ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত ও জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরীমণি। শরিফুল রাজের সঙ্গে ডিভোর্সের পর এখন পুরোপুরি নিজেকে সন্তানদের মানুষ করার সংগ্রামে নিয়োজিত রেখেছেন তিনি। বর্তমানে ‘সিঙ্গেল মাদার’ হিসেবে ছেলে এবং দত্তক নেওয়া মেয়েকে নিয়েই তার সংসার। 

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি গুঞ্জন ছড়িয়েছে—পরীমণি নাকি তার মেয়েকে আর দেখাশোনা করছেন না! এই প্রসঙ্গে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অভিনেত্রী। হেটার্সদের উদ্দেশে রীতিমতো কড়া ভাষায় জবাব দিয়েছেন এক ফেসবুক রিলস ভিডিওর মাধ্যমে। 

পরীমণি বলেন, “খেয়াল করে দেখবেন, আমাদের সবার জীবনের আনাচে-কানাচে অতি উৎসাহী লোকদের অভাব নেই। তাদের জীবনের সমস্ত অভাব পূরণ হয় অন্যের জীবন নিয়ে চর্চা করে।” 

আরো পড়ুন:

বিমান দুর্ঘটনার ভিডিও দেখে পরীমণির প্যানিক অ্যাটাক

সোশ্যাল কম্পিটিশনের মধ্যে বাচ্চাদের নিয়ে মাইতেন না: পরীমণি

ব্যক্তিজীবন অন্যদের মতোই সাধারণ। তা জানিয়ে পরীমণি বলেন, “আমরা যারা শোবিজ অঙ্গনে কাজ করি, আমাদের ব্যক্তিজীবনও সাধারণ মানুষের মতোই। আমার তো একদমই তাই। ঘরের মধ্যে আমি চুলে তেল মেখে আরাম করে ঘরের কাজ করি। বাচ্চাদের খাবার নিজের হাতে রান্না করি (যদি অসুস্থ না থাকি বা শুটিং না থাকে)। তাদের যাবতীয় কাজও আমি নিজেই করি।” 

অন্য মানুষের আচরণের বর্ণনা দিয়ে পরীমণি বলেন, “কিছুদিন ধরে খেয়াল করছি, কিছু অবাঞ্ছিত মানুষ আমার মেয়েকে নিয়ে খুব চিন্তিত। কেউ কেউ পোস্ট করছে আমাকে ট্যাগ করে, কেউ কমেন্ট করছে—‘আপনার দত্তক মেয়েকে তো দেখি না আর!’ কই সেই দত্তক মেয়ে? এরকম নানা প্রশ্ন!” 

ক্ষুব্ধ পরীমণি বলেন, “ভাই, প্রথমত মেয়েটা আমার মেয়ে। কথায় কথায় ‘দত্তক’, ‘দত্তক’ বলে মজা পায় কারা জানি না। আমার মেয়ের ছবি দিলেই কিছু মাথামোটা লোকজন কনটেন্ট পেয়ে যায়, দত্তক শব্দ দিয়ে ক্যাপশন বানিয়ে ভিউ ব্যবসা শুরু করে। কিন্তু আমার মেয়ে কোনো বিজনেস এলিমেন্ট না। এটা ভালো মতো বুঝে নেন।” 

পরীমণির পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন—তার সন্তানদের ছবি প্রকাশ করবেন কি না, সেটি সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত বিষয়। তার ভাষায়, “আমার ইচ্ছে হলে আমি আমার বাচ্চাদের ছবি দেব, না ইচ্ছে হলে দেব না। এটা নিয়ে কারো কিছু বলার থাকতে পারে না।” 

উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে দেশে ঘটে যাওয়া একটি বিমান দুর্ঘটনার মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে প্যানিক অ্যাটাকের শিকার হন পরীমণি। এতে তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। সেই ধাক্কা সামলে ধীরে ধীরে আবারো স্বাভাবিক জীবনে ফিরছেন তিনি।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর মন চলচ চ ত র আম র ম য়

এছাড়াও পড়ুন:

নাইরোবিতে উইকিপিডিয়ার সম্মেলনে যাচ্ছেন ৫ বাংলাদেশি তরুণ

এ বছর উকিপিডিয়ানদের নিয়ে কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে উইকিম্যানিয়া ২০২৫ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশনের আমন্ত্রণে ও পূর্ণ স্কলারশিপে এ অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন পাঁচ বাংলাদেশি উইকিপিডিয়ান।

প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে নির্বাচিত উইকিমিডিয়ানদের নিয়ে নিজস্ব খরচে এ সম্মেলনের আয়োজন করে উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন।

আগামী ৬ থেকে ৯ আগস্ট কেনিয়ার নাইরোবিতে বার্ষিক সম্মেলন ও উইকিম্যানিয়ার ২০তম বার্ষিকী অনুষ্ঠিত হবে। একইসঙ্গে একটি ভার্চুয়াল সংস্করণও থাকবে। এ সম্মেলনে যোগ দিতে পাঁচ বাংলাদেশি উইকিপিডিয়ান ইতোমধ্যে কেনিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছেন।

