ভারতে যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে মালগাড়ির সংঘর্ষে নিহত ৮
Published: 4th, November 2025 GMT
ভারতে যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে মালগাড়ির সংঘর্ষে অন্তত আট জন নিহত হয়েছে। আহত আরো অনেকে। তবে এদের মধ্যে ১৬-১৭ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মঙ্গলবার গেবরা রোড এবং বিলাসপুরের মাঝে লালখাদানের কাছে দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি অনলাইন।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেলে যাত্রীবাহী ট্রেনটি বিলাসপুরের দিকে যাচ্ছিল। তবে ট্রেনটি যে লাইনে ছিল, তার আগেই একটি মালগাড়ি ছিল। পিছন থেকে এসে লোকাল ট্রেনটি সজোরে ধাক্কা মারে ওই মালগাড়িতে। সংঘর্ষের অভিঘাতে মালগাড়ির উপরে উঠে যায় যাত্রীবাহী ট্রেনটির একাংশ। দুমড়েমুচড়ে যায় ট্রেনের ইঞ্জিনটি। কয়েকটি কামরা লাইনচ্যুত হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে,সিগন্যাল ‘লাল’ থাকা সত্ত্বেও যাত্রীবাহী ট্রেনটি নিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন লোকো পাইলট। সিগন্যাল উপেক্ষা করার কারণেই দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দুর্ঘটনার কারণ নির্ধারণ করতে রেলওয়ে নিরাপত্তা কমিশনার (সিআরএস) পর্যায়ে তদন্ত হবে। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখার পর প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা সম্পর্কেও সুপারিশ করা হবে।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ র ঘটন ট র নট
এছাড়াও পড়ুন:
নিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে, ভোট দিয়েছেন মামদানি-কুমো
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিচ্ছেন শহরটির বাসিন্দারা। মঙ্গলবার ভোট গ্রহণের দিন জয়ের ব্যাপারে বেশ আশাবাদী ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মামদানি। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নিউইয়র্ক শহর ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে বলে মন্তব্য করেন তিনি। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন পাওয়ার পর স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ডু কুমোও জয়ের আশা ছাড়েননি।
মঙ্গলবার নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয় স্থানীয় সময় সকাল ছয়টায়। শেষ হওয়ার কথা রাত ৯টায় (বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল ৮টা)। এর পরপরই শুরু হওয়ার কথা গণনা। যদিও নিউইয়র্ক শহরের ৪৭ লাখ ভোটারের প্রায় ৭ লাখ ৩৫ হাজার আগাম ভোট দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো নির্বাচনে নিউইয়র্ক শহরে এটিই সর্বোচ্চ আগাম ভোট পড়ার ঘটনা।
মঙ্গলবার ভোট গ্রহণের দিন বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায়। এদিন শহরের অ্যাস্টোরিয়া এলাকায় একটি কেন্দ্রে ভোট দেন মামদানি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী রামা দুয়াজি। ভোট দেওয়ার পর সাংবাদিকদের মামদানি বলেন, ‘শহরে ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছি আমরা। অতীতের রাজনীতি ত্যাগ করার দ্বারপ্রান্তে রয়েছি।’
এবারের নির্বাচনে জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর অঙ্গীকার করেছেন মামদানি। তরুণসহ সব বয়সী ভোটারদের মধ্যে বেশ সাড়াও পেয়েছেন। তার প্রতিফলন দেখা গেছে ভোটকেন্দ্রে। ম্যানহাটান এলাকার একটি কেন্দ্রে মামদানিকে ভোট দেন গ্লোরি মিসান নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, শিক্ষা, আবাসন ও গণপরিবহন নিয়ে মামদানির পরিকল্পনাগুলো চমৎকার। সব পরিকল্পনাতেই মানবিকতা রয়েছে।
এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমো ভোট দিতে যান স্থানীয় সময় সকাল ১০টার দিকে। ভোটদানের পর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘ভালোই অনুভব হচ্ছে। মনে হচ্ছে পরিস্থিতি আমাদের পক্ষে রয়েছে। জীবনে আমি বহুবার ভোট দিয়েছি। তবে এই প্রথম আমি কোনো ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করার সময় সেখানে থাকা ভোটাররা আমাকে বাহবা দিয়েছে। এটি ভালো সংকেত। ভোট পড়ার হারও ভালো সংকেত।’
শেষ জরিপে কমেছে ব্যবধানমেয়র নির্বাচন ঘিরে জনমত জরিপগুলোয় প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে বরাবরই বড় ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন মামদানি। গত বৃহস্পতিবারের এমারসন কলেজ/পিআইএক্স ১১/দ্য হিলের জরিপ অনুযায়ী, মামদানি তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কুমোর চেয়ে প্রায় ২৫ পয়েন্ট এগিয়ে ছিলেন। ওই জরিপে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়ার চেয়ে মামদানি এগিয়ে ছিলেন প্রায় ২৯ পয়েন্টে।
তবে সোমবার গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান রিয়েল ক্লিয়ার পলিটিকসের জরিপে দেখা গেছে, মাত্র চার দিনে কুমো ও মামদানির জনসমর্থনের ব্যবধান বেশ কমেছে। ওই জরিপ অনুযায়ী, মামদানির পক্ষে জনমত ৪৬ দশমিক ১ শতাংশ। আর কুমোকে সমর্থন জানিয়েছেন ৩১ দশমিক ৮ শতাংশ ভোটার। অর্থাৎ কুমোর চেয়ে মামদানি এগিয়ে আছেন ১৪ দশমিক ৩ পয়েন্টে। অপর দিকে কার্টিস স্লিওয়া পেয়েছেন ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ জনসমর্থন। রিপাবলিকান এই প্রার্থীর চেয়ে মামদানি এগিয়ে আছেন ২৯ দশমিক ৮ পয়েন্টে।
কুমোকে সমর্থন ট্রাম্পেরএবার মেয়র নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টি কার্টিস স্লিওয়ার জয়ের আশা না দেখতে পেয়ে শেষ পর্যন্ত কুমোকে আনুষ্ঠানিক সমর্থন দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এমন সময় তিনি এ সমর্থন দিলেন, যখন রিয়েল ক্লিয়ার পলিটিকসের জরিপে কুমো ও মামদানির জনসমর্থনের ব্যবধান কমতে দেখা গেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের লক্ষ্য একটাই—মামদানি যেন নিউইয়র্কের মেয়র পদে বসতে না পারেন।
নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে সোমবার ট্রাম্প লিখেছেন, ‘আপনারা অ্যান্ড্রু কুমোকে ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ করেন বা না করেন, সত্যি বলতে গেলে আপনাদের কাছে বিকল্প কোনো পথ নেই। আপনাদের তাঁকে ভোট দিতে হবে।’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও লেখেন, কার্টিস স্লিওয়াকে ভোট দিলে আসলে মামদানিকেই ভোট দেওয়া হবে।
এর আগেও নানা বাক্যবাণে মামদানিকে নাজেহাল করার কম চেষ্টা করেননি ট্রাম্প। মামদানি জয়ী হলে নিউইয়র্কের কেন্দ্রীয় তহবিল আটকে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। আর রোববার একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, নিউইয়র্কের মেয়র হিসেবে তিনি ‘খারাপ ডেমোক্র্যাট’কে (কুমো) বেছে নেবেন। তবে ‘কমিউনিস্টকে’ (মামদানি) সমর্থন দেবেন না।
কুমো ডেমোক্রেটিক পার্টিরই একজন নেতা। মেয়র পদে দলের প্রার্থী বাছাইপর্বে মামদানির কাছে পরাজিত হয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়ান তিনি। ট্রাম্পের সমর্থন কুমোর জন্য আশার আলো হলেও তিনি বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাঁকে সমর্থন দিচ্ছেন না, বরং মামদানির বিরোধিতা করছেন। আর এ নিয়ে মামদানির ভাষ্য, ট্রাম্পকে ভয় পান না তিনি।