মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় আলী আজম নামের এক দোকানির দাড়ি ধরে টানাহেঁচড়া ও চড়-থাপ্পড়ের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আজ শুক্রবার সকালে সাভারের আশুলিয়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম নাসিম ভূঁইয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি উপজেলা সদরে ঘিওর এলাকায়। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন।

আরও পড়ুনমানিকগঞ্জে দোকানিকে মারধরের ভিডিও ফেসবুকে, থানায় অভিযোগ২৪ জুন ২০২৫

পুলিশ, এজাহার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, ঘিওর উপজেলা সদর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ‘মানিক কম্পিউটার অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার’ নামে একটি দোকান আছে আলী আজমের (৩৩)। কম্পোজসহ বিভিন্ন কাজের জন্য সেখানে প্রায়ই যেতেন নাসিম। কিন্তু কাজ শেষে ঠিকমতো টাকা দিতেন না। টাকা চাইলে দোকানটি বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলে নাসিম ভয়ভীতি ও হুমকি দিতেন। গত সোমবার রাত ৯টার দিকে তুচ্ছ ঘটনায় নাসিম ক্ষিপ্ত হয়ে আজমের দাড়ি ধরে টানা-হিঁচড়া করেন ও চড়-থাপ্পড় দেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত লোকজন পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। পরে আজমের হাত-পা ভেঙে দেওয়াসহ ব্যবসা বন্ধ করার হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান নাসিম। এ ঘটনার পরদিন নাসিমকে আসামি করে ঘিওর থানায় মামলা করেন আজম।

এদিকে আলী আজমের দাড়ি ধরে টানাহেঁচড়া ও চড়-থাপ্পড়ের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে মুসল্লিসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তাঁরা গত মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা সদরে অবস্থান নিয়ে বিচার দাবি করেন। পরে সেনাসদস্যরা সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনেন।

ঘটনার পর থেকে আসামি পলাতক ছিলেন জানিয়ে পুলিশ সুপার ইয়াছমিন খাতুন বলেন, আজ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর এলাকা থেকে নাসিমকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা ডিবির একটি দল। তাঁকে সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আজম র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

শিশু হাফসা হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, আরেক আসামি গ্রেপ্তার

পাবনা পৌর সদরের উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া এলাকায় ৯ বছরের শিশু শিক্ষার্থী হাফসা হত্যার ঘটনায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) দায়ের করা মামলায় আরো এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মামলার নামীয় তিন আসামিকেই গ্রেপ্তার হলো।

গ্রেপ্তাররা হলেন, পাবনা পৌর সদরের উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া মহল্লার টিপু সরদারের ছেলে সাব্বির সরদার (২৬), ছবেদ আলীর ছেলে রমজান আলী (৩০) ও খালেক সরদারের ছেলে পান্না সরদার (২৮)। এদের মধ্যে সাব্বির ও রমজানকে রবিবার এবং পান্নাকে সোমবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

আরো পড়ুন:

‘আবর্জনার মতো লাগে’ বলে অর্ধশত বকুলগাছ কাটা সেই ব্যক্তি গ্রেপ্তার

বরগুনায় নাশকতার অভিযোগে ৩ আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার 

এদিকে, শিশু হাফসাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্য করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ।

পাবনা সদর থানার ওসি (অপারেশন) সঞ্জয় কুমার সাহা এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নিহত হাফসার মা রিতু খাতুন বাদী হয়ে সোমবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনজন নামীয়সহ অজ্ঞাতনামা আরো অনেককে আসামি করা হয়েছে।

তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার দুপুরে পাবনা টেক্সটাইল কলেজ এলাকা থেকে অভিযুক্ত পান্না সরদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে মামলার প্রধান অভিযুক্ত নামীয় তিন আসামিকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

এদিকে, শিশু হাফসা হত্যার প্রতিবাদে ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।

সোমবার (১৬ নভেম্বর) সকালে উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে জেলা প্রশাসক কর্যালয়ের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে তারা। সেখানে নিহত শিশু শিক্ষার্থী হাফসার স্বজন ও এলাকাবাসী বক্তব্য দেন।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে তারা মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভ শেষে তারা আসামিদের গ্রেপ্তার করতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। অন্যত্থায় আরো কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দেন।

এ সময় প্রায় ১ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে সদর থানার ওসি আব্দুস সালাম ঘটনাস্থলে গিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা।

এর আগে, শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে শিশু হাফসাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তার সন্ধান চেয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয়। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে প্রায় ২ ঘণ্টা পর রাত ৮টার দিকে বাড়ির পেছনের জঙ্গলের ভেতর পাটিতে মোড়ানো কাদা মাখা অবস্থায় হাফসার মরদেহ পাওয়া যায়।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় রাতেই সন্দেহভাজন হিসেবে রমজান ও সাব্বির নামের দুইজনকে আটক করা হয়।

নিহত হাফসা সদর উপজেলার মালঞ্চি ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের প্রবাসী হাফিজুর রহমানের মেয়ে এবং স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

হাফসার নানার বাড়ির পাশের বাগানটি দীর্ঘদিন ধরে বখাটে, মাদকসেবী ও জুয়ারুদের আড্ডাস্থল ছিল বলে জানায় স্থানীয়রা। তারা এ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পাবনা সদর থানার ওসি (অপারেশন) সঞ্জয় কুমার সাহা বলেন, “মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদনে শিশু হাফসাকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। ধর্ষণের পর তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। এছাড়া পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতিয়মান হয়েছে।”

ঢাকা/শাহীন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