পাঁচ বাংলাদেশি উইকিপিডিয়ান হলেন, বগুড়ার মাসুম আল হাসান রকি, ময়মনসিংহের দোলন প্রভা, বরগুনার মুহাম্মদ ইয়াহিয়া, চাঁদপুরের দেলোয়ার হোসাইন ও আরব আমিরাত প্রবাসী বাংলাদেশি মো. জিল্লুর রহমান।

গত বছর অন্তত ১৪০ দেশের ২ হাজারের বেশি উইকিমিডিয়ান অংশ নিয়েছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, এবার সেই সংখ্যা আরো বাড়বে। সম্মেলনের কনফারেন্স টিম উইকিপিডিয়ার নতুন প্রযুক্তি, ফিচার এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরছে। অংশগ্রহণকারীরাও মতামত দিচ্ছেন সরাসরি।

এবারের সম্মেলনে বাংলাভাষী উইকিমিডিয়ানদের উদ্যোগ বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। তুলে ধরা হচ্ছে ‘বাংলা উইকিমৈত্রী’ ও ‘উইকি ভালোবাসে রমজান’ প্রকল্পের সাফল্য ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা। এসব প্রকল্পে সম্মিলিতভাবে বাংলা উইকিপিডিয়াকে আরো তথ্যসমৃদ্ধ করা হয়েছে, তুলে ধরা হয়েছে রমজান মাসের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। ভবিষ্যতে আরো বেশি মানুষকে সম্পৃক্ত করে, এই উদ্যোগগুলোকে আরও বিস্তৃত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া আঞ্চলিক সম্প্রদায় উইকিমিডিয়া বাংলাদেশের আঞ্চলিক কার্যক্রমের তথ্যচিত্রও উপস্থাপনের কথা রয়েছে।

উইকিপিডিয়া বিশ্বের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিশ্বকোষ, যেখানে ৩ শতাধিক ভাষায় সাড়ে ৬ কোটিরও বেশি নিবন্ধ। আর এই বিশাল ভাণ্ডার গড়ে তুলেছেন লাখো স্বেচ্ছাসেবী। বাংলাদেশের উইকিপিডিয়ানরাও দেশের সংস্কৃতি, ইতিহাস আর ঐতিহ্য তুলে ধরছেন বিশ্ব দরবারে। এতে দেশের সম্মান যেমন বাড়ছে, তেমনি তরুণ প্রজন্মের আগ্রহও বাড়ছে।

এবার উইকিম্যানিয়া ২০২৫-এ বৈচিত্র্য, নারীর অংশগ্রহণ ও ভাষাভিত্তিক অবদানকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন শুরু করেছে ‘নোলেজ ইজ হিউম্যান, নোলেজ ইজ হার’ শীর্ষক ক্যাম্পেইন, যেখানে বিশ্বজুড়ে নারীর অবদান তুলে ধরা হচ্ছে। বিশেষভাবে গুরুত্ব পাচ্ছেন উন্নয়নশীল দেশের নারী উইকিপিডিয়ানরা। শুধু সম্পাদক নয়, ইভেন্ট, ওয়ার্কশপ বা ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে অবদান রাখা সবাই এবার স্বীকৃতি পাচ্ছেন।

নাইরোবিতে উইকিম্যানিয়া ২০২৫-এর মূল প্রতিপাদ্য ‘বৈচিত্র্য, অন্তর্ভুক্তি ও টেকসই উন্নয়ন’। এখানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা দেশের ভাষা, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও নারীবিষয়ক তথ্যের ঘাটতি পূরণে আলোচনা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করবেন।

আরেকটি তথ্য হলো উইকিপিডিয়া এখন শুধু তথ্যভাণ্ডার নয়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের প্রধান তথ্যসূত্রও। তাই সবার সহযোগিতায় উইকিপিডিয়াকে আরও নির্ভরযোগ্য ও বৈচিত্র্যময় করতে এই সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

এ বিষয়ে উইকিমিডিয়া বাংলাদেশের সভাপতি ও একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রযুক্তিবিদ শাবাব মুস্তাফা জানান, উইকিম্যানিয়া হচ্ছে উইকিপিডিয়ান ও উইকিমিডিয়ানদের নিয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় একটি সম্মেলন। এতে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে উইকিপিডিয়ানরা বিশ্বকোষে তাদের অবদান বিষয়ে নানা অভিজ্ঞতা ও আইডিয়া বিনিময় করেন।

তিনি জানান, প্রায় প্রতি বছরই এ সম্মেলনে বাংলাদেশ থেকে উইকিপিডিয়ানরা অংশ নিয়ে থাকেন। আমরা আশা করছি বাংলাদেশি উইকিপিডিয়ানরা সেখান থেকে হৃদ্য হয়ে বাংলা উইকিপিডিয়া সমৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবেন।

ঢাকা/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