দীর্ঘদিন ব্যবহারের কারণে কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও স্মার্টফোনের গতি ধীরে ধীরে কমে যায়। ফলে দরকারের সময় ঠিকমতো কাজ না করলে বিরক্ত হন অনেকেই। সমস্যা সমাধানে কেউ কেউ নতুন কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও স্মার্টফোন কেনেন, যা অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয়ে ওঠে না। বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন করে সহজেই কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও স্মার্টফোনের গতি বাড়ানো যায়।

কম্পিউটার ও ল্যাপটপের গতি বাড়ানো

কম্পিউটার ও ল্যাপটপের গতি কমে গেলে প্রথমেই রিস্টার্ট করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও রিস্টার্ট করার এই কৌশল পুরোনো, তবু এখনো এটি কার্যকর। রিস্টার্ট করলে র‍্যামের সিস্টেম ক্যাশ মুছে যায় এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে চলা সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে কম্পিউটার ও ল্যাপটপ দ্রুত কাজ করে। তবে রিস্টার্টের জন্য অবশ্যই অপারেটিং সিস্টেমের ‘রিস্টার্ট’ অপশন ব্যবহার করতে হবে। সরাসরি পাওয়ার বাটন চেপে বা বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে কম্পিউটার ও ল্যাপটপ বন্ধ করা যাবে না।

রিস্টার্টের পরও যদি কম্পিউটার ও ল্যাপটপ ধীরগতির থাকে, তাহলে স্টার্টআপ অ্যাপগুলো খেয়াল করা জরুরি। অনেক অ্যাপ আছে, যেগুলো কম্পিউটার ও ল্যাপটপ চালুর সঙ্গে সঙ্গেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়ে যায়। এতে প্রসেসর ও র‍্যামের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। উইন্ডোজের টাস্ক ম্যানেজারের স্টার্টআপ ট্যাবে গিয়ে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তবে নিরাপত্তা–সংশ্লিষ্ট সফটওয়্যার যেমন অ্যান্টিভাইরাস অবশ্যই চালু রাখতে হবে। কম্পিউটার ও ল্যাপটপে থাকা অপ্রয়োজনীয় অনেক সফটওয়্যার বা ফাইল হার্ডডিস্কে জায়গা দখল করে রাখে। ফলে হার্ডডিস্কের কর্মক্ষমতা কমে যায়। আর তাই গতি বাড়ানোর জন্য হার্ডডিস্ক থেকে অপ্রয়োজনীয় সব ফাইল ও সফটওয়্যার মুছে ফেলতে হবে।

আরও পড়ুনস্মার্টফোনে ইন্টারনেটের গতি বাড়াবেন যেভাবে৩০ আগস্ট ২০২৪

অপারেটিং সিস্টেম এবং সফটওয়্যার নিয়মিত হালনাগাদ করেও কম্পিউটার ও ল্যাপটপের গতি বাড়ানো যায়। অনেকেই মনে করেন, সফটওয়্যার হালনাগাদ মানে নতুন সুবিধা। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সফটওয়্যার হালনাগাদে নতুন সুবিধা যুক্ত করার পাশাপাশি পুরোনো নিরাপত্তা ত্রুটিও দূর করা হয়, আর তাই হালনাগাদ সফটওয়্যার ব্যবহার করলে কম্পিউটার ও ল্যাপটপ দ্রুত কাজ করে।

আরও পড়ুনল্যাপটপ ভালো রাখার ৬ উপায়২৮ জানুয়ারি ২০২৩স্মার্টফোনের গতি বাড়ানো

স্মার্টফোন দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই বেশ ধীরগতির হয়ে যায়। সাধারণ মানের স্মার্টফোনের পাশাপাশি নামকরা ব্র্যান্ডের হালনাগাদ মডেলের স্মার্টফোনও কিছুদিন পর ধীরে কাজ করে। আর তাই স্মার্টফোনে কোনো সমস্যা না থাকলেও কিছুদিন পরপর রিস্টার্ট দিতে হবে। স্মার্টফোন রিস্টার্ট দিলে আগে চালু থাকা অ্যাপসহ অপারেটিং সিস্টেম নতুন করে চালু হয়। ফলে স্মার্টফোনের গতি আগের তুলনায় বৃদ্ধি পায়।

আরও পড়ুনস্মার্টফোন গরম হয়ে যায়, সমাধান কী২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

স্মার্টফোনের গতি বাড়ানোর জন্য অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ মুছে ফেলার পাশাপাশি নিয়মিত সফটওয়্যার ও অপারেটিং সিস্টেম হালনাগাদ করতে হবে। অনেক সময় দেখা যায়, দীর্ঘদিন ব্যবহৃত অ্যাপগুলো প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি তথ্য জমিয়ে রাখে, যা স্মার্টফোনের কাজের গতিকে ধীর করে ফেলে। এ ছাড়া ‘ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ রিফ্রেশ’ (আইওএস) এবং ‘ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা’ (অ্যান্ড্রয়েড) বন্ধ করেও স্মার্টফোনের গতি বাড়ানো যায়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সফটওয় য র ন ব যবহ ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

