সরকার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে (বিজিবি) আরও প্রায় পাঁচ হাজার জনবল নিয়োগের আশ্বাস দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বাহিনীটির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী। তিনি বলেন, বিজিবিতে বর্তমানে প্রায় ৫৭ হাজার সদস্য রয়েছে। তারা প্রতিনিয়ত ৪ হাজার ৪২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছেন। উখিয়াতে একটি ব্যাটালিয়ন হয়েছে। আগামীতেও বিভিন্ন জায়গায় ব্যাটালিয়ন স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। জনবল সংকট মেটাতে আগামীতে পাঁচ হাজারের কম বা বেশি জনবল অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে বর্তমান সরকার আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের বায়তুল ইজ্জতস্থ বিজিবির প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজের বীর উত্তম মজিবুর রহমান প্যারেড গ্রাউন্ডে ১০৩তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

অপর এক প্রশ্নে মহাপরিচালক বলেন, সীমান্তে প্রতিনিয়ত পুশব্যাক বা পুশইন হচ্ছে। মাঝেমাঝে হয়তো দুয়েকটা দিন বন্ধ থাকছে। তবে পুরো প্রক্রিয়াটি এখনো বন্ধ হয়নি। এ বিষয়ে বিএসএফকে জানানোর পাশাপাশি আমাদের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও জানানো হয়েছে। এছাড়া ভারতীয় দূতাবাসের হাই কমিশনারকেও অবগত করা হয়েছে। পুশইনের শিকার হয়ে যারা বাংলাদেশে আসছে তাদের বেশিরভাগই বাংলাদেশি। শুধু তাই নয়; কিছু ভারতীয় নাগরিক ও রোহিঙ্গাদেরও জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে। শুরু থেকে আমরা এর কড়া প্রতিবাদ করে আসছি।

নবীন সৈনিকদের কোন অবস্থাতেই প্রতিপক্ষ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নিকট পিঠ প্রদর্শন না করার আহ্বান জানিয়ে মহাপরিচালক বলেন, দেশমাতৃকার অখণ্ডতা রক্ষায় নবীন সৈনিকরা জীবন দিবে, তবু এক ইঞ্চি মাটি হাতছাড়া হতে দিবে না। কখনো হতাশ ও নিরাশ করবে না দেশবাসীকে।

বক্তব্যের শুরুতে প্রধান অতিথি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী বিজিবির ৮১৭ জন অকুতোভয় বীর শহীদদের স্মরণ করেন। এছাড়া ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ সকল ছাত্র-জনতাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ ও আহতদের আশু আরোগ্য কামনা করেন।

কুচকাওয়াজে প্যারেড কমান্ডার ছিলেন মেজর মোহাম্মদ ফজলে রাব্বি। এবারের ব্যাচের সেরা রিক্রুট নির্বাচিত হন সাইফ মিয়া। অনুষ্ঠানে বিজিবি'র উর্ধ্বতন কর্মকতা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসন ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ১০৩তম রিক্রুট ব্যাচের মৌলিক প্রশিক্ষণ চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি শুরু হয়। দীর্ঘ ২৪ সপ্তাহের প্রশিক্ষণ শেষে ৬৫৮ পুরুষ ও ৩৬ জন নারীসহ ৬৯৪ জন রিক্রুট সমাপনী কুচকাওয়াজের মধ্য দিয়ে সৈনিক জীবনে পদার্পণ করেন। সব শেষে বিজিবি’র প্রশিক্ষিত সদস্যদের অংশগ্রহণে আকর্ষণীয় ট্রিক ড্রিল এবং বিজিবি’র সুসজ্জিত বাদক দল কর্তৃক মনোজ্ঞ ব্যান্ড ডিসপ্লে প্রদর্শন করা হয়।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সেনানিবাসের অস্থায়ী কারাগার পরিদর্শন করলেন কারা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা

মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে সেনা হেফাজতে রাখতে ঢাকা সেনানিবাসে ঘোষিত অস্থায়ী কারাগার ভবনটি গতকাল মঙ্গলবার পরিদর্শন করেছেন কারা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। জনবল, নিরাপত্তাসহ আনুষঙ্গিক কী দরকার হবে, সে বিষয়ে খোঁজ নিতে তাঁরা সেখানে গিয়েছিলেন।

গত রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা করার কথা জানানো হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ঢাকা সেনানিবাসের বাশার রোডসংলগ্ন উত্তর দিকে অবস্থিত ‘এমইএস বিল্ডিং নম্বর-৫৪’কে সাময়িকভাবে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হলো। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এ আদেশ জারি করা হলো। আদেশটি অবিলম্বে কার্যকর হবে।’

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলের গুম-নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলায় এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা একটি মামলায় মোট ২৫ জন সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ৮ অক্টোবর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সেদিনই এই তিন মামলায় ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেছিল প্রসিকিউশন।

আরও পড়ুনহেফাজতে ১৫ সেনা কর্মকর্তা, আত্মগোপনে একজন১১ অক্টোবর ২০২৫

১১ অক্টোবর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৫ কর্মকর্তাকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন কর্মকর্তা অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে (এলপিআর) আছেন।

আজ বুধবার রাতে যোগাযোগ করা হলে কারা অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক (আইজি-প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এমইএসে অস্থায়ী কারাগার পরিচালনায় নিরাপত্তা প্রস্তুতি কেমন হবে ও কী ধরনের জনবল প্রয়োজন হবে, সে বিষয়ে দেখতে ও খোঁজ নিতে কারা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সেখানে গিয়েছিলেন।

আরও পড়ুনঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা ১৩ অক্টোবর ২০২৫আরও পড়ুনআটক বললে অবশ্যই ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে আদালতে আনতে হবে: চিফ প্রসিকিউটর১২ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সেনানিবাসের অস্থায়ী কারাগার পরিদর্শন করলেন কারা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা
  • তালাবদ্ধ নরসিংদীর ৩ স্টেশন, যাত্রী দুর্ভোগ চরমে
  • হাসপাতাল নিজেই যেন রোগী!