নাটোরে সড়ক দুর্ঘটনায় ৮ জন নিহতের ঘটনায় ট্রাকের চালক গ্রেপ্তার
Published: 24th, July 2025 GMT
নাটোরের বড়াইগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় আটজন নিহত হওয়ার ঘটনায় ট্রাকচালক মহির উদ্দিনকে (২৮) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে নাটোর সদর উপজেলার বামনডাঙ্গা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
গতকাল সকাল সাড়ে ৯টার সময় বড়াইগ্রামের আইড়মারী এলাকার তরমুজ পাম্পের সামনে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে মাইক্রোবাসের চালকসহ আটজন নিহত হন। তাঁদের মধ্যে সাতজনই স্বজন, যাঁরা কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে হাসপাতালে ভর্তি এক স্বজনকে দেখতে সিরাজগঞ্জ যাচ্ছিলেন। এ ঘটনায় গতকাল নজরুল ইসলাম নামে নিহত একজনের স্বজন ট্রাকচালককে আসামি করে সড়ক নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন।
বড়াইগ্রাম থানা সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাতেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সম্মিলিতভাবে ট্রাকচালককে গ্রেপ্তারে মাঠে নামেন। তাঁরা গতকাল মধ্যরাতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে চালক মহির উদ্দিনকে সদর উপজেলার বামনডাঙ্গা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেন। রাতেই ট্রাকচালক মহিরকে বনপাড়া হাইওয়ে থানায় হস্তান্তর করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালতে হাজির করা হবে।
আরও পড়ুননাটোরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮, স্বজনকে দেখতে তাঁরা হাসপাতালে যাচ্ছিলেন১৫ ঘণ্টা আগেআজ সকালে বনপাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন জানান, ঘটনার পর ট্রাকচালক মহির উদ্দিন নিজ বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে তাঁর অবস্থান শনাক্ত করা হয়। তিনি থানা–হাজতে আটক আছেন। বড়াইগ্রাম থানার মাধ্যমে আজ সকালে তাঁকে আদালতে হাজির করা হবে।
আরও পড়ুনএকসঙ্গে পাশাপাশি চারজনকে কবর দেওয়ার ঘটনা ধর্মদহ গ্রামে আগে ঘটেনি১১ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন
প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।
জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।
অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।
কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।
সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।