রাজধানীর বাংলামোটর এলাকায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার রাত ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশের রমনা বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, এনসিপি কার্যালয়ের সামনে একটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।

এর আগে রাত ৯টার দিকে রাজধানীর সেন্ট্রাল রোড এলাকায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের বাসার সামনে দুটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তার আগে সন্ধ্যায় দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয় কারওয়ান বাজারের সার্ক ফোয়ারা মোড় এলাকায়। এ দুটি ঘটনায়ও কেউ হতাহত হয়নি।

সকাল পৌনে ৯টার দিকে রাজধানীর নিউ ইস্কাটন রোডের ওয়াক্ফ ভবনের সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পথচারী আহত হন। আহত ব্যক্তির নাম আবদুল বাসির (৫০)। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। হেঁটে বাংলামোটরে তাঁর অফিসে যাওয়ার সময় ককটেল বিস্ফোরণে আহত হন তিনি।

আবদুল বাসিরের পায়ে ও হাতে জখম হয়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিদিনের মতো সকালে হেঁটে অফিসে যাচ্ছিলেন। ওয়াক্ফ ভবনের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ ককটেল বিস্ফোরিত হয়। ওয়াক্ফ ভবনের সামনে দিয়ে যাওয়া উড়ালসড়কের ওপর থেকে ককটেল ছুড়ে মারা হয় বলে ধারণা তাঁর।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচারের রায় ঘোষণা হবে আগামীকাল সোমবার। এ রায় ঘোষণা ঘিরে গত সপ্তাহে ‘লকডাউন’ কর্মসূচি দেয় কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা থাকা আওয়ামী লীগ। ওই কর্মসূচি ঘিরে ১০ নভেম্বর থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাসে-ট্রেনে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে আসছে।

গতকাল শনিবার রাত থেকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় গাড়িতে আগুন, ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটছে। এ সময় ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ আওয়ামী লীগের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ককট ল ব স ফ র এল ক য় র স মন র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

উচ্চশিক্ষিত ভারসাম্যহীন নারী তিন দিন পর ম্যানহোল থেকে উদ্ধার

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ম্যানহোলে পড়ে যাওয়া মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারীকে তিন দিন পর জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে, যা নিয়ে নগরজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা শোনা গেছে।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাত পৌনে ১২টার দিকে নগরীর জেলাখানা রোড এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় ৩৮ বছর বয়সি এই নারীকে, যিনি ময়মনসিংহ নগরের গল্ডা এলাকার বাসিন্দা। জানা গেছে, এই নারী উচ্চশিক্ষিত; তবে একটি দুর্ঘটনার কারণে ভারসাম্য হারিয়েছেন তিনি।

আরো পড়ুন:

বিরামপুর রেলস্টেশনে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ নারীর সন্তান প্রসব

কুষ্টিয়ায় রেলসেতুর নিচ থেকে নারীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার

বুধবার (১২ নভেম্বর) সকালে ওই নারী বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন, তবে রাতে আর ফেরেননি। বিভিন্ন এলাকায় ও আত্মীয়দের কাছে খোঁজ নিয়ে না পেয়ে তার বাবা বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) ময়মনসিংহ কতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

উদ্ধারের সময় ঘটনাস্থলে জড়ো হয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দুজন রিকশাচালক উদ্ধারের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন, যাদের মধ্যে একজনের নাম মো. রোমান মিয়া। 

এই রোমান মিয়ার বর্ণনা অনুযায়ী, ঢাকনা দেওয়া যে ম্যানহোলের নিচ থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়, সেখান থেকে আনুমানিক ৫০ ফুট দূরে আরেকটি ম্যানহোলের ঢাকনা ছিল না অনেক দিন ধরেই। তারা ধারণা করছেন, ঢাকনা না থাকা ম্যানহোলে দুই-তিন আগে পড়ে যান ওই নারী। হয়তো ড্রেনের নিচ দিয়ে কোনোভাবে ঢাকনা দেওয়া ম্যানহোলের নিচে চলে যান। 

ম্যানহোলে পড়ে যাওয়ার পর থেকেই হয়তো বাঁচার আকুতি জানাচ্ছিলেন ওই নারী- এমনটি ধারণা রোমান মিয়ার। তার মতে, এলাকাটি ময়মনসিংহ-টঙ্গাইল মহাসড়কের খুব কাছে হওয়ায় সারাক্ষণই গাড়ির শব্দ থাকে।  ম্যানহোলের কাছে দোকানপাট ও একটি ওয়ার্কশপ থাকায় শব্দের কারণে ওই নারীর বাঁচার আকুতি শোনা যায়নি। 

“‍রাত পৌনে ১২টার দিকে এলাকা নীবর হওয়ায় তখন তার আকুতি কানে আসে। পরে আমরা উদ্ধার করি,” বলেন রোমান মিয়া।

রোমান মিয়ার বর্ণনামতে, রাতে ওই নারীকে উদ্ধারের পর প্রথমে তার পরিচয় জানা যায়নি। তিনি কোনো কথা বলতে পারেননি। তার সারা শরীর ফ্যাকাশে ছিল। 

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ মাসুদ ও তার স্ত্রী উদ্ধার করা নারীকে তাদের বাসায় নিয়ে যায়।

মোহাম্মদ মাসুদ বলেন, “বাসায় নেওয়ার পর আমার স্ত্রী তাকে প্রথমে গরম পানি দিয়ে গোসল করিয়ে গরম পোশাক পরিয়ে দেন। তারপর তাকে কিছু খেতে বলা হলেও তিনি খাননি। তিনি মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন হওয়ায় নিজের পরিচয়ও বলতে পারেননি। কিছুক্ষণ পর আরেকজন তাকে চিনতে পারেন। এরপর ওই নারীকে ময়মনসিংহ নগরীর জেলখানা রোডে তার বাবার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।”

ভুক্তভোগী নারীর বাবার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, তার মেয়ে উচ্চশিক্ষিত। তবে ২০১৩ সালে একটা দুর্ঘটনার পর থেকে মানসিকভাবে কিছুটা ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। তাকে ঘরে রাখা যায় না। দিনের বেলা বেশিরভাগ সময়ই বাইরে থাকত। তবে রাতে ঠিকই বাড়িতে ফিরে আসত। গত বুধবার রাতে না ফেরায় বৃহস্পতিবার থানায় জিডি করেন তিনি।

এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশনের সচিব এবং প্রকৌশলীকে একাধিকবার কল করা হলেও তারা রিসিভ করেননি।

ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, ‍ফেসবুকে দেখেছি ম্যানহোলে পড়ে যাওয়া এক নারীকে তিন দিন পর উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।

ম্যানহোলের ঢাকনা চুরি হয়, সে ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। তবে সিটি করপোরেশন এ ক্ষেত্রে আরেকটু দায়িত্বশীল হলে ভালো হয়, বলেন ওসি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