বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণা এবং সিকিউরিটিজ আইন-বিধি লঙ্ঘনের দায়ে আইএফআইসি ব্যাংক পিলসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহ আলম সারওয়ারকে পাঁচ কোটি টাকা জরিমানা করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৮০তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো.

আবুল কালাম সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আরো পড়ুন:

পুঁজিবাজারে সূচকের পতন, কমেছে লেনদেন

‘সমন্বিত রোডম্যাপে ব্যাংক খাত পুনরুদ্ধারের টেকসই পথ পুঁজিবাজার’

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আইএফআইসি গ্যারান্টেড শ্রীপুর টাউনশিপ গ্রিন জিরো কুপন বন্ড’ শীর্ষক ১৫০০ কোটি অভিহিত মূল্যের এবং এক হাজার কোটি টাকা ইস্যু মূল্যের বন্ডের জামিনদার হিসেবে আইএফআইসি ব্যাংক এবং অ্যাডভাইজার ও অ্যারেঞ্জার হিসেবে আইএফআইসি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড দায়িত্ব পালন করেছে। আইএফআইসি ব্যাংক উক্ত বন্ডটি ইস্যু করেনি। মূলত শ্রীপুর টাউনশিপ লিমিটেড উক্ত বন্ডের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করেছে। কিন্তু বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে বন্ডের নাম হিসেবে আইএফআইসি আমার বন্ড নামটি ব্যবহার করা হয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের ধারনা দেয় যে, এ বন্ডটি আইএফআইসি পিএলসি ইস্যু করেছে। কিন্তু আইএফআইসি ছিল বন্ডটির জামিনদার। এভাবে বিনিয়োগকারীদের প্রতারিত করে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করা হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়, উল্লেখ কমিশনের ৯৬৫তম কমিশন সভায় উক্ত বন্ডের অনিয়মের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। পরবর্তীতে ৯৮০তম সভায় আইএফআইসি ব্যাংক পিলসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহ আলম সারওয়ারকে ৫ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

ঢাকা/এনটি/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বন ড র

এছাড়াও পড়ুন:

সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানসহ পরিবারের আর্থপাচার তদন্তে বি

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বেসরকারি ব্যাংক সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর কবির, তার পুত্র রাইয়ান কবির, পুত্রবধূ নুসরাত নাহার এবং এ কাজে জড়িত ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে। প্রি-আইপিও প্লেসমেন্ট শেয়ার ক্রয় এবং সেকেন্ডারি মার্কেট থেকে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের আড়ালে ঋণ জালিয়াতি, সন্দেহজনক লেনদেনসহ বিবিধ অনিয়মের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করে পাচার করার অভিযোগ তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এ লক্ষ্যে বিএসইসি পুঁজিবাজার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় কিছু নির্দেশনাসাপেক্ষে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছে কমিশন।

সম্প্রতি বিএসইসির মার্কেট ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগ থেকে এ বিষয়ে একটি আদেশ জারি করা হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে। তদন্তের বিষয়ে আভিভা ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অবহিত করা হয়েছে।

তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন, বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া, উপ-পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও সহকারী পরিচালক রানা দাশ।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ফাইনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) গোয়েন্দা প্রতিবেদনে প্রি-আইপিও প্লেসমেন্ট শেয়ার ক্রয় এবং সেকেন্ডারি মার্কেট থেকে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের আড়ালে ঋণ জালিয়াতি, সন্দেহজনক লেনদেনসহ বিবিধ অনিয়মের সঙ্গে আলমগীর কবির, তার ছেলে রাইয়ান কবির, পুত্রবধূ নুসরাত নাহার এবং উক্ত কাজে জড়িত ব্যাংক কর্মকর্তাদের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে। 

বিগত সরকারের আমলে আইন বা বিধিবিধান লঙ্ঘন করা পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে তেমন কোনো কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পুনর্গঠিত বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশন কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।

বিএসইসির তদন্তের আদেশ

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন মনে করে, পুঁজিবাজার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থে এ কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত করা প্রয়োজন। এ কারণে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিনেন্স ১৯৬৯-এর ধারা ২১, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কমিশন তিন কর্মকর্তার সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। 

তদন্ত কমিটি যেসব বিষয় খতিয়ে দেখবে

বিএসইসির কাছে পাঠানো বাংলাদেশ ফাইনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লিখিত সাউথইস্ট ব্যাংকের অভিযুক্তরা কি পরিমাণ টাকা আত্মসাত করেছে সে বিষয়টির অনুসন্ধান ও তদন্ত করা প্রয়োজন।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের গত ২০ জুলাই সাউথইস্ট ব্যাংকের পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করেন আলমগীর কবীর। ব্যক্তিগত ও অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন তিনি। ২০০৪ সাল থেকে টানা ২০ বছর সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন আলমগীর কবির। ব্যাংকের নীতিনির্ধারণী পদে থেকে বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে ঋণ দেওয়ার পাশাপাশি স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পর্ষদে যুক্ত করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তন আসে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এম এ কাশেম। তবে চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করলেও আলমগীর কবির এতদিন ব্যাংকটির পরিচালক হিসেবে ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৯ নভেম্বর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বে লিজিংয়ের শেয়ার লেনদেনে সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের দায়ে আলমগীর কবিরকে ১২ কোটি টাকা জরিমানা করে বিএসইসি। একই ঘটনায় তার স্ত্রী সুরাইয়া বেগমকে পাঁচ কোটি টাকা ও জামাতা তুষার এল কে মিয়াকে আড়াই কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। 

এ ছাড়া গত ১৪ জুলাই আলমগীর কবিরকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের পৃথক দুই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।

ঢাকা/তারা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানসহ পরিবারের আর্থপাচার তদন্তে বি