পাবনায় অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট, জনজীবন অচল
Published: 27th, June 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের শ্রমিকদের মহাসড়কে চাঁদাবাজিসহ পাবনার শ্রমিকদের মারধরের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে পাবনা-ঢাকা রুটে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে পাবনা জেলা মোটর মালিক গ্রুপ ও পাবনা জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন।
পরিবহন ধর্মঘটের ফলে পাবনার বিভিন্ন স্থানে ঢাকাগামী মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। জনজীবন অচল হয়ে পড়ে। অনেকে পরিবার নিয়ে এসে বাস না পেয়ে বাড়ি ফিরে যান।
দীর্ঘদিন ধরে পার্শ্ববর্তী সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার মোটর মালিক ও শ্রমিকরা যৌথভাবে পাবনা থেকে ঢাকাগামী সব পরিবহনের শ্রমিকদের বিভিন্ন সময়ে মারধর ও নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছেন। গত (২৫ জুন) বিনা অপরাধে পাবনার একজন শ্রমিককে মারধর করে শাহজাদপুরের বাস শ্রমিকরা। এরই প্রতিবাদে এ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে পাবনা জেলা মোটর মালিক ও শ্রমিকরা।
আজ শুক্রবার দুপুরে পাবনা জেলা মোটর মালিক গ্রুপের অফিস সচিব আমিনুল ইসলাম বাবলু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, পাবনা মোটর মালিক গ্রুপ, বাস মিনিবাস মালিক সমিতি, পাবনা জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নসহ তিনটি সংগঠনের যৌথসভা শেষে পাবনা-ঢাকা রুটে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। চলমান সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
শাহজাদপুর মহাসড়ক দিয়ে পাবনার সব বাস ঢাকায় যাতায়াত করে। কিন্তু মাঝেমধ্যেই সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের বাস মালিক-শ্রমিকরা অহেতুক পাবনার বাস চালক ও শ্রমিকদের মারধর করেন।
পাবনা জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফিরোজ হোসেন সমকালকে বলেন, পাবনার বাসগুলোকে তাদের আগে যেতে দেয় না। শাহজাদপুরের নবীন বরণ পরিবহনের একটি বাস তাদের ইচ্ছেমতো চলাচল করে। কোনো নিয়মশৃঙ্খলার তোয়াক্কা করে না। গত ২৫ জুন দুপুরের দিকে নবীন বরণ বাসটি সমিতির নিয়ম না মেনে তাদের চেইন ব্রেক করে। এ সময় পাবনার একটি বাস ওখানে ছিল। পাবনার বাসটি ছাড়ার সময় হয়েছিল। কিন্তু নিয়ম না মেনে আগেই নবীর বরণ পরিবহনটি তার আগেই ছেড়ে দেয়। এ সময় পাবনার একজন শ্রমিককে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
তিনি আরও বলেন, অন্যায়ভাবে ও জোর করে ভালো কিছু হয় না। আমরা এ সমস্যার সমাধানের জন্য এ পরিবহন ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের এ কর্মসূচি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের বাস মালিক শ্রমিকদের বিরুদ্ধে। আমরা স্থায়ী সমাধান দাবি করছি। এর আগেও অনেকবার ঝামেলা হয়েছিল। আমরা কয়েকদফা ধর্মঘট দিয়েছিলাম। তখন একটা সমাধান হয়েছিল। এখন আবার নতুন করে ঝামেলা সৃষ্টি করেছে।
পাবনা মোটর মালিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খাদেমুল ইসলাম বাদশা সমকালকে বলেন, বারবার কথা দেওয়ার পরও শাহজাদপুরের বাস শ্রমিকরা পাবনার গাড়িতে হামলা চালাচ্ছে। গত ২৫ জুন আমাদের একজন শ্রমিককে মারধর করা হয়। ঘটনায় আমাদের একাধিক শ্রমিক আহত হয়েছেন। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও স্থায়ী সমাধান না পাওয়া পর্যন্ত বাস চালানো সম্ভব নয়। এর আগেও অনেক বার তাদের স্বেচ্ছাচারিতা ও শ্রমিকদের মারধরের ঘটনায় ধর্মঘট হয়েছে। নতুন করে তারা আবারও ঝামেলা সৃষ্টি করছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প বন স র জগঞ জ প বন র ব
এছাড়াও পড়ুন:
ফিলিপাইনে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৯
ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত হওয়ার সংখ্যা বেড়ে ৬৯ জন হয়েছে। দেশটির দুর্যোগ-সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা আজ বুধবার এ খবর জানান। বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা ও পানি-বিদ্যুতের সংযোগ আবার চালু করার চেষ্টা করছে ফিলিপাইন সরকার।
দেশটির সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তা রাফি আলেজান্দ্রো সাংবাদিকদের বলেন, স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার আগে সেবু প্রদেশের উত্তরে বোগো শহরের কাছে ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয়। স্থানীয় হাসপাতালগুলো আহত মানুষের ভিড়ে রীতিমতো উপচে পড়ছে।
আঞ্চলিক সিভিল ডিফেন্স দপ্তরের তথ্য কর্মকর্তা জেন আবাপো বলেন, সেবুর প্রাদেশিক দুর্যোগ দপ্তরের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পে নিহত হওয়ার সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৬৯ জন। অন্য একজন কর্মকর্তা জানান, আহত হয়েছেন ১৫০ জনের বেশি।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের দ্রুত সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি জানান, মন্ত্রিপরিষদ সচিবেরা ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। প্রিয়জন হারানো ব্যক্তিদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।
সেবু ফিলিপাইনের জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যগুলোর একটি। সেখানে প্রায় ৩৪ লাখ মানুষের বসবাস। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ম্যাকতান-সেবু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্যক্রম চালু রয়েছে। এটা ফিলিপাইনের দ্বিতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর।
ভূমিকম্পে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সান রেমিগিও শহরটিও। উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তার জন্য এ শহরে ‘দুর্যোগপূর্ণ অবস্থা’ ঘোষণা করা হয়েছে। শহরের ভাইস মেয়র আলফি রেইনেস বলেন, উদ্ধারকর্মীদের জন্য খাবার ও পানি, সেই সঙ্গে ভারী সরঞ্জাম প্রয়োজন।
স্থানীয় ডিজেডএমএম রেডিওকে আলফি রেইনেস বলেন, ‘ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। বিদ্যুৎ নেই। আমাদের সত্যিই সহায়তা দরকার। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে পানির তীব্র সংকট রয়েছে। ভূমিকম্পে সেখানে সরবরাহ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
আরও পড়ুনফিলিপাইনে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত অন্তত ২৬, চলছে উদ্ধারকাজ৫ ঘণ্টা আগে