সফটওয়্যার কোম্পানির টাকায় যক্ষ্মা সম্মেলনে

আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যাওয়ার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিদেশি সফটওয়্যার কোম্পানির কাছে অর্থ চেয়েছে। ওই কোম্পানির সঙ্গে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লেনদেন আছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা ক্রয় আইনের লঙ্ঘন। চারজন বিদেশগামী প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, তাঁরা নিজের অর্থে সম্মেলনে যাচ্ছেন।

যক্ষ্মা ও ফুসফুসের রোগের আন্তর্জাতিক বার্ষিক সম্মেলন ইউনিয়ন কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হবে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে। সম্মেলন শুরু হচ্ছে ১৮ নভেম্বর, শেষ হবে ২১ নভেম্বর। সারা বিশ্বের যক্ষ্মা ও ফুসফুসের রোগবিশেষজ্ঞ, বিজ্ঞানী ও গবেষকেরা এই সম্মেলনে যোগ দেবেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় এইডস/এসটিডি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সদ্য সাবেক উপপরিচালক জোবায়দা নাসরিন ভারতের সফটওয়্যার কোম্পানি কিউর এআই-কে ৫ অক্টোবর চিঠি দিয়ে অর্থসহায়তার অনুরোধ করেন। বর্তমানে তিনি যক্ষ্মা ও কুষ্ঠরোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার উপপরিচালক।

এটি স্বার্থের দ্বন্দ্বের বিষয়। যে কোম্পানির সঙ্গে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির ব্যবসা আছে, তার কাছে অর্থসহায়তা চাওয়া অনৈতিক। এটা সরকারি ক্রয়বিধির পরিপন্থী। আইনের লঙ্ঘন। এটা ভবিষ্যৎ ক্রয়প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করবে। এটা গ্রহণযোগ্য না, শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক, টিআইবি

চিঠিতে বলা হয়, কোম্পানিটি যেন যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির পাঁচ কর্মকর্তাকে ওই সম্মেলনে যোগদান নিশ্চিত করতে অর্থসহায়তা দেয়। কোম্পানিটির কাছে অর্থসহায়তা বাবদ ২২ হাজার ২৭০ ডলারের (প্রায় ২৭ লাখ টাকা) একটি বাজেটও দেওয়া হয়।

সফটওয়্যার কোম্পানির কাছে পাঁচজনের একটি নামের তালিকা পাঠানো হয়। তাঁরা হচ্ছেন যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির উপপরিচালক মো. শাফিন জব্বার, জাতীয় কর্মসূচি সমন্বয়ক রূপালি শিশির বাণু, যক্ষ্মা ল্যাবরেটরি বিশেষজ্ঞ উম্মে তাসনিম মালিহা, বিভাগীয় যক্ষ্মাবিশেষজ্ঞ (ঢাকা উত্তর) ফারজানা জামান এবং সহকারী পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন বিশেষজ্ঞ এফ এম মনিরুল হক। প্রথমজন সরকারি কর্মকর্তা। বাকি চারজন দাতা সংস্থা গ্লোবাল ফান্ডের কর্মকর্তা। এই চারজন জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির অফিসে বসে কাজ করলেও তাঁদের বেতন–ভাতা দেয় গ্লোবাল ফান্ড।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি এর আগে ২০২১–২২ ও ২০২২–২৩ অর্থবছরে কিউর এআইয়ের কাছ থেকে সফটওয়্যার কিনেছে। এই সফটওয়্যার কেনা হয় গ্লোবাল ফান্ডের টাকায়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই সফটওয়্যার যক্ষ্মা শনাক্তের কাজে ব্যবহৃত হয়।

সংশ্লিষ্ট একজন সরকারি, তিনজন বেসরকারি ও একজন দাতা সংস্থার প্রতিনিধি প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, আরও সফটওয়্যার কেনার প্রক্রিয়া চলমান। কোন কোম্পানির কাছ থেকে তা কেনা হবে, তা চূড়ান্ত হয়নি। এরই মধ্যে একটি কোম্পানির কাছে অর্থসহায়তা চেয়ে জোবায়দা নাসরিনের এই চিঠি নানা সন্দেহ তৈরি করেছে।

তাঁরা কিছুই জানতেন নাযক্ষ্মা একটি সংক্রামক রোগ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এক ভাই গুগল, আরেক ভাই মেটায়
  • সফটওয়্যার কোম্পানির টাকায় যক্ষ্মা সম্মেলনে