জলবায়ু ও টেকসই ঝুঁকি যাচাইয়ে বৈশ্বিক মানদণ্ডে ব্র্যাক ব্যাংক
Published: 9th, July 2025 GMT
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো স্বতন্ত্র আইএফআরএস ‘এস-১’ ও ‘এস-২’ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্র্যাক ব্যাংক। ইন্টারন্যাশনাল সাসটেইনেবিলিটি স্ট্যান্ডার্স বোর্ডের (আইএসএসবি) তৈরি জলবায়ু এবং টেকসই ঝুঁকি প্রকাশের বৈশ্বিক কাঠামো অনুসরণ করে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রথম এ ধরনের স্বতন্ত্র প্রতিবেদন প্রকাশের মধ্য দিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাংক হিসেবে নতুন প্রবর্তিত এই আন্তর্জাতিক মান গ্রহণ করেছে। শুধু বাংলাদেশেই প্রথম নয়, বিশ্বব্যাপী হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যেও ব্র্যাক ব্যাংক একটি, যারা এই আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ব্র্যাক ব্যাংকের স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, করপোরেট সুশাসন এবং ক্লাইমেট গভর্ন্যান্সের প্রতি প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
২০২৩ সালে এই ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ডস (আইএফআরএস) এস ১ ও এস ২ স্ট্যান্ডার্ডস প্রবর্তিত হয়, যা সাসটেইনেবিলিটি এবং জলবায়ু-সম্পর্কিত আর্থিক তথ্য প্রকাশে একটি সমন্বিত ও বিনিয়োগকারীকেন্দ্রিক কাঠামো প্রদান করে। ব্র্যাক ব্যাংক নিজস্ব উদ্যোগে ব্যাংকটির ২০২৪ সালের আর্থিক প্রতিবেদনে এই কাঠামোগুলো অনুসরণ করার অগ্রণী পদক্ষেপ নিয়েছে।
এই প্রতিবেদনের উল্লেখযোগ্য দিক হলো, এটি বৈশ্বিক পিসিএএফ (পার্টনারশিপ ফর কার্বন অ্যাকাউন্টিং ফাইন্যান্সিয়ালস) পদ্ধতি প্রয়োগ করে ফাইন্যান্সড নির্গমন প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এটি জলবায়ু প্রভাব পরিমাপের এমন একটি উন্নত পদ্ধতি, যা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে খুব একটা অনুসরণ করা হয় না। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এ ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ায় এটি রেগুলেটর, বিনিয়োগকারী, উন্নয়ন অংশীদার এবং যারা দায়িত্বশীল ও ভবিষ্যৎ–মুখী আর্থিক প্রতিষ্ঠান খুঁজছেন, এমন সব গ্রাহকদের ব্যাংকটি সম্পর্কে একটি বিস্তারিত ধারণা দিচ্ছে। এটি সুশাসন, কৌশল ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং প্রতিষ্ঠানের মেট্রিক্স-সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে কাজ করে।
ব্র্যাক ব্যাংকের এমন প্রতিবেদন প্রকাশের বিষয়ে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী (চলতি দায়িত্ব) তারেক রেফাত উল্লাহ খান বলেন, ‘স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং সুশাসন হলো ব্র্যাক ব্যাংকের দায়িত্বশীল ব্যাংকিংয়ের মূল ভিত্তি। ব্র্যাক ব্যাংক যে কেবল মুনাফা অর্জনে নয়, বরং পরিবেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সহ আরও অন্যান্য অনেক বিষয় নিয়েও কাজ করে, এই প্রতিবেদন সেটিরই এক পূর্ণাঙ্গ প্রকাশ।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জলব য়
এছাড়াও পড়ুন:
‘ইন্টেরিয়র-ফার্নিচার-সাইনেজ এক্সপো নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করছে’
রাজধানীর বসুন্ধরা এক্সপো ভিলেজে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ‘ইন্টেরিয়র-ফার্নিচার-সাইনেজ টেকনোলজি এক্সপো ২০২৫’। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের (আইএবি) সাধারণ সম্পাদক স্থপতি প্রফেসর ড. এম. মাসুদ উর রশিদ।
এফ টাচ ইভেন্টস লিমিটেড এর উদ্যোগে আয়োজিত প্রদর্শনীর উদ্বোধনের সময় বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারের চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) এম. এম. জসিম উদ্দিন, প্রদর্শনীর সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ ইন্টেরিয়র ডিজাইন কোম্পানি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিকোয়া) সভাপতি মোহাম্মদ আলী ভূঁইয়াসহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্থপতি প্রফেসর ড. এম. মাসুদ উর রশিদ বলেন, “ইন্টেরিয়র-ফার্নিচার-সাইনেজ টেকনোলজি এক্সপো নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করছে। এই এক্সপো আর্কিটেকচারদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি করতে পেরেছে। এক্সপোর নানা পণ্য তারা প্রফেশনাল জায়গায় কাজে লাগাতে পারছে। এক্সপোতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে আর্কিটেক ডিজাইনারদের পাশাপাশি নতুন উদ্যোক্তারা আরো ভালো করতে পারবে।”
