দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদলের ১৫ জন নেতাকে সাংগঠনিক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

‎শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকেলে সংগঠনটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

‎বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাংগঠনিক দায়িত্ব অবহেলার কারণে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মো.

হাসান, মাসুম রাহাত, রাজীব হাসান, সাহানুর রহমান এবং সদস্য নূর হোসেন, ইসমাইল হোসেন বাকি, ফিরোজ আহমেদ রানা, তানভীর হোসেন, রিহাব হোসেন, ইমরান হোসেন, আবির হাসান, আতিকুর রহমান আকাশ, খন্দকার সাকিব আনজুম শারফি, সুলতান আহমেদ, ও নাসির উদ্দিন মিয়াকে সাংগঠনিক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।

আরো পড়ুন:

জাবিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি সংরক্ষণে ছাত্রশিবিরের ৫ দফা

জাবির গণিত বিভাগের ভবন নির্মাণ কাজ দ্রুত শুরুর দাবি শিক্ষার্থীদের

তবে এ ব্যাপারে দায়িত্বশীল কারো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

‎গত ৮ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯তম ব্যাচের ( (২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষ) শিক্ষার্থী জহির উদ্দিন বাবরকে আহ্বায়ক ও ৪০তম ব্যাচের (২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষ) শিক্ষার্থী ওয়াসিম আহমেদ অনিককে সদস্যসচিব করে ১৭৭ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ছ ত রদল র

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই শহীদদের সনদ সম্ভাব্য, যোদ্ধাদের সনদ একটু ক‌ঠিন: উপদেষ্টা শারমীন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে শহীদ শিক্ষার্থী নাফিসা হোসেন মারওয়ার বাড়ি পরিদর্শনে গিয়ে ম‌হিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুর‌শিদ বলেছেন, জুলাই আ‌ন্দোলনে আ‌মি নিজেও মা‌ঠে ছিলাম। আমরা দায়িত্ব নি‌য়ে‌ছি এক বছর হ‌লো। এতদি‌নের মধ্যে আমরা তা‌দের কা‌ছে যে‌তে পারিনি। আমরা যতটুকু অনুদান দি‌তে পেরেছি শহীদ না‌ফিসার বাবা তা পেয়েছেন। এখা‌নে আর একজন শহী‌দের বাবা আ‌ছেন তি‌নিও অনুদান পেয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, আমা‌দের বিরুদ্ধে অ‌নেক অ‌ভিযোগ থা‌কে, আমরা সময়মতো শহীদ‌দের পা‌রিবা‌রের কা‌ছে পৌঁছাতে পারছি না। অ‌নেক দেরি হলেও আপ্রাণ চেষ্টা কর‌ছি সবার কা‌ছে পৌঁছানোর। নাফিসার বাবা ও জুলাই কন্যাদের দা‌বি হ‌চ্ছে জুলাই সনদ। এখা‌নে শহীদ‌দের সনদ সম্ভাব্য কিন্তু যোদ্ধা‌দের সনদ একটু কঠিন কারণ যোদ্ধা‌দের সংখ্যা অ‌নেক।

শুক্রবার আড়াইটায় উপদেষ্টা গাজীপুরের টঙ্গীর এরশাদ নগর এলাকায় শহীদ না‌ফিসার বাড়িতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন শহীদ না‌ফিসার বাবা আবুল হো‌সেন। এসময় তি‌নি ব‌লেন, বেঁচে থাকতে মে‌য়ে হত্যার ন্যায়বিচার দেখে যেতে চাই। খুনিদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়।

