্কও পরিচালনা করেছিলেন। এ দেশগুলোর মধ্যে উত্তর কোরিয়াই শুধু পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হতে সক্ষম হয়েছে।

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তারা পাকিস্তানকে পারমাণবিক শক্তি হওয়া থেকে বিরত রাখতে নানা গুপ্তহত্যার চেষ্টা করেছিল এবং হুমকি দিয়েছিল। ইসরায়েল নিজেও পারমাণবিক শক্তির অধিকারী দেশ, যদিও তারা তা কখনো স্বীকার করে না।

১৯৮০-এর দশকে ইসরায়েল ভারতের সহায়তায় পাকিস্তানের পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা ফেলার একটি পরিকল্পনা তৈরি করেছিল। যদিও ভারত সরকার সেই পরিকল্পনা শেষ পর্যন্ত বাতিল করে দেয়।

আব্দুল কাদির খান বিশ্বাস করতেন যে একটি পারমাণবিক বোমা তৈরি করে তিনি তাঁর দেশকে বিদেশি হুমকি থেকে বিশেষ করে পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী ভারত থেকে রক্ষা করেছেন। আজ পাকিস্তানি নাগরিকেরা তেমনটিই মনে করে।

‘কেন একটি ইসলামিক বোমা নয়?’

প্রতিবেশী দেশ ভারত যখন প্রথম পারমাণবিক বোমা তৈরি করে পাকিস্তানও তখন এমন বোমা তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৭৪ সালের ১৮ মে ভারত তার প্রথম পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা করে, যার সাংকেতিক নাম ছিল ‘স্মাইলিং বুদ্ধ’। এরপর পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো অবিলম্বে তাঁর নিজের দেশের জন্য পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির শপথ নেন।

তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা ঘাস বা লতাপাতা খাব, এমনকি ক্ষুধার্ত থাকব, কিন্তু আমরা নিজেদের জন্য একটি পারমাণবিক বোমা তৈরি করব।’

তিনি ঘোষণা করেন, ‘একটি খ্রিষ্টান বোমা আছে, একটি ইহুদি বোমা আছে এবং এখন একটি হিন্দু বোমাও আছে। কেন একটি ইসলামিক বোমা থাকবে না?’

ব্রিটিশ ভারতে জন্মগ্রহণ করা আব্দুল কাদির ১৯৬০ সালে করাচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান নিয়ে ডিগ্রি নেন। এরপর বার্লিনে মেটালার্জিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (ধাতু প্রকৌশল বিদ্যা) নিয়ে পড়াশোনা করেন। তিনি নেদারল্যান্ডস ও বেলজিয়ামেও পড়াশোনা করেন।

১৯৭৪ সালে আব্দুল কাদির আমস্টারডামের অন্যতম পারমাণবিক জ্বালানি সংস্থা ইউরেনকোর একজন সাবকন্ট্রাক্টর হিসেবে কাজ করছিলেন। কোম্পানিটি ইউরোপের পারমাণবিক চুল্লির জন্য পারমাণবিক জ্বালানি হিসেবে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম সরবরাহ করত।

আব্দুল কাদির ইউরেনকোর গোপন এলাকায় প্রবেশের সুযোগ পেয়েছিলেন, যেখান ছিল বিশ্বের সবচেয়ে সেরা সেন্ট্রিফিউজের ব্লুপ্রিন্ট। সেখানে প্রাকৃতিক ইউরেনিয়ামকে পারমাণবিক কর্মসূচির জন্য সমৃদ্ধ করা হতো এবং তা পারমাণবিক বোমার জ্বালানিতে রূপান্তরিত করা হতো।

১৯৭৬ সালের জানুয়ারিতে তিনি নেদারল্যান্ডস থেকে হঠাৎ করে পাকিস্তানে চলে যান। বিষয়টি ছিল অনেকটা রহস্যময়। যাওয়ার সময় তিনি বলে যান, ‘পাকিস্তানে এমন একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে যা আমি প্রত্যাখ্যান করতে পারি না।’

পরে আব্দুল কাদিরের বিরুদ্ধে নেদারল্যান্ডস থেকে ইউরেনিয়াম সেন্ট্রিফিউজের একটি ব্লুপ্রিন্ট চুরি করার অভিযোগ ওঠে, যা ইউরেনিয়ামকে অস্ত্র-গ্রেডের জ্বালানিতে পরিণত করতে পারে।

সেই বছরই জুলাই মাসে তিনি পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে একটি গবেষণা পরীক্ষাগার স্থাপন করেন, যেখানে পারমাণবিক অস্ত্রের জন্য সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম তৈরি করা শুরু হয়।

জুলফিকার আলী, ইন্দিরা গান্ধী ও মুয়াম্মার গাদ্দাফি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মিরপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজকে উঠে গেল বাস, নিহত ১
  • টেকনিক্যাল মোড়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস সড়ক বিভাজকের ওপরে, চাপা পড়ে একজনের মৃত্যু
  • পাবনা-ঢাকা বাস চলাচল বন্ধ 
  • পাবনায় অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট, ভোগান্তি
  • পাবনায় অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট, জনজীবন অচল
  • মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, নিখোঁজের ২৯ ঘণ্টা পর মধুমতী নদী থেকে জেলের মরদেহ উদ্ধার
  •  ‘যাদের মা নেই তারা কাঁদবে, যাদের মা আছেন তারাও কাঁদবে’
  •  ‘যাদের মা নেই তারা কাঁদবে, যাদের মা আছেন তারাও’
  • ইসরায়েল-ভারত যেভাবে পাকিস্তানের পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস করতে চেয়েছিল