তিনি আরো বলেন, “আয়োজক সংস্থার এটি দ্বিতীয় এক্সপো। প্রথম এক্সপোতেও আমি এসেছিলাম। এবারের এক্সপ্রোতে এসে যা দেখলাম তা প্রথমবারের চেয়েও বড় পরিসরে করা হয়েছে। অংশগ্রহণকারীর সংখ্যাও বেশি। নতুন উদ্যোক্তাদের কাছে এই এক্সপোর গুরুত্ব রয়েছে বলেই ধারাবাহিকভাবে এর পরিসর বড় হচ্ছে। এবারের এক্সপোতে সাইন এইজ টেকনোলজি যোগ হয়েছে। আশা করছি ভবিষ্যতে নতুন আরো বিষয় যুক্ত করার মাধ্যমে নতুন আর্কিটেকচার উদ্যোক্তাদের সহায়তা করবে।”
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ইন্টেরিয়র ডিজাইন কোম্পানি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিকোয়া) সভাপতি মোহাম্মদ আলী ভূঁইয়া বলেন, “যত বেশি হবে এক্সপো হবে তত বেশি স্টেকহোল্ডারদের জন্য উপকার হবে। গ্রাহকদের রুচির সঙ্গে তাল মিলিয়ে এক্সপোতে অংশগ্রহণকারীরা সার্ভিস দিতে পারবে বলে আশা করছি।”
উড টেক সলিউশনস-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও নইমুল হোসেন খান বলেন, “দ্বিতীয় ফার্নিটেক এক্সপো ২০২৫ উডওয়ার্কিং ও ফার্নিচার সেক্টরের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। গত ফেয়ারের ধারাবাহিকতায় এবারের প্রদর্শনী উদ্যোক্তা, প্রস্তুতকারক, আর্কিটেক্ট, ইন্টেরিয়র ডিজাইনার, পেশাজীবী ও শিক্ষার্থীদের এক মিলনমেলায় পরিণত হবে।”
এফ টাচ ইভেন্টস লিমিটেডের পরিচালক শেখ ফিরোজ আহমেদ আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলেন, “দীর্ঘ পরিশ্রমের পর এক্সপোটি আয়োজন করা হয়েছে। আমরা যখন প্রথম আয়োজন করেছিলাম তখন অনেকে বলেছিলেন এর পরিসর বড়াতে। চাহিদার কথা বিবেচনা করে আমরা এবার পরিসর বড় করেছি। একইসঙ্গে নতুন টেকনোলজি যোগ করেছি। ভবিষ্যতে সকলের সহযোগিতায় আরো ভালো বড় পরিসরে এক্সপো করতে পারব বলে আশা করছি।”
তিনি বলেন, “এই মেলায় ইন্টেরিয়র টেকনোলজি, উড মেশিনারিজ ও মেটাল মেশিনারিজ ছাড়াও প্রথমবারের মতো ইন্টেরিয়র সেক্টরে ব্যবহারের জন্য তৈরি বিভিন্ন সফটওয়্যার প্রদর্শিত হচ্ছে, যা দেশের আধুনিক ইন্টেরিয়র ডিজাইন শিল্পের উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখবে।”
আয়োজক প্রতিষ্ঠান জানায়, ইন্টেরিয়র উপকরণ, ফার্নিচার সরঞ্জাম ও সাইনেজ প্রযুক্তি নিয়ে অনুষ্ঠিত এ প্রদর্শনীতে ৯টি দেশের ৫০টি প্রতিষ্ঠান প্রায় ২০০টি স্টল নিয়ে অংশগ্রহণ করছে। এফ টাচ ইভেন্টস লিমিটেডের উদ্যোগে আয়োজিত এ মেলায় এক ছাদের নিচে অনুষ্ঠিত হচ্ছে— দ্বিতীয় ইন্টেক এক্সপো ২০২৫, যেখানে প্রদর্শিত হচ্ছে কিচেন সলিউশন, ইন্টেরিয়র উপকরণ, সিরামিক, লাইটিং, ফার্নিচার, হোম অটোমেশন ও অন্যান্য লাইফস্টাইল পণ্য। এছাড়া দ্বিতীয় ফার্নিটেক এক্সপো ২০২৫, যা ফার্নিচার ফিটিংস, উড ও মেটাল টেকনোলজিকে কেন্দ্র করে আয়োজিত, পৃষ্ঠপোষকতা করছে উড টেক সলিউশনস এবং মেটাল টেক সলিউশনস। পাশাপাশি প্রথমবারের মতো আয়োজিত হচ্ছে সাইনেজ টেকনোলজি এক্সপো ২০২৫, যা ভিজ্যুয়াল কমিউনিকেশন ও বিজ্ঞাপন প্রযুক্তি খাতের সর্বাধুনিক সমাধান উপস্থাপন করবে।
প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সর্বশেষ পণ্য ও প্রযুক্তি যেমন- আধুনিক কিচেন সলিউশন, ফার্নিচার, ডোর, সফটওয়্যার, হোম অটোমেশন, স্মার্ট মিরর, কার্টেন, বোর্ড, ইন্টেরিয়র ডিজাইন সেবা ইত্যাদি প্রদর্শন করছে।
ফার্নিচার শিল্পে কর্মরত উদ্যোক্তা, কারিগর, ডিজাইনার ও শিক্ষার্থীদের জন্যও থাকছে ফার্নিচার তৈরির আধুনিক সরঞ্জাম, টুলস এবং মেশিনারিজ প্রদর্শনের সুযোগ।
প্রদর্শনীটি প্রতিদিন সকাল ১০টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। প্রবেশ সবার জন্য সম্পূর্ণ ফ্রি এবং দর্শনার্থীদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় ছাড় ও বিশেষ অফার।
ঢাকা/নাজমুল/ফিরোজ