মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা ও নির্যাতনের কারণে গত ১৮ মাসে বাংলাদেশে নতুন করে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

শুক্রবার (১২ জুলাই) জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়, ২০১৭ সালে মায়ানমার থেকে প্রায় সাড়ে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর এটি সর্বোচ্চসংখ্যক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঘটনা। নতুন আশ্রয়প্রার্থীদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

ইউএনএইচসিআর জানায়, গত জুন পর্যন্ত বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নতুন ১ লাখ ২১ হাজার রোহিঙ্গাকে শনাক্ত করা হয়েছে। তবে অনেককে এখন পর্যন্ত শনাক্ত করা যায়নি, যদিও তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাস করছেন।

কক্সবাজারের মাত্র ২৪ বর্গকিলোমিটার জায়গায় প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের কারণে এটি ইতিমধ্যে বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ ক্যাম্পে পরিণত হয়েছে।

জাতিসংঘ বলছে, নতুন করে আরো রোহিঙ্গা আশ্রয় নেওয়ায় বিদ্যমান সহায়তা ব্যবস্থার ওপর চরম চাপ পড়ছে।

খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা ও আশ্রয়ের জন্য নতুন করে আগতরা অনেকাংশেই আগের রোহিঙ্গাদের ওপর নির্ভরশীল। ইতিমধ্যে দাতাগোষ্ঠী তহবিল সংকটে পড়ায় গুরুত্বপূর্ণ সেবা ব্যাহত হচ্ছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি আছে। ডিসেম্বরের মধ্যে খাদ্য সহায়তা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এছাড়া, দুই লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা শিশুর শিক্ষা বন্ধ হয়ে যাবে।

এমন সংকটে রোহিঙ্গাদের মাঝে হতাশা, নিরাপত্তাহীনতা ও অনিশ্চয়তা বাড়ছে জানিয়ে ইউএনএইচসিআর বলছে, রোহিঙ্গাদের অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্রপথে অন্য দেশে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছে।

এ অবস্থায় রাখাইন রাজ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে না আসা পর্যন্ত, রোহিঙ্গাদের জন্য জীবন রক্ষাকারী সহায়তা যেন বন্ধ না করা হয়, তার দাবি জানিয়েছে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা।

ঢাকা/হাসান/ইভা

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

‘বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা বন্ধের ঝুঁকিতে’

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা জানিয়েছে, আরো অর্থ না পেলে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলো ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। তাদের সহায়তার জন্য ২৫৫ মিলিয়ন ডলারের আবেদন করা হয়েছে, যার মাত্র ৩৫ শতাংশ অর্থায়ন করা হয়েছে। শুক্রবার জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের মুখপাত্র বাবর বালুচ এ তথ্য জানিয়েছেন।

বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী বসতি দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশের শিবিরগুলোতে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা রয়েছে। ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নৃশংস অভিযানের পর তাদের বেশিরভাগই পালিয়ে এসেছেন।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের মুখপাত্র বাবর বালুচ বলেছেন, “আমাদের কী প্রয়োজন এবং কী সম্পদ উপলব্ধ রয়েছে তার মধ্যে বিশাল ব্যবধান রয়েছে। এই তহবিল ঘাটতি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার উপর প্রভাব ফেলবে। কারণ তারা খাদ্য, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার জন্য প্রতিদিন মানবিক সহায়তার উপর নির্ভরশীল।

রয়টার্স জানিয়েছে, রাশিয়া ও চীনের ক্রমবর্ধমান ভয়ের কারণে প্রতিরক্ষা ব্যয়কে অগ্রাধিকার দেওয়ার কারণে প্রধান দাতাদের তহবিল হ্রাসের ফলে মানবিক খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত দিয়ে বালুচ বলেন, “বিশ্বব্যাপী তীব্র তহবিল সংকটের কারণে, নতুন আগত শরণার্থী ও ইতিমধ্যে উপস্থিত উভয়েরই গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা পূরণ হবে না এবং অতিরিক্ত তহবিল নিশ্চিত না করা হলে সমগ্র রোহিঙ্গা শরণার্থী জনগোষ্ঠীর জন্য প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলো ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।”

ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে প্রয়োজনীয় খাদ্য সহায়তা বন্ধ হয়ে যাবে।

ইউএনএইচসিআর অনুসারে, গত ১৮ মাসে কমপক্ষে এক লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশের কক্সবাজারে এসেছেন। বৌদ্ধ অধ্যুষিত মিয়ানমারের পশ্চিম রাখাইন রাজ্যের বেশিরভাগ মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও নিপীড়ন হাজার হাজার মানুষকে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য করেছে।

বালুচ বলেন, “বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের এই স্থানান্তর... ২০১৭ সালের পর থেকে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি, যখন প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মারাত্মক সহিংসতা থেকে পালিয়ে এসেছিল।”

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১৮ মাসে আরও দেড় লাখ রোহিঙ্গা এসেছে
  • ১৮ মাসে এসেছেন নতুন করে দেড় লাখ রোহিঙ্গা
  • ‘বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা বন্ধের ঝুঁকিতে’
  • ১৮ মাসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে আরও দেড় লাখ রোহিঙ্গা: ইউএনএইচসিআর