এক বছরে যতটুকু পাওয়া সম্ভব ছিল, ততটুকুও পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। 

জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুরে ফেসবুক পোস্টে এ কথা বলেন। 

সেখানে তিনি লেখেন, “স্বৈরাচারী খুনি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আপামর ছাত্র জনতার রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থান! লুকিয়ে দেশ ছেড়ে পালালো শেখ হাসিনা। বছরের পর বছর ধরে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নির্যাতিত হয়ে আসা মানুষগুলো স্বপ্ন দেখতে লাগলো কাঙ্খিত বাংলাদেশের।”

“১ বছর অতিক্রম শেষে আমরা এখনো আমাদের কাঙ্খিত বাংলাদেশ পাইনি। হয়তো ১ বছরে পাওয়া সম্ভবও নয়। কিন্তু ১ বছরে যতটুকু পাওয়া সম্ভব ছিল ততটুকুও আমরা পাইনি।”

তিনি বলেন, “এ ক্ষেত্রে কারো দায় হয়তো কম, কারো হয়তো বেশি। কিন্তু এককভাবে কাউকে দায়ী করার সুযোগ নেই। একটা কাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্রের জন্য রাষ্ট্রীয় বিদ্যমান গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোর একই সাথে এগিয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। কাঙ্খিত রাষ্ট্র বিনির্মাণে এই প্রত্যেকটি অংশ একে অপরের পরিপূরক। রাজনীতিবিদ, আমলাতন্ত্র, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সিভিল সোসাইটি, মিডিয়া, ব্যবসায়ী, শ্রমজীবী মানুষ থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণ বলতে আমরা যাদেরকে বুঝাই, তাদের প্রত্যেকের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে একটা অংশ সহযোগিতা না করলে অপর অংশগুলোর উপরে এর বিরূপ প্রভাব পড়ে। সফলতা সম্ভব হয় না। অনেকটা চক্রের মত।” 

সারজিস আলম লেখেন, “ব্যক্তি হাসিনা পালিয়েছে। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে যে অসুস্থ এবং অপকর্মের চর্চাগুলো ক্ষমতায় থেকে তিনি ও তার বন্দোবস্ত অধিকাংশ মানুষের মননে, মগজে, চিন্তায়, অস্থিমজ্জায়, ভাবনায়, আচরণে সন্নিবেশিত করেছেন সেগুলো চাইলেই একটা ব্যক্তির মতো পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।”

“আমাদের প্রতিনিয়ত ফাইট করতে হবে এই নষ্ট সিস্টেম, চিন্তা আর ব্যক্তিদের সাথে। সুযোগ পেলে- যে রিকশাচালক ভাড়া বাড়িয়ে দেয়, যে সবজি বিক্রেতা সবজির দাম বাড়িয়ে দেয়, যে ব্যবসায়ী অসৎ উদ্দেশ্যে পণ্য মজুদ করে রাখে, যে সাধারণ জনগণ ব্যক্তি স্বার্থে অর্থের বিনিময়ে হলেও সুপারিশ প্রত্যাশা করে, যে রাজনীতিবিদ ক্ষমতার অপব্যবহার করে, যে আমলা ক্ষমতার দালালি করে, যে সিভিল সোসাইটি স্বার্থের কাছে অন্ধ হয়ে যায়, যে মিডিয়া ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর উদ্দেশ্য সার্ভ করে, যে রাজনৈতিক দল দেশের আগে দলের স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়; তাদের কারো মধ্যে খুব একটা পার্থক্য নেই। যার যতটুকু সামর্থ্য সে ততটুকু ক্ষমতার অপব্যবহার করে। আমাদের লড়াইটা ইন্ডিভিজ্যুয়াল জায়গা থেকে। প্রত্যেককে প্রত্যেকের কাজটা করতে হবে।” 

তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, আমরা যদি আমাদের লড়াইটা চালিয়ে যেতে পারি, তাহলে কিছুটা বিলম্ব হলেও আমাদের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ অর্জন সম্ভব। যে প্রজন্ম একটা অভ্যুত্থান করে শেখ হাসিনার মতো ফ্যাসিস্টের পতন ঘটাতে পারে সেই প্রজন্মের সামনে আগামীতে অন্য কেউ যেকোনো কিছু করে অন্তত পার পেয়ে যাবে না।” 

দাঁতে দাঁত কামড়ে সামনে এগিয়ে চলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি লেখেন, “এই পথচলায় ষড়যন্ত্র হবে, ফাঁদ থাকবে, পিছুটান থাকবে, মিডিয়া প্রোপাগান্ডা করা হবে, মনোবল ভেঙে ফেলার চেষ্টা করা হবে কিন্তু দমে যাওয়ার সুযোগ নেই। করাপটেড সিস্টেমের ফলে সুবিধাভোগী যে অল্প কিছু কালো হাত আছে, তাদের কাছে রয়েছে অঢেল অবৈধ অর্থ। তারা সর্বোচ্চটা ব্যবহার করে আমাদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করবে, বিশ্বাস ভাঙবে, একজনকে আরেকজনের প্রতিপক্ষ হিসেবে প্রতীয়মান করবে। আমাদেরকে এসব মোকাবেলা করেই দাঁতে দাঁত কামড়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।” 

“আমাদের যেই সহযোদ্ধারা নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন, যারা হাত-পা-চোখ হারিয়েছেন, শরীরে এখনো বুলেট নিয়ে ঘুরছেন, তাদেরকে সামনে রেখে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাদের এই ত্যাগ যেকোনো মূল্যে বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না” বলেন তিনি।

ঢাকা/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র ক ষমত যতট ক

এছাড়াও পড়ুন:

বিএসইসির জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উদযাপন

শহীদদের স্মরণ ও শ্রদ্ধায় সারা দেশে পালিত হচ্ছে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস ২০২৫’। এরই ধারাবাহিকতায় সকল গ্রেডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল আয়োজনের মাধ্যমে এ দিবসটি উদযাপন করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) উদ্যোগে মঙ্গলবার ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস, ২০২৫’ উপলক্ষে কমিশনের সব গ্রেডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে একটি আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আরো পড়ুন:

পাঁচ বিমার অর্ধবার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির সুশাসন বাড়ে: আনিসুজ্জামান

এদিন দুপুর ১২টায় কমিশনের মাল্টিপারপাস হলে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

বিএসইসির কমিশনার, নির্বাহী পরিচালক, পরিচালকসহ বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারী সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদসহ কমিশনাররা বক্তব্য রাখেন। সভায় ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ এর গুরুত্ব ও তাৎপর্যের ওপর আলোচনা হয়। এছাড়া সভায় সব শহীদের আত্নত্যাগসহ সবার অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, আলোচনা সভা শেষে সব শহীদের আত্মার শান্তি এবং দেশের সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করে দোয়া মাহফিল হয়। বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ উপস্থিত সবাই দোয়া মাহফিলে অংশ নেন। 

ঢাকা/এনটি/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