মুকুল-আলাউদ্দিনের গ্রেপ্তারের দাবিতে বন্দরে মানববন্ধন
Published: 30th, June 2025 GMT
ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর নারায়ণগঞ্জের কুখ্যাত ওসমান পরিবারের দালাল নামে পরিচিত বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা আতাউর রহমান মুকুল এবং বন্দরের আওয়ামী লীগ নেতা আলাউদ্দিনের গ্রেফতার এবং বিচারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে বন্দরের ২৭ নং ওয়ার্ডস্থ হরিপুর ৪১২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সামনে এই মানববন্ধন করেন স্থানীয় এলাকাবাসী। এ সময় তারা গত ১৫ বছর আলাউদ্দিন এবং মুকুল বাহিনীর অত্যাচারের নানা দিক তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা মটর চালক লীগের সভাপতি আলাউদ্দিন ও তার ছেলে ২৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট মামুন সিরাজুল মজিদ গত ১৫ বছর এই এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছিলো।
মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে, ব্যবসা-বাণিজ্য দখল করে নিয়েছে, তাদের অত্যাচারে আমরা এলাকায় থাকতে পারিনি। একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদেরকে হয়রানি করেছে। আমাদের জায়গা সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে।
আমরা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাযাবর জীবন যাপন করেছি। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে খুনি হাসিনা সরকার পালিয়ে যাওয়ায় আমরা ১৫ বছর পর ঘরে ফিরতে পেরেছি। সেই খুনি চাঁদাবাজ আলাউদ্দিনকে আবারো প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা আতাউর রহমান মুকুল।
এলাকাবাসী ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, আমরা বন্দরে আর আলাউদ্দিন এবং তার ছেলেকে কোনভাবেই মেনে নেব না। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণহত্যা মামলার আসামি আলাউদ্দিন ও তার ছেলের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
তারা বলেন, গত রবিবার এই আলাউদ্দিনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেওয়ান এন্টারপ্রাইজের পক্ষে হরিপুর ৪১২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের টেন্ডার নিতে আসেন বিএনপি'র বহিষ্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুল। এই দেওয়ান এন্টারপ্রাইজের মালিক আতাউর রহমান মুকুল নয়, এটার মালিক আলাউদ্দিন ও তার ছেলে।
রবিবার আলাউদ্দিনের মেয়ের জামাই এবং নাতিন জামাইকে নিয়ে মুকুল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আসেন। আমরা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করি কিন্তু তিনি আমাদের কোন কথা শুনেন না। তাই বিক্ষুব্ধ জনতা যারা গত ১৫ বছর আলাউদ্দিনের নির্যাতন জুলুমের শিকার হয়েছে তারা আতাউর রহমান মুকুলকে হেনস্থা করেছে।
এলাকাবাসী আরো বলেন, আতাউর রহমান মুকুল নামে বিএনপি নেতা থাকলেও তিনি গত ১৫ বছর ওসমান পরিবারের দালালি করেছেন তা আমরা দেখেছি। আওয়ামী লীগের দালালি করার কারণে বিএনপি তাকে বহিষ্কার করেছে।
আমরা মনে করেছিলাম ৫ আগস্টের পর তিনি ভালো হয়ে যাবেন কিন্তু তিনি আবারও সেই আওয়ামী দোসরদের প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছেন। আমরা আলাউদ্দিনের ফাঁসি চাই এবং আতাউর রহমান মুকুলের বিচার চাই।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন কাঁচপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ফজলুর রহমান, স্হানীয় এলাকাবাসী মনির হোসেন, জুয়েল, জাকরিয়া, মাজহারুল, বাঁধন, ঈমান আলী, ইলিঅস, জহিরুল, জুয়েল, খালেক সানোয়ার, মেহেদী, জাকির মেম্বার, আল আমিন, আনোয়ার, আলম, শাহআলম, নজরুল, মোহর আলী, খোকন, মোশাররফ, আবুল হোসেন, শান্ত, সোহেল, তাজুল, সোহাগ, নয়ন, নূর হোসেন, অলিউল্লাহ, মামুন, হাবিবুর, বাবু, হোসেন আলী, মিজান, গোলজার, সুজন, মাহমুদা, মাসুদা, মনোয়ারা, মরিয়ম, কমলা বেগম, আরজুদা, শিরিনা, মরিয়ম, আমেনা, সমতা, জরিনা, ফুলবানু, হাফসা, মিথিলা, ইমা প্রমূখ।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ এল ক ব স ব এনপ আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে বিদ্যালয়ের মালামাল বিক্রির ঘটনায় ঝাড়ু-জুতা মিছিল
সোনারগাঁয়ে পঞ্চমীঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের মালামাল রাতের আধাঁরে গোপনে বিক্রির ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবীতে ঝাড়ু ও জুতা মিছিল করেছেন বিদ্যালয়ের বর্তমান–সাবেক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকাবাসী।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে সাদিপুর ইউনিয়নের পঞ্চমীঘাট স্কুলের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। অভিযুক্ত বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূইয়া, সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান ভূইয়া মাসুম এবং একাধিক অভিযোগের মুখে থাকা প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি তাজুল ইসলাম বলেন, “এ ইউনিয়নকে যেন ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করে মাসুম ও মনিরুজ্জামান নিজেদের ইচ্ছেমতো সব কিছু সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
তাদের নেতৃত্বে বিদ্যালয়ের মালামাল রাতের আধাঁরে নিয়মবহির্ভূতভাবে বিক্রি করা হয়। পরে এলাকাবাসী মালামাল ভর্তি গাড়ি আটক করে। কিন্তু এখন উল্টো ভালো মানুষদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ ছড়ানো হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।”
সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান মাসুদ মোল্লা বলেন, “একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মালামাল চুরি করে বিক্রি করার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা আমাদের ইউনিয়নের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে।
স্কুলের মতো পবিত্র জায়গায় দুর্নীতি ও অনিয়ম কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এলাকাবাসী রাতেই মালামাল আটকে দিয়ে প্রমাণ করেছে—এ এলাকার মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবসময় ঐক্যবদ্ধ। আমরা চাই প্রশাসন যেন বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করে।”
এলাকাবাসীরা জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মালামাল বিক্রির মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে প্রয়োজন কঠোর নজরদারি ও পরিচালনা কমিটিতে সৎ-নিষ্ঠাবান ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি।
মানববন্ধন শেষে এলাকাবাসী ঝাড়ু ও জুতা প্রদর্শন করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ জানান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান ভূইয়া মাসুম জানান, একটি কুচক্রী মহল উদ্দেশ্যপ্রণীত ভাবে আমাদের বিতর্কিত করতে বিক্রি করা মালামাল চুরির ঘটনা সাজিয়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে গতকাল মিটিং করেছি৷
অভিযুক্ত বর্তমান কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূইয়া জানান, আমরা স্কুলের একটি কমিটি করে বিক্রি করেছি। তবেমাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে কোনো অনুমতি নেই নি। বিক্রি করার পর গাড়িতে উঠাতে রাত হয়ে যায়। এখানে কোনো চুরির ঘটনা ঘটে নি।
উল্লেখ্য, গত (৯ সেপ্টেম্বর) শনিবার স্কুল বন্ধ থাকা সত্ত্বেও সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককের নির্দেশে রাতের আধাঁরে নিয়মবহির্ভূতভাবে পঞ্চমীঘাট স্কুলের মালামাল বিক্রি করা হয়। যা স্থানীয় এক ভাঙ্গারীর পিক-আপ ভ্যানে নেয়ার সময় স্থানীয়রা আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।