রংপুরে আজ জামায়াতের জনসভা, দুই লাখ লোক সমাগমের টার্গেট
Published: 4th, July 2025 GMT
বিগত সরকারের জুলুম, নির্যাতন ও অবিচার জনগণকে অবহিতকরণ এবং তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ মানবিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আজ শুক্রবার রংপুর জিলা স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হবে জামায়াতের বিভাগীয় জনসভা। ১৭ বছর পর রংপুরে অনুষ্ঠিতব্য এই জনসভায় দুই লক্ষাধিক লোক সমাগমের টার্গেট নিয়েছে দলটি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বৃহত্তর রংপুরের ৩৩টি আসনে জেতাতে দলকে উজ্জীবিত করার পাশাপাশি লক্ষ্য হলো পুরো বিভাগের মানুষের মধ্যে দেশকে নিয়ে জামায়াতের পরিকল্পনার বিষয়ে বার্তা পৌঁছে দেওয়া।
বিকেল ৩টায় আয়োজিত জনসভা উপলক্ষে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। মাঠের ভেতরে প্রবেশের জন্য নতুন দুটি প্রবেশপথ তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়া নারীদের পর্দার সঙ্গে বক্তব্য শোনার জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এদিকে, জনসভাকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন ধরে মাইকিং করার পাশাপাশি রংপুর নগরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। বড় বড় বিলবোর্ড লাগানো হয়েছে শহরের বিভিন্ন স্থানে। সেই সঙ্গে পোস্টার, ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো হয়েছে বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায়। মাইকিং ছাড়াও জেলা উপজেলায় করা হয়েছে গণসংযোগ। বিশাল মোটরসাইকেল র্যালি করেছে দলটি। বিভাগীয় জনসভা সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে প্রচারণাসহ ১৩টি উপ-কমিটি দিন-রাত কাজ করছে। এছাড়াও মেডিকেল টিম, নিজস্ব ভলান্টিয়ার প্রস্তুত করা হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, বিভাগীয় জনসভায় প্রধান অতিথি থাকবেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.
রংপুর বিভাগীয় জনসভা বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব কেএম আনোয়ারুল হক কাজল জানান, বিভাগীয় জনসভা সফল করতে ইতোমধ্যে সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সবাই মুখিয়ে আছে জনসভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য। আমরা আশা করছি, প্রত্যাশার চেয়েও বেশি লোকসমাগম ঘটবে এই জনসভায়।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও রংপুর জেলা আমির অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে জনসভা তো দূরের কথা প্রকাশ্যে কথা বলারও সুযোগ ছিল না। ১৬ বছর জুলুম নির্যাতনের পর ফ্যাসিস্টদের পতনে এ দেশের মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। এই স্বস্তিকে দেশ গঠনের কাজে লাগাতে চাই। দেশের মানুষ এবার ঐক্যবদ্ধ।
তিনি বলেন, বিগত সময়ে ভোট দিতে পারেনি এ দেশের মানুষ। তাই দাঁড়িপাল্লা মার্কায় ভোট দিতে মুখিয়ে আছেন। এবারে দেশের মানুষ তাদের পছন্দের মার্কায় ভোট দিতে পারবে বলে বিশ্বাস করি। রংপুর বিভাগের এই জনসভায় লোক সমাগমই প্রমাণ করবে জামায়াতের জনপ্রিয়তা। তাই সফলভাবে জনসভা সম্পন্ন করতে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম জানান, রংপুর বিভাগীয় জনসভায় দুই লক্ষাধিক লোক সমাগম ঘটবে। এই জনসভাকে কেন্দ্র করে পুরো রংপুর বিভাগের জামায়াতের নেতাকর্মীদের মাঝে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। এই স্পিরিটকে কাজে লাগিয়ে আগামী নির্বাচনে ফলাফল ঘরে তোলা হবে। নির্বাচনের জন্য রংপুরের এই জনসভা টার্নিং পয়েন্ট হবে বলেও জানান তিনি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম জনসভ ব ভ গ য় জনসভ ল ইসল ম জনসভ য় র জন য সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
রাজনৈতিক জনসভায় জনসাধারণের ভোগান্তির কথা কে ভাবে
রাজনৈতিক জনসভা গণতন্ত্রচর্চার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এ নিয়ে তেমন দ্বিমতও থাকার কথা নয়। দলগুলো তাদের শক্তি প্রদর্শন, কর্মসূচি ঘোষণা কিংবা জনগণের মতামত জানাতে এসব আয়োজন করে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এসব আয়োজনের কারণে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবন কতটা ব্যাহত হয়, তা কি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করি?
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ‘সময়’ সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। কিন্তু হতাশার বিষয় হচ্ছে, এসব রাজনৈতিক সমাবেশ ঘিরে মানুষের সময় নিয়ে ভোগান্তির শেষ থাকে না। এসব জনসভা বা সমাবেশের ফলে যখন রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে যায়, যান চলাচল সীমিত হয়, তখন অফিসগামী কিংবা শ্রমজীবী মানুষকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে কাটাতে হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্কুলগামী শিশুদেরও নির্ধারিত সময়ে পৌঁছানো সম্ভব হয় না। পাশাপাশি অ্যাম্বুলেন্স প্রচণ্ড বিপাকে পড়ে জরুরি রোগীকে হাসপাতালে নিতে গিয়েও নানা বাধার মুখোমুখি হতে হয়, যা কখনো কখনো জীবনহানির ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয়। এটি অত্যন্ত চিন্তা ও উদ্বিগ্নের বিষয়।
শুধু যানজটই নয়, লাউডস্পিকারের অতিরিক্ত শব্দ মানুষকে মানসিকভাবে ক্লান্ত করে। বয়স্ক, অসুস্থ কিংবা পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য এটি আরও বেশি কষ্টদায়ক। পাশাপাশি মাইকিং, ভিড় ও সড়ক দখল—সব মিলিয়ে মানুষের স্বাভাবিক চলাচল দুরূহ হয়ে পড়ে, যা গণতন্ত্রের জন্য কোনোভাবেই ভালো বার্তা নয়।
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্য অবশ্যই জনস্বার্থে হওয়া উচিত। তাই জনসভার পাশাপাশি মানুষের দৈনন্দিন জীবন যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, সেদিকও সমান গুরুত্ব পাওয়া জরুরি। আমরা জানি, অনেক দেশেই রাজনৈতিক দলগুলো বড় সমাবেশ নির্দিষ্ট মাঠ বা খোলা স্থানে আয়োজন করে থাকে, যা আমাদের জন্য অনুসরণীয়।
জনপ্রিয়তা বা শক্তি প্রদর্শনের চেয়ে মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রাখা অনেক বেশি প্রয়োজনীয়। কেননা, গণতন্ত্রের শক্তি মানুষের অংশগ্রহণে, কিন্তু সেই অংশগ্রহণ যেন মানুষের কষ্ট বাড়িয়ে না তোলে এই সচেতনতা রাজনীতি ও প্রশাসন উভয়েরই থাকা প্রয়োজন।
তৌহিদ-উল বারী
শিক্ষার্থী, পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রাম।