না‌ফিসার অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু মেনে নিতে পারেনি তার পরিবার এবং স্থানীয়রা। মারা যাওয়ার এক বছর পরও তার স্মৃতি আঁকড়ে কাঁদছে তার পরিবার। এ সময় উপদেষ্টাকে পেয়ে সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে নাফিসার মা কুলসুম বেগম পারিবারিক সমস্যার কারণে দুই মেয়েকে নিয়ে সাভারের দক্ষিণ বক্তারপুরে কোর্টবাড়ি এলাকায় চলে আসেন। এরপর তিনি মেয়েদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে বিদেশে পাড়ি জমান। নাফিসাকে ভর্তি করা হয় সাভারের বেসরকারি ল্যাবরেটরি কলেজে। প‌রে নাফিসার বাবা আবুল হোসেন নাফিসাকে টঙ্গীতে নিয়ে যান। তিনি নাফিসাকে সাহাজউদ্দিন সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেন। তবে নাফিসা অধিকাংশ সময়ে সাভারে মামা হযরত আলীর বাসায় থাকতেন। গত ২৮ জুলাই ধামরাইয়ে বড় মামার বাসায় আসেন। পরে ৩০ জুলাই ছোট মামা হযরত আলীর বাসায় যান। এরপর থেকে বন্ধুদের সঙ্গে সাভারে আন্দোলনে অংশ নিতেন।

আগস্টের ৩ তারিখ থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়কদের সঙ্গে আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন নাফিসা। ৫ আগস্ট সকালে মামাকে জানিয়েছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে গাবতলীতে যাবেন।

বিষয়টি ভেবে মামা হযরত আলী আন্দোলনে যেতে নিষেধ করছিলেন। কিন্তু নাফিস নিষেধ শোনেননি। কাউকে কিছু না বলেই বেরিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর মামা নাফিসার মুঠোফোনে কল দিলে জানান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি আছেন। তখন মামা তাকে রেডিও কলোনি হয়ে বাসায় ফিরতে বলেন। বেলা ১১টার দিকে আবার কল দিলে আর ফোন ধরেননি নাফিসা।

বেলা আড়াইটার দিকে নাফিসার ছোট বোন সাফা হোসেন কল দিলে অপরিচিত একজন কল ধরে ‘নাফিসা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন’ জানিয়ে ল্যাবজোন হাসপাতালে যেতে বলেন। বিষয়টি জানতে পেরে হযরত আলী ল্যাবজোন হাসপাতালে যান। সেখানে গিয়ে নাফিসাকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দেখতে পান। কিছুক্ষণ পর চিকিৎসকেরা নাফিসাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে আন্দোলনকারীরাসহ লাশ বাসায় নেওয়ার পথে মুক্তির মোড় এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ ছররা গুলি ছোড়ে। এতে হযরত আলীসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তার ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অ্যাম্বুলেন্সে বিকেল চারটার দিকে লাশ তার মামার বাসায় নেওয়া হয়।

রাত নয়টার দিকে সাভারে জানাজা শেষে নাফিসার মায়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নানির বাসায় নাফিসার ছোট ভাইয়ের কবরের পাশে তাকে দাফনের সিদ্ধান্ত হয়। তবে নাফিসার বাবা টঙ্গীর এরশাদনগরে লাশ নিয়ে নিজ বাড়ির একটি কবরস্থানে দাফন করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নাসিরনগরে গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বের সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতা নিহত
  • নাসিরনগরে সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতা নিহত
  • দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে জাবি ছাত্রদলের ১৫ সদস্যকে অব্যাহতি
  • জারিন তাসনিমার একক চিত্র প্রদর্শনী ‘মাটি, মূর্তি ও মানস’
  • জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের ১৫ ‘নিষ্ক্রিয়’ নেতাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি
  • জারিন তাসনিমের একক চিত্র প্রদর্শনী ‘মাটি, মূর্তি ও মানস’
  • জুলাই শহীদদের সনদ সম্ভাব্য, যোদ্ধাদের সনদ একটু ক‌ঠিন: উপদেষ্টা শারমীন
  • সবুজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ধূসর চিত্র
  • জাবিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি সংরক্ষণে ছাত্রশিবিরের ৫ দফা